আজরিন সুলতানা
প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৩ ১৬:৩৩ পিএম
দুনিয়া মিখাইলের জন্ম ইরাকে, ১৯৬৫-এ। বড় হয়েছেন ক্যাল্ডিয়ান ক্যাথলিক পরিবারে। কাব্যপ্রতিভার মূল্যায়ন হিসেবে মিখাইল বেশ কিছু পুরস্কার জিতেছেন ও পেয়েছেন ফেলোশিপ। তার কবিতার বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য- দ্য ওয়ার ওয়ার্কস হার্ড, দ্য ইরাকি নাইটস, দ্য বিকিপার ইত্যাদি
হাড়ের থলে
কি সৌভাগ্য!
মেয়েটি অবশেষে খুঁজে পেয়েছে
ছেলেটির হাড়গোড়।
খুলিটা থলেতে,
থলেটা হাতে,
অন্যান্য থলের মতো
অন্যদের মতোই কাঁপাকাঁপা হাতে
ধরে আছে।
হাজার হাজার হাড়গোড়ের মাঝে
পড়ে আছে
ছেলেটির হাড়গোড়,
গণকবরে।
তার খুলিটা আর দশটা থেকে ভিন্ন।
ওই চোখ জোড়া কিংবা দুটি কোটর
যা দিয়ে সে একটু বেশি বেশিই দেখত,
কানজোড়া দিয়ে সে গানই শুনতো
যা তার নিজের গল্প বলতো
নাক যা কখনও নির্মল বায়ু কি জানতো না
মুখটা গর্তের মতো হা হয়ে আছে
যখন সে নিশ্চুপে নিভৃতে মেয়েটিকে চুমু
খেয়েছিলো
তখন কিন্তু এমনটা ছিলো না
জায়গাটাও এমন
খুলিতে খুলিতে দলাদলি
হাড়গোড়ে গড়াগড়ি
ধুলোবালিময় ছিল না
যেখান থেকে উঠে আসে অসংখ্য প্রশ্ন
:
এমন জায়গাতে এত মৃত্যুর কি মানে
যেখানে আঁধার নির্জনে সব খেলা খেলে?
এখন প্রিয়জনের সাথে মৃত্যুপুরীতে দেখা
করার মানেই বা কী?
মায়ের কোলে
হাড়গোড় ফিরিয়ে দেওয়া
অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য?
জন্মনিবন্ধন কিংবা মৃত্যুসনদ ছাড়াই
চিরবিদায় নেওয়া
কারণ স্বৈরশাসকরা জীবন কেড়ে নেই ঠিকই
কিন্তু কোনো রসিদ দেয় না।
স্বৈরশাসকেরও রয়েছে
মস্তবড় খুলি
অন্যদের থেকে বেশ আলাদা।
এতবড় সমস্যাটা গণিতের মতো
নিজে নিজেই সমাধান হয়ে গেছে :
এক মৃত্যুকে লক্ষাধিক মৃত্যু দিয়ে গুণ
ফলাফল হয়
একটি মাতৃভূমি।
এই সেই স্বৈরশাসকই এই বিশাল ট্র্যাজেডির
পরিচালক।
তারও অনেক ভক্ত শ্রোতা ছিলো
যারা খুশিতে তালি দিত যতক্ষণ না
থলের হাড় খটখট করতে থাকে।
অবশেষে মেয়েটির থলেটি ভরে গেল
হাড়ে হাড়ে।
কিন্তু তার হতাশ প্রতিবেশী এখনও খুঁজে
চলেছে।
স্বৈরশাসক একটি বড় বিয়োগান্তক নাটকের
পরিচালক।
তারও শ্রোতা আছে,
দর্শক-শ্রোতা যারা হাততালি দেয়
যতক্ষণ না হাড়গুলো ছটফট শুরু করে।
থলের মধ্যে হাড়,
অবশেষে মেয়েটির হাতে পুরো থলে,
হতাশাগ্রস্ত তার প্রতিবেশীর মতো নয়
যে এখনও তার নিজেরগুলো খুঁজে পায়নি।