× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

আয়কর রিটার্ন জালিয়াতি

ফাঁসছেন পাপুলের শ্যালিকা জেসমিন প্রধান

সৈয়দ ঋয়াদ

প্রকাশ : ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ১০:০০ এএম

আপডেট : ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ১০:৫৩ এএম

জেসমিন প্রধান। ছবি : সংগৃহীত

জেসমিন প্রধান। ছবি : সংগৃহীত

আয়কর রিটার্ন জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলায় ফাঁসছেন অর্থ ও মানব পাচারের দায়ে দণ্ডিত কুয়েত কারাগারে আটক লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের শ্যালিকা জেসমিন প্রধান। তার আয়কর রিটার্ন দাখিলে জালিয়াতি ও প্রতারণার প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

জেসমিন ছাড়াও জালিয়াতি ও প্রতারণার এ ঘটনায় কর অঞ্চল-৪ এর সার্কেল-৭৯ এর উপকর কমিশনার খন্দকার হাসানুল ইসলাম ও কর অঞ্চল-৮ এর সার্কেল-১৬৫ এর উচ্চমান সহকারী (পিআরএল) হিরেশ লাল বর্মণের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। প্রতারণা ও জালিয়াতির ঘটনায় জেসমিন প্রধানসহ এই তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা অনুমোদন করেছে দুদক।

দুদকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে মামলা অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দুদকের উপপরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা মশিউর রহমান শিগগির মামলাটি করবেন বলেও জানান তিনি।

এ-সংক্রান্ত দুদকের এক অনুসন্ধান প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জেসমিন প্রধান ভগ্নিপতি পাপুলের মাধ্যমে অবৈধ টাকার মালিক হয়েছেন। পরে নিজ নামে জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে পৃথক কর সার্কেলে দুটি ট্যাক্স আইডেনটিফিকেশন নাম্বার (টিআইএন) খোলেন। 

দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে ২০২১ সালে জেসমিনের আয়কর রিটার্ন দাখিলে জালিয়াতির বিষয়টি। জালিয়াতির মাধ্যমে একই বছর তার ৫ করবর্ষের রিটার্ন প্রস্তুত করা হয়। এ ছাড়া অডিট প্রতিবেদন ও ব্যাংক বিবরণী প্রস্তুতেও ঘষামাজার প্রমাণ পেয়েছে সংস্থাটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জেসমিন প্রধান ঢাকা কর অঞ্চল-৮ অফিসের সার্কেল-১৬৫ এর কর্মচারীদের ঘুষ দিয়ে যোগসাজশের মাধ্যমে ২০১৬-১৭ করবর্ষ থেকে ২০২০-২০২১ করবর্ষ পর্যন্ত রিটার্ন একই দিনে দাখিল করেন। এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের চোখ ফাঁকি দেওয়ার উদ্দেশ্যে কর সার্কেলের যাবতীয় রেজিস্টারে ঘষামাজা করে টাকার অঙ্ক পরিবর্তন ও পরিমার্জন করেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জেসমিন প্রধানের ওই পাঁচ বছরের আয়কর রিটার্নের রেকর্ড থেকে দেখা যায় তার মোট আয়ের কলামে ঘষামাজা রয়েছে। ৭৪ ধারার কলাম, ব্যবসায় মূলধন বিনিয়োগ কলামে ঘষামাজা, হাতে নগদ ও ব্যাংক স্থিতি কলামে রিটার্ন রেজিস্টারে নিট সম্পদ কলামে ভিন্ন হাতের লেখায় বিভিন্ন সংখ্যা বসানো ছাড়াও রিটার্ন রেজিস্টারে পারিবারিক ব্যয়ে আয়কর রিটার্নে ভিন্নতা পাওয়া যায়।

করদাতা জেসমিন প্রধানের ওই পাঁচ করবর্ষ পর্যন্ত সর্বজনীন স্ব-নির্ধারণী পদ্ধতিতে দাখিল করা আয়কর রিটার্নের সঙ্গে যেসব ব্যাংক বিবরণী জমা দিয়েছেন, তার প্রতিটির জেনারেটেড ও প্রিন্টেড তারিখ ২০২০ সাল। এ ছাড়া তার আয়কর রিটার্নের সঙ্গে দাখিল করা অডিট প্রতিবেদনও জাল করা হয়। দুদক অনুসন্ধানে প্রমাণ পেয়েছে তিনি পাঁচ বছরের অডিট প্রতিবেদন ২০২০ সালে একই সঙ্গে প্রস্তুত করেন।

জেসমিন প্রধানের স্টক রেজিস্টার ও মাসিক কর নির্ধারণী রেজিস্টার পর্যালোচনা করার কথা উল্লেখ করে দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, এই করদাতা ২০১৬-১৭ করবর্ষে ৮২ বি বি ধারায় ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা; ২০১৭-১৮ করবর্ষে ৩ লাখ ৫০ হাজার; ২০১৮-১৯ করবর্ষে ৪ লাখ ৫০ হাজার; ২০১৯-২০ করবর্ষে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা বলে মোট আয় লিপিবদ্ধ করা রয়েছে। কিন্তু আয়কর রিটার্নে ২০১৬-১৭ করবর্ষে ৮২ বি বি ধারায় মোট আয় ১৩ লাখ ৫০ হাজার; ২০১৭-১৮ করবর্ষে ২১ লাখ ৫০ হাজার; ২০১৮-১৯ করবর্ষে ৩৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকা এবং ২০১৯-২০ করবর্ষে মোট আয় রয়েছে ৪৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এই করদাতার আয়কর রিটার্নের সঙ্গে স্টক রেজিস্টার এবং মাসিক কর নির্ধারণী রেজিস্টারের কোনো মিল পাওয়া যায়নি; অর্থাৎ মূল রিটার্নগুলো পরিবর্তন করা হয়েছে।

জেসমিন প্রধান ঢাকা কর অঞ্চল-৮ এর সার্কেল- ১৬৫ এর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাধ্যমে রিটার্ন রেজিস্টার ঘষামাজা করে মোট আয়, মোট সম্পদ, নিট সম্পদ, পারিবারিক ব্যয় ইত্যাদি পরিবর্তন করান। গত মার্চ মাসে কমিশনে এই প্রতিবেদন জমা হয়। পরে প্রতিবেদন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়।

এদিকে ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর ২ কোটি ৩১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ ও ১৪৮ কোটি টাকার অর্থ পাচারের অভিযোগে শহিদ ইসলাম পাপুল ও তার স্ত্রী, কন্যা ও শ্যালিকা জেসমিন প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা