× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

অব্যাহতির তথ্য গোপন করে আবার সরকারি চাকরিতে!

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২২ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:১৮ পিএম

আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:৩৩ পিএম

অব্যাহতির তথ্য গোপন করে আবার সরকারি চাকরিতে!

সরকারি চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতির আবেদন করে দেড় বছর পর বিষয়টি গোপন করে পুনরায় উচ্চতর পদে যোগদানের অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফাতেমা দোজার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করেছে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের শৃঙ্খলা অধিশাখা। সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ অনুসারে মামলায় ডা. ফাতেমার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক সেমিনারে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণপত্র পরিবর্তন করে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা, ফৌজদারি মামলায় গ্রেপ্তার ও কারান্তরিন হওয়ার তথ্য গোপন করে স্বাভাবিক নিয়মে বেতন-ভাতা ও পদোন্নতিসহ সকল সুযোগ-সুবিধা লাভ করারও অভিযোগ আনা হয়েছে। 

সম্প্রতি স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরে এ বিভাগীয় মামলা (মামলা নং- ৪২/২০২৩) করা হয়। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় ডা. ফাতেমা দোজা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগে সহকারী অধ্যাপক পদে যোগদানের লক্ষ্যে ২০১২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি সরকারি চাকরি থেকে অব্যাহতি চেয়ে স্বাস্থ্য সচিব বরাবর যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে একটি আবেদনপত্র দাখিল করেন। তার দাখিলকৃত আবেদনপত্রটি পরের দিন ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২ জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক এনআইসিভিডি/পার-২/৯৫৪ নং স্মারকে মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বরাবর অগ্রায়ণ করেন। ডা. ফাতেমা দোজা সরকারি চাকরিতে একবার ইস্তফা দেওয়ার পর পুনরায় ২০১৩ সালের ১১ জুন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে উচ্চতর পদে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। চাকরি হতে অব্যাহতি নেওয়ার তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১২ থেকে পুনরায় উচ্চতর পদে যোগদানের তারিখ ১১ জুন ২০১৩ পর্যন্ত তাকে কোনোরূপ ছুটি মঞ্জুর করা হয়নি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটির তদন্তে ডা. ফাতেমা দোজার সরকারি চাকরি হতে স্বেচ্ছায় অব্যাহতির বিষয়টি গোপন করে পুনরায় সরকারি চাকরিতে যোগদানের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। কমিটি গত বছরের ৫ অক্টোবর এ ব্যাপারে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে বলেও মামলার অভিযোগে উল্লেখ হয়। 

অভিযোগনামায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ডা. ফাতেমা দোজা ২০২২ সালের ২৭ নভেম্বর হতে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে উত্তর আমেরিকা রেডিওলজি সোসাইটির (আর এস এন এ) ১০৮তম বার্ষিক সভা ও বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের আমন্ত্রণপত্র পরিবর্তন করে উক্ত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে আবেদন করেন। আয়োজক সংস্থার সাথে যোগাযোগ করে জানা যায়, উক্ত কর্মসূচিতে যোগদানের যাবতীয় খরচ উক্ত সংশ্লিষ্ট অংশগ্রহণকারীকে বহন করতে হবে। ডা. ফাতেমা অংশগ্রহণের ব্যয়ভার আয়োজক সংস্থা বহন করবে মর্মে উল্লেখ করে আমন্ত্রণপত্র পরিবর্তন করেন এবং মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন। এজন্য তাকে দুটি কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হলেও কোনো জবাব দেননি। তাছাড়া অভিযোগনামা থেকে আরও জানা যায়, ডা. ফাতেমা দোজা ঢাকা মেডিকেল কলেজে মেডিকেল অফিসার পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় ২ মে ২০০৪ ফৌজদারি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জেলহাজতে ছিলেন এবং ৪ মাস ১ দিন কারাভোগের পর ৪ সেপ্টেম্বর ২০০৪ তারিখে মুক্তি পেয়ে ১১ সেপ্টেম্বর ২০০৪ তারিখে পুনরায় কাজে যোগদান করেন। তিনি ফৌজদারি মামলায় গ্রেপ্তার ও কারান্তরিন হওয়ার তথ্যও কর্তৃপক্ষের কাছে গোপন করেন এবং পরবর্তীতে ব্যক্তিগত অসুবিধার কথা উল্লেখ করে ৪ মাস ৮ দিনের অর্জিত ছুটির আবেদন করেন এবং তথ্য গোপন করে স্বাভাবিক নিয়মে বেতন-ভাতা ও পদোন্নতিসহ সকল সুযোগ-সুবিধা লাভ করেন। 

অনুসন্ধানে জানা যায়, নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলাধীন বিন্নাকুড়ি গ্রামের মাতৃহীন ১০ বছরের গৃহকর্মী মোস্তাকিনাকে গরম ইস্তিরি দিয়ে পুড়িয়ে গুরুতর জখম করার অপরাধে ডা. ফাতেমা দোজার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০-এর ৪(২) ধারায় ২০০৪ সালের মে মাসে রমনা থানার ততকালীন এস আই মো. আব্দুল্লাহেল বাকী মামলা করেন; মামলা নং ৪(৫) ২০০৪। ঢাকাস্থ পরিবাগের ২/১০ হাবিবুল্লাহ রোডে চতুর্থ তলার বাসা থেকে ২ মে ২০০৪ তারিখ ডা. ফাতেমাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং পরদিন ৩ মে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মীর আলী রেজা তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন। 

ডা. ফাতেমার কর্মকাণ্ড সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর বিধি ৩(খ) ও ৩(গ) অনুসারে অসদাচরণ হিসেবে গণ্য করে তাকে সরকারি চাকরি হতে বরখাস্তকরণ অথবা অন্য কোনো যথোপযুক্ত দণ্ড কেন প্রদান করা হবে না মর্মে নোটিসও দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ব্যক্তিগত শুনানি চান কি না সেটাও জানাতে বলা হয়। ডা. ফাতেমা কারণ দর্শানোর নোটিসের জবাব না দেওয়ায় বিভাগীয় মামলার পরবর্তী ধাপ হিসেবে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. মঞ্জুরুল হাফিজকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের শৃঙ্খলা অধিশাখার উপসচিব মো. শাহাদাত হোসেন কবির স্বাক্ষরিত ১০ মার্চের পত্রে অনুরোধ করা হয়। তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে যুগ্ম সচিব মঞ্জুরুল হাফিজের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। অপরদিকে অভিযুক্ত ডা. ফাতেমার বক্তব্য জানতে মোবাইলে কল করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা