× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

পরিবেশপ্রেমী রবীন্দ্রনাথ

মৃত্যুঞ্জয় রায়

প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৪ ১৫:৪১ পিএম

ফ্রান্সের ক্যাপ মার্টিনে প্রকৃতির ভেতর নিমগ্ন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ছবি : নিউইয়র্ক টাইমসের সৌজন্যে

ফ্রান্সের ক্যাপ মার্টিনে প্রকৃতির ভেতর নিমগ্ন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ছবি : নিউইয়র্ক টাইমসের সৌজন্যে

পৃথিবীতে আধুনিক প্রথাগত পরিবেশচর্চার সূচনা করেন আর্নেস্ট হেকেল, সেই ১৮৮৬ সালে। বিশ শতকের মাঝামাঝি পশ্চিমা বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়ে পরিবেশ আন্দোলনের বীজ বপন করেন রাচেল কারসন। তিনি ১৯৬২ সালে ‘সাইলেন্ট স্প্রিং’ নামে একটি সাড়া জাগানো বই লেখেন। সে বইতে লেখেন, ‘যে রাসায়নিক বিষে আমরা ফসলের পোকামাকড় রক্ষা করছি, সেই রাসায়নিক বিষের ফলে বসন্ত এলেও আর ফুল ফুটবে না, পাখিরা গান গাইবে না। বসন্ত আসবে, বসন্ত চলে যাবে আমাদের অগোচরে।’ এজন্য যুক্তরাষ্ট্রে তাকে পরিবেশ আন্দোলনের জননী উপাধি দেওয়া হয়।

তবে রাসেল কারসনেরও আগে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভেবেছিলেন পরিবেশ ও প্রকৃতির কথা। তার ‘জীবনস্মৃতি’ গ্রন্থে তিনি নিজেই ছোটবেলার স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে লিখেছেন, ‘জানালার নীচেই একটি ঘাটবাঁধানো পুকুর ছিল। তাহার পূর্বধারের প্রাচীরের গায়ে প্রকাণ্ড একটা চীনা বট- দক্ষিণধারে নারিকেলশ্রেণী। গণ্ডিবন্ধনের বন্দী আমি জানলার খড়খড়ি খুলিয়া প্রায় সমস্তদিন সেই পুকুরটাকে একখানা ছবির বহির মতো দেখিয়া দেখিয়া কাটাইয়া দিতাম।’ পুকুরপাড়ের সেই বটগাছের তলাটা তার সমস্ত মন সারা জীবন আচ্ছন্ন করে রেখেছিল। বটগাছটার গুঁড়ির চারপাশে অনেক ঝুরি নামা এক অন্ধকারময় জটিলতা তার কবিমন বিস্ময়াবিষ্ট করেছিল। সেই অনুভূতির প্রকাশ তিনি করেছিলেন ভাষায়, সেই বটগাছকে উদ্দেশ করে লিখেছিলেন- ‘নিশিদিশি দাঁড়িয়ে আছ মাথায় লয়ে জট,/ছোটো ছেলেটি মনে কি পড়ে, ও গো প্রাচীন বট।’ জীবনস্মৃতিতে ছোটবেলা থেকে সেই বটগাছ দেখে বড় হয়ে ওঠার পর সে স্থানের চিত্র তাকে বিপুলভাবে ব্যথাতুর করেছিল, সেই ‘জীবনস্মৃতি’ গ্রন্থেই পাই সে কথাÑ‘কিন্তু হায়, সে-বট এখন কোথায়! যে পুকুরটি এই বনস্পতির অধিষ্ঠাত্রীদেবতার দর্পণ ছিল তাহাও এখন নাই; যাহারা স্নান করিত তাহারাও অনেকেই এই অন্তর্হিত বটগাছের ছায়ারই অনুসরণ করিয়াছে। আর, সেই বালক আজ বাড়িয়া উঠিয়া নিজের চারি দিক হইতে নানপ্রকারের ঝুরি নামাইয়া দিয়া বিপুল জটিলতার মধ্যে সুদিনদুর্দিনের ছায়ারৌদ্রপাত গণনা করিতেছে।’

পরিবেশের এ বিপর্যয়, বিশাল বটগাছের মতো গাছেরও বিলোপ হওয়া তিনি মনে মেনে নিতে পারেননি। এ কারণেই সারা জীবন ব্রতী হয়েছিলেন পৃথিবীর পরিবেশ রক্ষার চিন্তায়। তার অসংখ্য কবিতা, প্রবন্ধ, গান, গল্প ও নাটকে এ পরিবেশ ভাবনা ভাষা হয়ে ফুটে উঠেছে। এমনকি কর্মক্ষেত্রেও তার প্রতিফলন ও বাস্তব উদ্যোগ দেখি শিলাইদহে, শান্তিনিকেতনে, শ্রীনিকেতনে ও বালিগ্রামে। জীবনস্মৃতিতে প্রকৃতির সঙ্গে তার নিজস্ব যোগাযোগ ও মিলনের কথাকাহিনী আর ‘ছিন্ন পত্রাবলী’তে তা হয়ে উঠেছে বিশ্বপ্রকৃতির সঙ্গে মানবমনের মহামিলনের আকাঙ্ক্ষা।

বিশ্বকবির পরিবেশবাদীতে কেবল কথা আর ভাষাতেই সীমাবদ্ধ ছিল নাÑতিনি বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে একনিষ্ঠ প্রকৃতি-পরিবেশকর্মী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের পরিবেশবাদী উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধগুলো হলো ‘পল্লী প্রকৃতি’, ‘ভূমিলক্ষ্মী’, ‘দেশের কাজ’, ‘শ্রীনিকেতন’, ‘পল্লী সেবা’, ‘উপেক্ষিতা পল্লী’, ‘শহর ও নগর’, ‘বিলাসের ফাঁস’, ‘অরণ্যদেবতা’, ‘হলকর্ষণ’, ‘তপোবন’ ইত্যাদি। কবিতার মধ্যে রয়েছে ‘দুই পাখি’, ‘বসুন্ধরা’, ‘প্রশ্ন’, ‘সভ্যতার প্রতি’, ‘দুই বিঘা জমি’, ‘বৃক্ষ’ ইত্যাদি। তার গীতিনাট্য ‘রক্তকরবী’ ও ‘মুক্তধারা’ এবং তার চিঠিপত্র ‘ছিন্নপত্রাবলী’তেও গভীর পরিবেশভাবনা ও সচেতনতা স্থান পেয়েছে। এসব রচনার প্রতিটির নেপথ্যকাহিনীর সঙ্গে জড়িয়ে আছে তার বিশ্বপ্রকৃতির রূপদর্শন ও উপলব্ধির দর্শন যা আমাদের এখনও ভাবায়। এ ছাড়া ‘বলাই’সহ তার বিভিন্ন ছোটগল্পে ও গানে পরিবেশ-প্রকৃতির বন্দনা ফুটে উঠেছে।

নানা জনের অনেক লেখা থেকেই জানতে পারি যে, ১৯১৪ সালে জাপান যাওয়ার সময় সমুদ্রপথে জাহাজ থেকে তেল নিঃসরণের বিষয়টি দেখে তিনি প্রথম পরিবেশের ওপর মানুষের প্রভাব নিয়ে চিন্তিত হন। তিনি পরিবেশ সংকটের প্রধান কারণ হিসেবে মানুষের লোভ ও অপরিকল্পিত নগরায়ণকে দায়ী করেছেন। একই উপলব্ধির কথা আমরা পাই জাপানি দার্শনিক ও লেখক মাসানোবু ফুকুওকার ‘দ্য ওয়ান স্ট্র রেভ্যুলেশন’ বইয়ে। সে বইতেও তিনি রবীন্দ্রনাথের মতো একই সুরে বলেছেন, মানুষের অতিরিক্ত ভোগস্পৃহাই পৃথিবীর যাবতীয় সংকটের মূল কারণ। ধরিত্রী আজ বহুমুখী সংকটে নিপতিত। এর মধ্যে জলবাযু পরিবর্তনের ফলে প্রকৃতি, পরিবেশ ও মানবজীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে। গবেষকরা বর্তমানে ধরিত্রীর তিনটি প্রধান সংকট চিহ্নিত করেছেনÑজলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশদূষণ ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি। এর প্রতিটির পেছনে রয়েছে মানুষের সুখে থাকার তীব্র বাসনা, তথাকথিত উন্নয়নের লোভে ধ্বংস হওয়া প্রকৃতি। এরই প্রতিফলন দেখি তার প্রায় শতবর্ষ আগে লেখা ‘অরণ্যদেবতা’ প্রবন্ধেÑ‘মানুষ অমিতাচারী। যত দিন সে অরণ্যচর ছিল তত দিন অরণ্যের সঙ্গে পরিপূর্ণ ছিল তার আদানপ্রদান; ক্রমে সে যখন নগরবাসী হলো তখন অরণ্যের প্রতি মমত্ববোধ সে হারাল; যে তার প্রথম সুহৃদ, দেবতার আতিথ্য যে তাকে প্রথম বহন করে এনে দিয়েছিল, সেই তরুলতাকে নির্মমভাবে নির্বিচারে আক্রমণ করল ইটকাঠের বাসস্থান তৈরি করবার জন্য। আশীর্বাদ নিয়ে এসেছিলেন যে শ্যামলা বনলক্ষ্মী তাকে অবজ্ঞা করে মানুষ অভিসম্পাত বিস্তার করল। আজ ভারতবর্ষের উত্তরাংশ তরুবিরল হওয়ায় সে অঞ্চলে গ্রীষ্মের উৎপাত অসহ্য হয়েছে। অথচ পুরাণপাঠকমাত্রেই জানেন যে, এককালে এ অঞ্চল ঋষিদের অধ্যুষিত মহারণ্যে পূর্ণ ছিল, উত্তর ভারতের এ অংশ একসময় ছায়াশীতল সুরম্য বাসস্থান ছিল। মানুষ গৃধ্নুভাবে প্রকৃতির দান গ্রহণ করেছে; প্রকৃতির সহজ দানে কুলোয়নি, তাই সে নির্মমভাবে বন নির্মূল করেছে। তার ফলে আবার মরুভূমি ফিরিয়ে আনবার উদ্যোগ হয়েছে। ভূমির ক্রমিক ক্ষয়ে এই-যে বোলপুরে ডাঙার কঙ্কাল বেরিয়ে পড়েছে, বিনাশ অগ্রসর হয়ে এসেছেÑ এক সময়ে এর এমন দশা ছিল না, এখানে ছিল অরণ্যÑ সে পৃথিবীকে রক্ষা করেছে ধ্বংসের হাত থেকে, তার ফলমূল খেয়ে মানুষ বেঁচেছে। সেই অরণ্য নষ্ট হওয়ায় এখন বিপদ আসন্ন। সেই বিপদ থেকে রক্ষা পেতে হলে আবার আমাদের আহ্বান করতে হবে সেই বরদাত্রী বনলক্ষ্মীকেÑ আবার তিনি রক্ষা করুন এই ভূমিকে, দিন্ তাঁর ফল, দিন্‌ তাঁর ছায়া।’ একই প্রবন্ধে কবির আকুতি, ‘... আমরা লোভবশত প্রকৃতির প্রতি ব্যভিচার যেন না করি।’ কবিগুরুর বনলক্ষ্মীকে একই আবাহন করার কথা দেখি তার ‘বৃক্ষরোপণ উৎসব’ কবিতায়Ñ‘আয় আমাদের অঙ্গনে,/অতিথি বালক তরুদল,/মানবের স্নেহসঙ্গ নে,/চল্, আমাদের ঘরে চল্।’

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভেবেছিলেন পরিবেশ ও প্রকৃতির কথা। তার ‘জীবনস্মৃতি’ গ্রন্থে তিনি নিজেই ছোটবেলার স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে লিখেছেন, ‘জানালার নীচেই একটি ঘাটবাঁধানো পুকুর ছিল। তাহার পূর্বধারের প্রাচীরের গায়ে প্রকাণ্ড একটা চীনা বট- দক্ষিণধারে নারিকেলশ্রেণী

১৯২৫ সালে শান্তিনিকেতনে পঁচিশে বৈশাখ কবির জন্মোৎসবে বৃক্ষরোপণ উপলক্ষে সেদিন তার সদ্যরচিত এ কবিতাটিকে গান হিসেবে গাওয়া হয়। সেখানে তার পরিবেশসচেতনতা দারুণভাবে ফুটে ওঠে। পরিবেশের প্রাণ যেমন গাছপালা, তেমন তার আত্মা জল। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, ‘মাতৃভূমির মাতৃত্ব তার জলে।’ তার আকাঙ্ক্ষা ছিল, জল মায়ের মতো আমাদের পবিত্র করুক, বাঁচিয়ে রাখুক গাছপালা, মানুষ ও সব প্রাণী। এসব নিয়েই তো আমাদের পরিবেশের জীববৈচিত্র্য ও পারস্পরিকভাবে বেঁচে থাকা। প্রকৃতিতে এ এক অমোঘ আন্তঃজাল, একে অন্যের সঙ্গে আমাদের গাঁটছড়া বাঁধা। আর সেই জীবনের জন্য অপরিহার্য জল নিয়েই আমাদের দেশের জন্য কবির আক্ষেপÑ‘হয় মরি জলের অভাবে, নয় বাহুল্যে’। সেই জলসংকটে এখন ভুগছে সারা বিশ্ব। একদিকে জলের অভাবে চলছে তীব্র খরা, অন্যদিকে ধেয়ে আসছে হিমালয় ও মেরুর বরফগলা সাগরের নোনা জল। এর পেছনে যে বর্তমান আধুনিক সভ্যতা ও অপরিকল্পিত ব্যাপক নগরায়ণ, যন্ত্রদানবদের দৌড়াদৌড়ি, কলকারখানার চিমনির ভস ভস ধোঁয়া কতখানি দায়ী তা বহুকাল আগেই কবিগুরু আঁচ করতে পেরে তার ‘ভানুসিংহের পত্রাবলী’তে লিখেছিলেনÑ‘কলকাতা শহরটাকে ... মনে হয় যেন ইটকাঠের এক মস্ত জন্তু আমাকে গিলে ফেলেছে।’ এখনকার ঢাকা শহরকে দেখলে কবিগুরু কী লিখতেন কে জানে!

অ্যারিস্টটলের কথায়, ‘উদ্ভিদ সৃষ্টি হয়েছে পশুর জন্য, পশু সৃষ্টি হয়েছে মানুষের জন্য। মানুষই প্রকৃতির অন্তিম উদ্দেশ্য, পৃথিবীর সবকিছুই মানুষের জন্য।’ রবীন্দ্রনাথও সে কথা উপলব্ধি করেছিলেন প্রবলভাবে, মানুষ কখনও প্রকৃতির ঊর্ধ্বে নয়, সে প্রকৃতির অংশ মাত্র। তাই আদর্শ প্রকৃতির ওপর কোনো শাসন চলে না, বরং তার অধীনতা স্বীকার করে নিতে হয়। তিনি সমগ্র পরিবেশের সব উপাদানকে যেভাবে দেখেছেন, উপলব্ধি করেছেন ও তা রক্ষার জন্য বারবার মানুষের কাছে মিনতি করেছেন, এমনকি স্রষ্টার কাছেও প্রার্থনা করেছেন, তাতে তাকে একজন সিমইকোলজিস্ট না বলে উপায় থাকে না, যিনি উদ্ভিদ-প্রাণী-মানুষ-জড় সব মিলিয়ে ভেবেছেন এক সমন্বয়ধর্মী সার্বিক পরিবেশভাবনা। তবে তিনি জানতেন প্রকৃতির ওপর মানুষের অপরিসীম লোভ আর ক্ষুধা কখনও শেষ হবে না! তাই ‘প্রশ্ন’ কবিতায় কবি সৃষ্টিকর্তার কাছে বিচারের ভার তুলে ধরেছেন এভাবে, ‘যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,/তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?’ প্রকৃতি ও স্রষ্টার এ প্রতিশোধের চিন্তায় তিনি উদ্বিগ্ন হয়েছেন, স্রষ্টার কাছেই আবার ফিরে গেছেন মানবকুলকে বাঁচানোর জন্য। আমাদেরও সেই কামনা আজ কবিগুরুর জন্মদিনে- ‘দাও আমাদের অভয় মন্ত্র/অশোক মন্ত্র তব,/দাও আমাদের অমৃত মন্ত্র/দাও গো জীবন নব।’ 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা