কবিতা
প্রবা
প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:৩৭ পিএম
একটি প্রলয়ংকরী উচ্চারণ!
কেঁপে উঠলÑ
হোমারের বুক, হাতের ইলিয়াড
ট্রয়ের তিন হাজার বছরের পুরোনো শ্মশানের মাটি
ট্রোজান যুদ্ধের সৈনিকের আত্মা
মুঘল দরবার, আনারকলির জ্যান্ত কবর, তাজমহল
কেঁপে উঠলÑ
শেকস্পিয়ারের হাত, রোমিও-জুলিয়েট
কুইন ভিক্টোরিয়া-অ্যালবার্ট ও তাদের নয় সন্তান
মেরি-পিয়েরি কুরির ল্যাবরেটরির কাচের সব পাত্র
কাহিনীর লাইলি-মজনুর হেঁটে যাওয়া মরুর বিস্তীর্ণ ভূমি
একটি প্রলয়ংকরী উচ্চারণ!
গডউইট পাখি বিশ হাজার ফুট ওপরের আকাশ হতে
দ্রুত ডালে নেমে এলো
ওপারের আকাশ হতে ফেরেশতারাও নিচে তাকাল
কেঁদে উঠল গোলাপের গায়ে মাখা মহাকাব্যের শব্দ-ঘ্রাণ
সময়-শূন্য পকেটে হাত রাখা মাত্র
আত্মশ্লাঘায় বাকরুদ্ধ হলো
সবটুকুন ত্যাগ, অপেক্ষা, প্রাণের ভেতরের প্রাণ
একটি প্রলয়ংকরী উচ্চারণ!
‘কাপুরুষ’।
অনিদ্রার জন্মদিনে
আসিফ নূর
অনিদ্রা শুয়েছিল অসুখী বিছানায় একা,
এপাশ-ওপাশ করছিল খুব ঘুম আসছিল না,
আকাশি ডিমলাইটের আলোয় গোঙাচ্ছিল হাহাকার;
রাত বারোটা পেরিয়েছে কবেÑখেয়ালই করেনি সে।
হঠাৎ ডোরবেল বাজতেই দরজা খুলে দেখেÑ
শূন্য, অশ্রু, মৌনা, ঝরা; তার চার প্রিয় বন্ধু।
তারা সমস্বরে ‘শুভ জন্মদিন’ বলে হাসিতে জড়িয়ে
তাকে ভালোবাসা জানাল কালোগোলাপের বিশাল তোড়ায়।
তারপর সাথে আনা বাইশটি নীল মোমবাতি জ্বালিয়ে
ছাইরঙা এক কেক কেটে মেতে উঠল অদ্ভুত আয়োজনে।
ড্রইংরুমে উড়িয়ে দেয়া বিরহধূসর বেলুনেরা সব
উজ্জ্বল লাল-সবুজ-হলুদ রঙের বদলে ছড়াল বিষণ্নতা।
মাঝরাতে অনুষ্ঠান শেষে বন্ধুরা বিদায় নেয়ার সময়
তাকে শাসিয়ে গেলÑ‘এখনই শুয়ে পড়বি অনিদ্রা,
সময়মতো না ঘুমালে চোখের নিচে কালি জমবে কিন্তু।’
প্রত্যুত্তরে কিছু না বলে অনিদ্রা শুধু মুচকি হাসল;
কেননা সে জানে, ওরা কেউই ঘুমাতে পারে না রাতভরে।