জফির সেতু
প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:০৪ পিএম
এই ভোরে পাখিগুলো কিচিরমিচির করছে কেন যখন আলো ফুটছে দুনিয়া ভেদ করে? পাখিগুলোকে কি আমি চিনি? কিংবা ওরা আমাকে চেনে?
আমার ঘরের পাশে,
আমার আঙিনায় দোয়েলটা লাফিয়ে ওঠে কেন? আমি তো ওদের নাম-পরিচয় জানি না! তাহলে শিস কেন
আমার ঘুম ভাঙায়?
পাখিদের এ হল্লা
ঘুমের ভেতরে আমাকে ডাকে; আয়, বাইরে আয়! ওঠ।
কখনো মাঝরাতে
কোকিলও ডাকে! কেন যে ডাকে, কাকে ডাকে? তার নাকি ভাই হরিয়ে গেছে; খেয়েছে বনের বাঘে?
সে কি তবে বোন কোকিল? যাকে প্রেমিক ছেড়ে গেছে দূর বনে?
আমি একবার কাঠ
কাটতে গিয়েছিলাম অরিন-জংলায় দেখি একটা মা-পাখি হুদাই চুমু খাচ্ছে বাচ্চার ঠোঁটে কিন্তু
মেহের ফুপু বলল, দুর বোকা, ওটা তো আধার খাওয়াচ্ছে কলিজার টুকরাকে!
একটা শ্যাওড়া-কাঠের
তক্তায় শুয়ে আছি সন্ধ্যারাত থেকে ভোরের আজান পর্যন্ত। গত চব্বিশঘণ্টা ধরে শুনছি গাজার
সেই করুণ-কণ্ঠ মুয়াজ্জিনের আজান...
আমার কান্না আসে,
আমার কান্না আসে। একদল সুসভ্য মানুষ স্রেফ ধর্মের কারণে হত্যা করছে দুধের শিশুকে, ধর্ষণ
করছে মা-বোনকে, লোকালয় পুড়িয়ে ফেলছে; একটা নরক করে তুলছে দুনিয়াটাকে
সারারাত আমার
ঘুম আসে না। শুধু ওই মুয়াজ্জিনের আজান কানে ভাসে! অসহায় সেই কণ্ঠ, অসহায় সেই সুর, আহ্বান;
রক্ষা করো প্রভু! একজন বিশ্বাসীর এমন কাতর ধ্বনি কখনো শুনিনি আগে
এই ভোরে পাখিরাও
কাঁদছে, উৎপীড়িত মানুষের মতো কাঁদছে; ডানা ঝাপটাচ্ছে। হায় খোদা, আমি কেন বলছি কিচিরমিচির;
বলছি হল্লা করছে
আমি তবে পিশাচ
ইহুদি, অন্ধ খ্রিস্টান আর বোবা মুসলমান!