প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ২০:২৯ পিএম
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। ছবি : সংগৃহীত
রাজধানীর বাড্ডা
এলাকায় মাদক, চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রিহান ইসলাম ওরফে পাভেলকে
হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তার পিঠে ছোট-বড় ২২টি ও মাথায় আটটিসহ মোট ৪৫টি
জখমের চিহ্ন ছিল বলেও জানিয়েছে পুলিশ। গত ১৪ এপ্রিল তাকে হত্যা করে মরদেহ রাজধানীর
পল্লবীর স্বপ্ননগর আবাসিক এলাকায় টেকেরবাড়ি গণপূর্ত বিভাগের পুকুরে ফেলে যায় খুনি।
ঘটনার পরদিন তার মা পারুল বেগম পল্লবী থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার এজহারভুক্ত আসামি
ছয়জন। তারা হলেন হাবিব, মো. হানিফ, মো. আনিছ, রায়হান বাবু, মো. মিলন ও মো. জনি। এছাড়া
আরও পাঁচ-ছয়জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয় মামলায়।
এ ঘটনায় আটজনকে
গ্রেপ্তার করে পল্লবী থানার পুলিশ। তারা হলেন হাবিব, আনিস, মিলন হোসেন, শাহাবুদ্দীন
ও সোহান ইসলাম, রায়হান বাবু, সোহেল ওরফে তোতা মামা ও বাচ্চু ওরফে কাজল বাচ্চু। তাছাড়া
হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।
মামলার এজাহার
অনুযায়ী, ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতেন পাভেল। তিনি তার পরিবারের সঙ্গে ১২ বছর ধরে বাড্ডা
এলাকায় বসবাস করতেন। মামলার আসামিরা পাভেলের পূর্ব পরিচিত ও তারা একসঙ্গে চলাফেরা করতেন।
মামলার আসামিরা বাড্ডা এলাকায় মারামারি, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা পরিচালনা, মাদক বিক্রয়সহ
বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ করতেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, পূর্বশত্রুতা, চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসার জেরে পাভেলকে হত্যা করা হয়। ভুক্তভোগী ও মূল অভিযুক্ত বন্ধু হলেও তাদের মধ্যে শত্রুতা ছিল। তিনি বলেন, রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় গ্রুপিং নিয়ে পাভেল ও হাবিব নামে এক ব্যক্তির মধ্যে মারামারি হয়েছিল। সে সময় পাভেল হাবিবের হাতে কোপ দিয়েছিলেন। সে ঘটনায় ২০২৩ সালে ২৮ ডিসেম্বর বাড্ডা থানায় মামলাও হয়। পাভেল জেল খাটলেও হাবিব শত্রুতা ভুলে যাননি। জেল থেকে বের হলেও হাবিব পাভেলকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন।
হারুন অর রশীদ
বলেন, তাজমুল মোটরসাইকেলে করে পাভেলকে পল্লবীতে নিয়ে যান। হাবিবের দুই ভাই হানিফ ও
আনিছসহ কয়েকজন মিলে পাভেলকে কুপিয়ে হত্যা করেন। এ ঘটনায় সরাসরি ছুরিকাঘাতে জড়িত তিনজনকে
গোয়েন্দা পুলিশ মিরপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করে। পাশাপাশি থানার পুলিশ পাঁচজনকে
গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ জানায়, গত মঙ্গলবার রাতে পল্লবী থানার পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে সোপর্দ করলে ঘটনার সত্যতা ও জড়িত থাকার বিষয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন মূল পরিকল্পনাকারী হাবিব। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাকি চারজনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ডিবির মিরপুর বিভাগের পল্লবী জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদ হাসান বলেন, পাভেল হত্যায় জড়িত সন্দেহে আরও দুইজনকে খুঁজছে পুলিশ। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টাসহ ঘটনার তদন্ত চলছে।