× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সময় ও গোলাপের জন্য প্রলাপ কিংবা বিলাপ

মোহাম্মদ হোসেন

প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৩ ১৬:০৩ পিএম

সময় ও গোলাপের জন্য প্রলাপ কিংবা বিলাপ

সময় কীভাবে ধায়, বোঝা বড় দায়! চোখের পলকে কোন ফাঁকে যে ওকে শেষ দেখার পর অর্ধশতাব্দী গত হয়ে গেল, ঠমকে ঠমকে কালের নিঃসীম গর্ভে ঠাঁই করে নিল বুঝতেই পারা যায়নি।

আলী ইমাম সাহেবের বুকের জমিন চিরে বেরিয়ে আসে একটা সশব্দ দীর্ঘশ্বাস।

তিনি সোফায় বসে আছেন বহুদিনের অধৌত একখান ময়লা কুশান কোলে নিয়ে। আর ভাবছেন বিদ্যুচ্চমকের মতো দ্রুত লয়ে অদৃশ্য হয়ে যাওয়া বিগত কালের কথা। তার মনে হয় সময় নিরন্তর ছুটে চলা এক দ্রুতগতির পথিক, ক্লান্তি যার টিকিরও নাগাল পায় না কখনোই। ঘোড়ায় চড়িয়া হাঁটিয়া চলিল মর্দ সে নয়।

এ সময় তার চোখে পড়ে, একটা বিবর্ণ সস্তা দামের সোনালি ঘড়ি ঝুলে আছে উত্তর দেয়ালে। একাগ্রচিত্তে তিনি তাকিয়ে থাকেন ওটার দিকে। দেখেন, সেকেন্ডের কাঁটাটা দুই বিন্দুর মধ্যকার দূরত্ব এক লাফে পার হয়ে যাচ্ছে চিতার ক্ষিপ্রতায়, কিছু বুঝে ওঠার আগেই।

হ্যাঁ, ঠিক এভাবেই লাখো কোটি সেকেন্ড তার জীবন থেকে বিয়োগ হয়ে গেছে। খসে পড়েছে তারুণ্যের মাদকতায় পূর্ণ রংধনুময় দিনগুলো। বুড়ো হয়েছেন তিনি। জরাজীর্ণতা খাবলে ধরেছে তাকে। পারস্যদেশের অভিজাত মল থেকে কিনে আনা হাওয়াই শার্টের আড়ালে লুকিয়ে থাকা আলী ইমাম সাহেবের বুক ভারী হয়ে আসে গভীর বেদনায়।

পাশাপাশি একরাশ হাপিত্যেশ জ্বাল দেওয়া দুধের মতো উথলে ওঠে তার বুকে। ‘সেই দিনগুলো কই’ গুনগুন করে গেয়ে ওঠেন তিনি, ‘সেই দিনগুলো কই, সেই দিনগুলো কই!’

পাশেই সোফার ওপর পড়ে আছে ছোট একখানা ভাঙা আয়না। ওটা নিয়ে চোখের সামনে ধরতেই নতুন করে চমকে ওঠেন আলী ইমাম সাহেব। প্রতিবিম্ব যেন পরিহাস করছে তাকে। মাথায় টাক পড়েছে বেশ বড়সড়। যেটুকু চুল আছে তাতে পাক ধরেছে। ভাঁজ পড়েছে মুখের ত্বকে। একটা ইস্তিরি করা কাপড় এলোমেলো করে বালিশচাপা দিলে যেমন হয় আর কি। হাত-পায়ের টানটান চামড়া শিথিল হয়ে এসেছে দেখে হতাশা চাপে আরও।

বয়সের একটা ভার আছে। সে ভারে আক্রান্ত দেহের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। সবকিছুতেই বয়সের ভয়াল ছাপ।

আলী ইমাম সাহেব আরেক দফা চমকে ওঠেন যখন মনে পড়ে, এ দেশের মানুষের গড় আয়ুর সমান বয়স তিনি পেরিয়ে এসেছেন বছর দুয়েক আগেই।

আখেরিগঞ্জে যাওয়ার সময় হয়ে এসেছে। অতি শিগগিরই হয়তো হবে মরণের সমন জারি, যাকে দমন করার সাধ্য তার নেই। অচিন পাখি যাবে উড়ে। খাঁচা পড়ে থাকবে ফাঁকা, নিষ্প্রাণ। শুভ্রধবল কাফনে দাফন হবে তার- ভাবতেই ভয় ও চিনচিনে ব্যথায় ভরে ওঠে বুকের ফাঁপা অংশখানি।

কবি নিতাইয়ের খেদোক্তি তার কানে বেজে ওঠে বারে বারে, হায়! জীবন এত ছোট কেনে!

ঘণ্টা, দিন, মাসগুলো একটুও জানান দিয়ে যায় না। ‘যাই, ভালো থেকো’ বলে না। কাউকে পরোয়া করে না। ডানে-বাঁয়ে তাকায় না। আপন মনে ছুটে চলে বিরামহীন, ক্ষান্তিহীন।

বিগত সময়ে কৃত কর্মযজ্ঞের হিসাব কষতে গিয়ে আলী ইমাম সাহেব নিরাশ ও ব্যথিত হন। হিসাব ঠিক মেলে না, মেলাতে পারেন না। গোলকধাঁধায় বাঁধা পড়েন তিনি। মাথা চক্কর মারে। মনে হয় অনেক কিছুই করা হয়নি যা করার বাসনা ছিল। সময় হয়নি।

তবে কাজ একটা তিনি করেছিলেন বটে। এক হেলেনের দেখা পেয়েছিলেন, কাছে গেলেন এবং ওর প্রেমের বড়া খেলেন। ও এমনই মেয়ে যে কি না হাসলে মানিক পড়ে, কাঁদলে মুক্তা ঝরে। ওর প্রেমে বিষম খেয়ে এক অনন্য শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা লাভ হয়েছিল তার। কাব্যরসে সিক্ত হয়েছিল মন। শেলি, কিটস, বায়রন শেষ করে নজরুল ইসলাম হয়ে এসে থেমেছিলেন আল মাহমুদে।

আলী ইমাম সাহেবের আজ শুভ জন্মদিন।

স্মৃতিতে পড়েছে ধুলোবালির প্রলেপ। তবু আবছা আবছা মনে পড়ে তার : আজ থেকে ঠিক পঞ্চাশ বছর আগে তারুণ্যের উচ্ছ্বাসপূর্ণ এই দিনে, দিনটি ছিল সম্ভবত শনিবার, শেষ বিকালের নরম ঝিরিঝিরি দক্ষিণা হাওয়ায় দেহমন ভাসিয়ে দিয়ে তিনি ওর প্রণয়প্রার্থী হয়েছিলেন। এদিকওদিক চেয়ে খুব সন্তর্পণে হার্টের ছাপ মারা একটা ফিনফিনে রঙিন চিরকুট গুঁজে দিয়েছিলেন ওর ফরসা কোমল হাতে।

‘কী এটা?’ দুই চোখে প্রচণ্ড আগ্রহ নিয়ে জানতে চায় ও।

‘তোমাকে নিয়ে আমার হৃদয়ের একরাশ উচ্ছ্বাস, একগুচ্ছ পঙক্তি।’

‘আপনিই পড়ুন না, আমি শুনি।’ লাজুক মুখে বলেছিল ও।

গলা ঝালাই করে হৃদয়ের মালাই মিশিয়ে আলী ইমাম আবৃত্তির সুরে ওকে পড়ে শুনিয়েছিলেন আপন মনের কথামালা :

‘এমন সুন্দর কন্যা না দেখি কখন।

কার ঘরের উজল বাতি চুরি করল মন ।।

জাগিয়া দেখেছি কিবা নিশির স্বপন।

কার ঘরের সুন্দর নারী কার পরানের ধন।।

জলের না পদ্মফুল শুকনায় ফোটে রইয়া।

আসমানের তারা ফোটে মঞ্চেতে ভরিয়া।।’

আলী ইমাম অবাক বিস্ময়ে চেয়ে চেয়ে দেখেছিলেন, কেমন রাঙা হয়ে উঠেছে ওর শরমমাখা আশ্চর্য সুন্দর মুখখানি। ছোপ ছোপ রক্ত এসে জমা হয়েছিল ফরসা গোলাপমুখে। লাজরক্ত হইল কন্যার পরথম যৌবন।

এরপর যে কী হলো! আপেল গাছে বেল ফলল। অতি আশা হলো সর্বনাশা। আলী ইমামের প্রেম ফ্রেমে বন্দি হয়ে থাকল। ও কেবলই ছবি হয়ে রইল। তার অনুভবের নীল আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে গেল। তারপর শুরু হলো ভারী বর্ষণ অঝর ধারায়। অথচ তার ছিল ‘প্রিয়তমার একটি তিলের জন্য/বিলিয়ে দেব সমরখন্দ বোখারা’-জাতীয় প্রেমিকমন। ও যদি রাজি থাকত, তার ধারণা, ট্রয় নগরী জয় করবার সাধ ও সাধ্য দুটোই তার ছিল।

কিন্তু চাতক রইল মেঘের আশে, মেঘ ঝরল অন্য দেশে। ফলে আলী ইমামের শুরু হলো নোনা জলে ডুবসাঁতার। তার কষ্ট বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছিল যখন তিনি জানতে পারেন বাবা-মায়ের পছন্দ করা বরের সঙ্গে বিয়ের প্রস্তাবে ও একবারও দ্বিমত পোষণ করেনি। এক কথাতেই যথা আজ্ঞা জাহাঁপনা। তিনি আজও ভেবে পান না কেন এমন হলো। ‘তুমি আমার বিশ্বাসের নিঃশ্বাস কেড়ে নিয়েছ।’ মনে মনে তিনি বললেন ওকে উদ্দেশ করে, ‘কিন্তু কেন? তার কারণ কি এই যে, তোমার ভাবী বরের আছে অঢেল কাঁচা পয়সা? নাকি আমার চেয়ে আরও হ্যান্ডসাম স্বামী পাবে তাই? নাকি দুটোই?’

একদিন চিঠি ফেরত দিতে এসে জ্ঞান দেওয়ার মতো করে ও বলল, ‘আমাকে ভুলে যাবেন। এ ক্ষেত্রে ভুলে যাওয়ার চেয়ে ভালো কিছু নেই।’ বিষে ভরা কথাগুলো বলার সময় একবারও ঠোঁট কাঁপেনি ওর। গলা কাঁপেনি। চোখের পাতা পর্যন্ত কাঁপেনি। হায়! ও এমনই পাষাণী!

আলী ইমামের বুকের গহিন দেশে ক্ষরণ শুরু হয় ওর নীতিবাক্য বিতরণের ধরন দেখে। একগাদা গোলমরিচ খাওয়ার পরের দশা পেয়ে বসে তাকে। তবু দ্বিরুক্তি না করে ওর দেওয়া বিরক্তি তিনি সয়ে গেলেন নীরবে।

ভালোবাসি যারে, তার দুঃখ আমি সহিব কেমনে? তাই তো একগাদা ক্ষোভ হতাশা কষ্ট বিষাদের মধ্যে বসেও তিনি বলতে পেরেছিলেন, ‘ভালো থেকো। সুখী হয়ো।’ কথাগুলো বলার সময় তার বুকের অবস্থা হয়েছিল যাচ্ছেতাই, ফারাক্কার ভয়ংকর আশীর্বাদে (!) আমার দেশটা যেমন হাঁসফাঁস করছে, নিঃশ্বাস নিতে প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছিল তার।

তবে সময়ে অনেক কিছুই সয়ে যায়। ক্ষত শুকিয়ে যায়। জীবন ফিরে পায় গতি।

দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর পর আলী ইমাম সাহেব জীবনের গোধূলিলগ্নে উপস্থিত। তার তিন কাল গিয়ে এক কালে ঠেকেছে। শেষ বাজারে এসে বিচ্ছেদ-বিরহের কথা মনে এলে এখন আর গনগনে জ্বালার সেই খরখরে উত্তাপ বুকে অনুভব করেন না। চোখের দুই কূল ছাপিয়ে অশ্রুর প্লাবন বয়ে যায় না। মনে হয় না ধরণির সরণিবরাবর যা কিছু আছে সব অসুন্দর, কদাকার, কিম্ভূত। তবে গোপন একটা দীর্ঘশ্বাস (সেই সময়কার মতো তেজোদীপ্ত নয় যদিও) আজও উদগত হয় তার চওড়া লোমশ বুক ভেদ করে।

ওকে লেখা লিপিকা এখনও আছে জীবদ্দশায় আলী ইমাম সাহেবের জিম্মায়। সময়ের আসর থেকে রেহাই পায়নি এটিও। কাগজ ছিঁড়ে গেছে এখানে ওখানে। লেখা আগের মতো স্পষ্ট নেই। ঝাপসা হয়ে এসেছে বেশ খানিকটা, মনে হয় যেন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে। তবে আলী ইমাম সাহেব জানেন না ঠিক কী কারণে যক্ষের ধনের মতো তিনি এটি আগলে রেখেছেন এতকাল ধরে। যেদিন তার মায়া ছেড়ে ও অন্য পুরুষের জায়া হওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিল অকুণ্ঠচিত্তে, তার কিছুকাল পরে তিনিও মনে মনে ওকে উদ্দেশ করে বললেন, ছিঁড়লে সুতা যায় না গাঁথা, গিঁট দেবে আর কত/ঘুচল আলাপ তোর সনে মোর এ জনমের মত। তুমি বড় হও, কিন্তু অধিক শোকে আমি হব না জড়। বিদায়।

সেই ওর সঙ্গে আজ এতকাল পরে আবার দেখা হবে আলী ইমাম সাহেবের, কাকতালীয়ভাবে আবার তার জন্মদিনেই। দেখা এই হলো বলে।

বুকের বাঁ পাশে ডান হাত আলগোছে রেখে আলী ইমাম সাহেব অনুভব করেন, স্বাভাবিকের চাইতে জোর গতিতে বইতে শুরু করেছে দখিনা বাতাস। দ্রুততর হয়েছে হৃৎস্পন্দন। এটি যেন চোখ মেলে তাকিয়েছে আবার অনেক অনেক দিন পর।

চোখ উঁচিয়ে আলী ইমাম সাহেব দেখতে পান, সামনের দেয়ালের ওপরে খুব যতন করে লেখা কাজী সাহেবের কাল জয় করা কবিতার লাইন, বল বীর-/চির- উন্নত মম শির!

ওখান থেকে চোখ নামিয়ে আনতেই একেবারে মুখোমুখি দর্শন। ভীষণ চমকিত হন আলী ইমাম সাহেব। উনিশ শো একানব্বই সালের ঊনত্রিশে এপ্রিলের ঘূর্ণিঝড়ে সৃষ্ট ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ তিনি প্রত্যক্ষ করেছিলেন। ওটারই এক ক্ষুদ্র ও ভিন্ন সংস্করণ যেন এ মুহূর্তে মূর্তিমান হয়ে তার সামনে দৃশ্যমান। এ কী বেহাল দশা হয়েছে ওর! বড্ড হতশ্রী অবস্থা। দেখা না হওয়াই যে ভালো ছিল তবে। স্মৃতি যেটা সম্পদ হয়ে ছিল এতদিন, তাতে যে মোটা দাগে আঁচড় পড়ে গেল, কালিমালিপ্ত হলো। অক্ষয় থেকে অ-টা খসে পড়ল আলতো করে।

কিছুই বর্তমান নেই বসরাই গোলাপের রূপ-রস-গন্ধ। সব উধাও। লিকলিকে লতার মতো ছিপছিপে গড়নের সেই তরতাজা তরুণী মেয়েটি বুড়িয়ে গেছে, আর মুটিয়ে গেছে কেমন বেঢপ আকারে। চিকচিকে চুলের এখন ফিকে অবস্থা। তারুণ্যের আভাযুক্ত উজ্জ্বল মসৃণ ত্বক যেন অপুষ্টির শিকার, কুঁচকে গেছে অসংখ্য ভাঁজ পড়ে। চোখের নিচে কালি। হাসিও মনে হচ্ছে কেমন বাসি বাসি। আদর করে চিবুক ছুঁতে মন চায় না। মায়াবী ভাবের বড়ই অভাব।

আলী ইমাম সাহেবের মনের কথা যেন খানিক পড়তে পারে ও। হাতে তৈরি দুই ধরনের পিঠা, পায়েস ও ডাবের পানির গ্লাসসহ বারকোশ টি-টেবিলের ওপর রেখে একটা গোপন দীর্ঘশ্বাস নিঃশব্দে নির্গত করে বলল, ‘মেঘে মেঘে বেলা তো আর কম হলো না! শুভ জন্মদিন।’

ওর কথা আর বারকোশে সাজিয়ে রাখা প্রিয় খাবারসমূহ যেন স্পর্শই করে না আলী ইমাম সাহেবকে। তিনি ভাবছেন সময়ের প্রলয়ের কথা। সময়ের ছোড়া তীর থেকে ছাড় পায় না কোনো বীর।

হায়! গোলাপও বুঝি শুকিয়ে যায়!

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা