ইসমত শিল্পী
প্রকাশ : ১৩ জুন ২০২৫ ১৬:২৩ পিএম
- এমন ভাবছেন কেন, বলুন তো?
- ভাবতে চাই না, তবুও চলে আসে। এই যে চাই নাÑ আসুক, তবু আসে, এই যুদ্ধেই ক্লান্ত হচ্ছি। সত্যিই আমি বড় ক্লান্ত! নিজের সাথে নিজের যে যুদ্ধ তাতে মানুষ ক্লান্ত হয় বেশি।
- কিন্তু আপনি তো খুব শার্প। ব্রিলিয়ান্ট, ফ্রেস মাইন্ডেড মানুষ। নিজের সম্পর্কে এত সচেতন। অথচ...
- কখনও কখনও কোথাও কোথাও কোনো সচেতনতা কাজ করে না, বুঝলেন? শার্প ব্রেইনও জঙ ধরে; মরচে পড়ে, খুলে খুলে পড়তে থাকে। ক্ষয় বোঝেন, ক্ষয়? এটাই ক্ষয়। কী মনে হয় জানেন? ক্ষত থেকেও ক্ষয় ভয়ংকর। ক্ষত তো দেখা যায়, ওষুধ দেবার উপায় থাকে। কিন্তু ক্ষয়?
- ক্ষয় ভাবছেন কেন? সব ঘটনা থেকেই আমরা শিক্ষা নিতে পারি। আপনাকে তো এসব বোঝানোর দরকার আছে বলে মনে হয় না। অতীত সবারই আছে। সবকিছুতেই। অতীত মানে এক ধরনের অভিজ্ঞতা। ভাবা যায় না, এমনটা?
- না। যায় না। যাচ্ছে না। গেলে আপনার কাছে আসতে হতো না। শেষ পর্যন্ত আপনাকেও বোঝাতে ব্যর্থ হলাম। আচ্ছা, ঘটনা আর দুর্ঘটনা কি এক? এটা নিছক ঘটনা নয়। একটা বিরাট দুর্ঘটনা। ভয়ংকর!
কৃষ্ণপক্ষের সন্ধ্যা। নতুন চাঁদ উঠলে রমজান শুরু হবে। দিন শেষের আদলে একটা তোড়জোড় টের পাওয়া যায়। দূরের মসজিদ থেকে ভেসে আসছে আজানের ধ্বনি। পাখিরা পতপত উড়ছে; কয়েকটি বুনো কবুতর উড়ে গেল তাড়াহুড়ো করে। দূর থেকে ভেসে আসছে মিহিসুরের শব্দ, শাঁখ বাজছে। একটু পরেই ঝুপ করে সন্ধ্যে নামবে। বাতি জ্বলছে মিটিমিটি।
হঠাৎ চুপ হয়ে গেল তনিকা। তনিকা বিশ্বাস। আমার সামনের মানুষটা। যাচ্ছেতাই রকমের চৌকস। ভয়ংকর গোছালো ধাঁচের, বোঝাই যায়। মহিলা বলা যায় যদিও, আসল বয়সটা এমন। কিন্তু দেখতে গতানুগতিক মহিলা নয় একেবারেই। আধুনিক। বয়স এখানে অচল। বয়স আসলে একটা সময় নয়, সময়ের সমষ্টি। সময়কে ঠিকঠাক ব্যবহার করতে পারাটাই দক্ষতা। তনিকা বয়স ও সময়কে এত সুন্দরভাবে রিপ্রেজেন্ট করতে পারে যে, বয়সের দিকে খেয়াল দেওয়ার কথা মনেই আসে না। বয়সকে শুধু আটকে রাখেনি, থামিয়ে দিয়েছে সে। কাজে, কথায়, বিশ্বাসে। প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাস চোখেমুখে, ঠিকরে বেরুচ্ছে। এই ভয়ংকর আত্মবিশ্বসী মানুষটা এভাবে ভেঙে পড়েছে! না বললেও ভাবাচ্ছে বিষয়টা।
রবীন্দ্রনাথ এক জায়গায় বলেছেন, আধুনিকতা সময় নিয়ে নয়, মর্জি নিয়ে। তাঁর মতে, বিশ্বকে ব্যক্তিগত আসক্তভাবে না দেখে নির্বিকারভাবে দেখাই আধুনিকতা। উজ্জ্বল, বিশুদ্ধ এবং মোহমুক্তভাবে দেখা। এতেই আনন্দ।
তনিকার চোখের ভেতরে এই উজ্জ্বলতার চ্ছটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে। ঠোঁটের দুইপাশে অসম্ভব মার্জিত একটা হাসি ঝুলে পড়তে পড়তে আটকে যাওয়া। দৃষ্টি কাড়ে। আঙুলগুলো চমৎকার। সুঠাম বললে ভুল হয়, কর্মঠ আঙুল। সামান্য লম্বা নখ; ইচ্ছে করেই, নাকি অনিচ্ছা-অবহেলায় বেড়ে চলেছে মুশকিল হচ্ছে বুঝতে। তবে আলাদা রকমের।
আলাদা রকম কোনো কিছুকে সঠিকভাবে সব সময় ব্যাখ্যা করে ফোটানো যায় না। বোঝা যায়। একটা আকর্ষণ তৈরি হয়। এমনি এমনিই যে হয়, তাও ঠিক না। তার অজস্র কারণ থাকে। কারণগুলো অব্যাখ্যায়িত। সঠিক শব্দ না হলে ব্যাঞ্জনা আসে না তাই বিরত রাখতে হয় নিজেকে। তাকিয়ে থাকতে হয়! দেখতে হয়। অবলোকন করে যেতে হয়। কিন্তু সময়টা আমার পক্ষে নেই। তনিকা মানসিকভাবে ভীষণ অস্থিরতার মধ্যে। সেটা রুবন বলেছে আগেই। রুবনের বর্ণনায় যেমনটা জেনেছি তনিকা তার থেকেও অন্যরকম মাধুর্যের। কিছু মানুষ ভাবনা তৈরি করে দেয়, ভাবতে বাধ্য করে। ইচ্ছে করলেও এড়ানো যায় না। এই জটিলতা থেকে কীভাবে এড়িয়ে যাব ভাবছি। অজান্তেই জটিলতার মধ্যে ঢুকে পড়ছি আমি। উতলা লাগছে মনটা। তনিকার জন্যে আদৌ কি কোনো উপকারে আসতে পারব আমি? কীভাবে পারব?
রুবন কেন পারল না তনিকার মানসিক ক্রাইসিসের এই সময়টাতে একটু সাপোর্ট দিতে? শেষ পর্যন্ত কাউন্সেলিংয়ের পরামর্শ দিল! রুবনটা না, যাচ্ছেতাই একটা পুরুষ! আমি হলে বিনা বাক্যে তনিকার সার্বক্ষণিক সঙ্গী হয়ে যেতাম। কিন্তু এখন কি সেটা সম্ভব? প্রফেশনাল রেসপনসিবিলিটি বড় বিষয়। সেখানে ব্যক্তি গৌণ। তনিকা এখন আমার ক্লায়েন্ট মাত্র। প্যাসেন্ট ধরা যায়।
- আচ্ছা, আমার কথাগুলো কি আপনি বুঝতে পারছেন না? গুরুত্ব দিচ্ছেন না তাই তো? আমি মনে হয় অহেতুক আপনার সময় নষ্ট করছি।... তাহলে, উঠব? হ্যাঁ, আপনার ফিটা... একটা সাদা খাম তনিকার হাতে। এগিয়ে দিচ্ছে। ইতোমধ্যেই উঠে দাঁড়িয়েছে সে। আমিও। অজান্তেই উঠে দাঁড়িয়েছি।
কেন দাঁড়িয়েছি? তনিকাকে বিদায় জানাতে? নাকি তনিকা বিশ্বাস উঠে দাঁড়াল বলে আমাকেও দাঁড়িয়ে পড়তে হলো? আমি না চাইলেও এটা হয়ে গেছে এমনিতেই...! আত্মবিশ্বাস খুব ভয়ংকর জিনিস। সম্মোহনের মতো। ইচ্ছে অনিচ্ছা কাজ করে না। আসক্তি তৈরি করে। মোহ বলা যায় একে? না হয়তো। মোহ আর আসক্তি কি এক? পুরোপুরি তাও না। কী করব তাহলে এখন?
তনিকা কি বিদায় নেবে? খামটা নেব? কেন নেব? আমি তো তনিকার জন্যে কোনো পরামর্শ বা নির্দেশনা দিইনি। এমনকি সবকিছু শুনিওনি। তাহলে? শুনব?
আমি দাঁড়িয়ে আছি। তনিকা কী করবে? চলে যাবে?
- তনিকা বিশ্বাস!
- হু? বলুন! চশমাটা একটু নেড়ে নিল তনিকা। বসল। একটা উঁকি দেওয়া দীর্ঘশ্বাসকে নিশ্বাসের ভেতরে শব্দ করে বেঁধে নিল।
- মানুষ এমনও পারে! কীভাবে সম্ভব?
- আমাকে বলছেন?
- আর কাকে? কে আছে আর এখানে?
নিজেকে হালকা করার চেষ্টাটা বেশ কাজে লেগেছে আমার। আমিও পারছি। মনে হচ্ছে বিশ্বাস অবিশ্বাস আত্মবিশ্বাস সবই সংক্রামক। নিজের আত্মবিশ্বাসে তৃপ্তি পাচ্ছি বেশ। ঠোঁটে না হলেও কণ্ঠে হাসির আমেজ আনা গেল কিছুটা হলেও। আনন্দ লাগছে। এই আনন্দ নিজের জন্যে নাকি তনিকার জন্যে এখনও বুঝে উঠতে পারিনি। সবকিছু বুঝতে ইচ্ছে করে না সব সময়। না-বোঝা থাকুক কিছুটা।
- চা খাওয়া যাবে? অথবা কফি? একটু কম গরম? পছন্দ?
- হতে পারে। কফি কম গরমই পছন্দ আমার। রুবন বলেছে আপনাকে?
- না তো...
- ও।
- এত সংক্ষিপ্ত উত্তর!
- কী-ই বলার ছিল?
- ছিল। থাকেই তো, কত রকম কথা। থাকে না? এই ধরুনÑ
- অদরকারি কথা? হু। থাকে। তবে আমার নেই। দরকার কী?
- সবকিছু দরকারেই হয় বুঝি? চলে সব সময়, মেপেজুকে? আচ্ছা, কী গান শোনেন আপনি? রবীন্দ্র...
- গজল। আমার কথা শেষ না হতেই তনিকার উত্তর।
- বাহ্। আর?
- আর? না। ওহ্ মাঝেমধ্যে শুনি। রবীন্দ্রনাথের গান, বুদ্ধদেবের কবিতা। আর লালন...
- তাই? রবীন্দ্রনাথের সাথে লালনের মিশ্রণটা কী মনে হয়?
- সচল! এটা কোনো ব্যাখ্যা হলো? মানে সচল না হলে অচল, এটা হতে পারে? এরকম ভাষায় এঁদের আনা যায়!
- যাবে না কেন? খুব যায়। এই যে আপনি, সচল সচেতন সাবলীল। সুন্দর।
- শেষেরটা বাদে। আগেরগুলো ঠিক আছে।
- মানে, সুন্দর নয়? সাবলীল হলে তাকে অসুন্দরের ভেতরে ফেলা চলে না। সাবলীল কীসে হয় জানেন?
- কীসে?
- অনেক কিছুর সমাহার।
- যেমন? এভাবে জানতাম না তো?
- সহজ, কঠিন, দৃঢ়তা, সাবলীলতা সবকিছু মিলিয়ে সুন্দর।
- সহজই তো সুন্দর।
- না। সহজ সব ক্ষেত্রে সুন্দর না। কঠিনও তো সুন্দর। তাহলে?
- হুম। তা ঠিক।
- তনিকা, তনিকা বিশ্বাস। তাই তো? এবার কথা শুনি? মানে আপনার যে ব্যাপারে আসা। বলুন।
- তনিকা তাকিয়ে আছে, কফির মগের দিকে। চুপচাপ।
- বলুন; সমস্যাটা। গত এক বছর ধরে মানসিক চাপ। মানে মেনটাল স্ট্রেইস?
- শুধু মেনটালই নয়, শারীরিকভাবেও। প্রচণ্ড ধকল যাচ্ছে একটার পর একটা। পরপর পাঁচ সাতটা এক বছরে। পেরে ওঠা সম্ভব? আমার রেগুলার চেকআপের সময় ডাক্তারকে বললাম, আমার কোনো অনুভূতি কাজ করছে না। মানসিক সমস্যা হলো না তো? ডাক্তার বললেন, ‘না, আপনি যখন নিজেই বুঝতে পারছেন যে মানসিক সমস্যা হচ্ছে, তখন নিজেই ওটা কাটিয়ে উঠতে পারবেন। একটু সময় লাগবে এই যা। সবগুলো স্ট্রেইস কিছুদিনের মধ্যে। কাজের ভেতরে ঢুকে পড়ুন আবার সব ঠিক হয়ে যাবে।’ আমি বললাম, ‘জানেন, আমি মন খারাপ, মন ভালো, কষ্টবোধ, দুঃখ কিছুই যেন বুঝতে পারছি না বেশ কিছুদিন থেকে। তো...’ ডাক্তার বললেন, ‘হ্যাঁ, বুঝতে পারছি। বলছি তো, ওটা কিছুদিন সময় লাগবে। সময়ে আপনিই ঠিক করে নিতে পারবেন। সেই ক্ষমতা আপনার আছে। যান তো, ও কিছু হবে না। ভাববেন না ওসব। ভাববেনই না। ওকে?’
কিন্তু তারপরই এই দুর্ঘটনাটা আবার। আপনি বুঝতে পারছেন? দীর্ঘদিনের অর্জন আমার এই অবস্থান! আমার মর্যাদা। সব ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে লোকটা। সোজা হয়ে দাঁড়াব কী করে আমি?
- এমন মনে হচ্ছে কেন? আমি দেখছি সবকিছু ঠিক আছে। কে বলেছে, আপনার মর্যাদা নষ্ট হয়েছে? আপনার অর্জন, কিচ্ছু নষ্ট হয়নি। অর্জন নষ্ট হয় না তনিকা। এটাও ভুল করি আমরা। এই যে নষ্ট হয়েছে মনে হচ্ছে, এটুকু শুধু কাটাতে হবে। জাস্ট এটুকু। আর সবকিছু ঠিকঠাক। বুঝলেন?
- মানে? আমার মানসিক সমস্যা? এই যে অবসাদ? হাতাশা? ভয়! মানে আপনি কোনো ওষুধ বা পরামর্শ দেবেন না?
- দেব তো। দিন, হাতটা দিন। প্লিজ।
- আমি! মানে...
- হ্যাঁ, আপনি। তনিকা বিশ্বাস। তাই তো?
- হ্যাঁ।
- বিশ্বাসে অনেক কিছু থাকে। ভীষণ তৃপ্তি। এই যে আপনি চব্বিশ মিনিট কাঁদলেন, কফি খেলেন। দেখলাম তো, আপনার কিচ্ছু হয়নি। আস্থা হারিয়েছেন মাত্র। আর কিচ্ছু হারায়নি আপনার। বিশ্বাসের মধ্যে আস্থা থাকে। অবিচল আস্থা। আমিও বলছি আপনি সম্পূর্ণ ঠিক আছেন। লোকটা বিশ্বাস কেড়ে নিতে পারেনি, আস্থার জায়গাটা নষ্ট করেছে। এতে তো আপনার কোনো দোষ নেই। বিশ্বাস করতেন খুব তাই তো?
- খু-উ-ব। বিশ্বাস করতে আমি পছন্দ করি। বিশ্বাসের মধ্যে অনেক তৃপ্তি। ভীষণ স্বস্তি। রূপমকে এত বেশি বিশ্বাস করতাম! জানেন, আমি প্রার্থনার মতো ভাবতাম ওকে! কিন্তু...
তনিকা কাঁপছে। কাঁদছে। কান্না আটকাতে কষ্ট হচ্ছে খুব। মানুষ হাসি ও কান্না কোনোটাই বেশি আটকে রাখতে পারে না। হাসি যেমন ওষুধের কাজ করে, কান্নাও তেমনি। ভেতর পরিষ্কার করে ফেলে কান্না। কান্নারও দরকার হয়। কাঁদুক।
- তনিকা। তনিকার কাঁধ ছুঁয়েছি আমি। যেন গোলাপি চেরি; এত কোমল!
- তনিকা কাঁদছে না। স্থির। অচঞ্চল। আত্মবিশ্বাসে যেমন হয়, বসে আছে। সন্ধ্যা নামছে। নীল সন্ধ্যা। গাঢ় হবে ক্রমেই। সবুজ অন্ধকার। এদিকের পথটা বেশ সরু। অন্ধকারে আরও সরু দেখা যায়। কিছুতেই বিদায় দিতে ইচ্ছে করছে না ওকে। আরও কিছক্ষণ থাকুক না! ইচ্ছে করছে থাকুক। না যাক। ওর আস্থা তৈরি হোক। মানুষ সাজানো হাসি হাসতে পারে কিন্তু সাজিয়ে কাঁদতে পারে না। প্রাণ খুলে একটা দুটো জায়গায় মাত্র কাঁদা যায়, যেখানে আস্থা থাকে। ভালোবাসা থাকে।
কান্না স্বাস্থ্যের জন্যে উপকারী। কাঁদলে দুঃখ, যন্ত্রণা, ক্ষোভ দূর হয়। মানসিক তৃপ্তি আসে। কাঁদলে মানুষকে শিশুর মতো দেখায়। আসলে সব মানুষের ভেতরেই একটা শিশু বসবাস করে। বাহ্যিক আবরণ মানুষের ভেতরের শিশুকে দমন করে রাখে। সুযোগ পেলেই সে শিশু-আচরণ করতে ভালোবাসে। হাসি কান্না উভয়ই শিশুর মতো, শুদ্ধ। তনিকাকে শিশুর মতোন দেখাচ্ছে। রাত নামছে। সবুজ অন্ধকারে তনিকা যেন এক গোলাপি শিশু। সে যেন কাঙ্ক্ষিত সাকুরা। ভেতরটা যেন প্রায় আনন্দে আত্মহারা হয়ে যাচ্ছে।
আমার খুব ইচ্ছে করছে তনিকার চোখ মুছিয়ে দিতে। আমি খুব করে চাইছি, তনিকা কাঁদুক। আমার উপরে আস্থা জন্মাক। বিশ্বাস করুক। খুব ইচ্ছে করছে, তনিকার মাথায় একবার হাত রাখতে। রাখব...?