প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০২৪ ২০:৪৩ পিএম
আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০২৪ ২১:১৬ পিএম
গ্রেপ্তারের পর চক্রের সদস্যদের সংবাদ সম্মেলনে হাজির করা হয়। প্রবা ফটো
গণপরিবহনে কখনও যাত্রী, কখনও-বা নামাজি সেজে, আবার কখনও ভিড়ের মধ্যে সুযোগ বুঝে মোবাইল ছিনতাই করে আসছিল একটি চক্র। এরপর দ্রুতই চুরি করা মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে বিক্রি করে দিত বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট ও মার্কেটে। এমন একটি চক্রের ১৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১০৩টি চোরাই মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে ডিবির লালবাগ বিভাগ।’
ডিবি জানায়, গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের স্পেশাল টিম এবং অবৈধ অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার টিম পৃথক অভিযান চালিয়ে পল্লবী, বাউনিয়া, দক্ষিণের যাত্রাবাড়ী, সাইনবোর্ড এবং চট্টগ্রাম রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে পকেটমার, মোবাইল চোর, চোরাই মোবাইলের আইএমইআই পরিবর্তনকারীসহ ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে ৭৯টি স্মার্টফোন ২৪টি বাটন ফোনসহ ১০৩টি ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারদের কারও নামে ১৭টি, কারও নামে ১১টি, কারও নামে ৮-৯টি করে চুরি-ছিনতাইয়ের মামলা রয়েছে।
হারুন-অর-রশীদ বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা জানিয়েছে- নামাজি সেজে মসজিদে গিয়ে আবার গণপরিবহন কিংবা প্রাইভেটকারে জানালার পাশে অসতর্কভাবে মোবাইলে কথা বলার সময় ছিনতাইকারীরা হেঁচকা টান দিয়ে মোবাইল ছিনতাই করত তারা। তা ছাড়া বিভিন্ন শপিং মল, বিপণিবিতানে আসা ক্রেতাদের পকেটে, ব্যাগে কৌশলে চাপ দিয়ে মোবাইল চুরি করে। চক্রটি মোবাইল ছিনতাইয়ের পর আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে বাজারে বিক্রি করত। আবার কখনও ধরা পড়ার ভয়ে ফোন ভেঙে ফেলত। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে আইএমইআই পরিবর্তনকারীদের নাম জানা গেছে। এ ছাড়া কাদের কাছে বিক্রি করত, কোন মার্কেটে বিক্রি করত, সেটিও তদন্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
ডিবির লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান বলেন, ‘চোরেরা এই মোবাইলগুলো ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সামনে স্টেডিয়াম মার্কেটের ফুটপাথ, গুলিস্তান আন্ডারপাসে হাঁটতে থাকা বিভিন্ন দালালের কাছে ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ সাত হাজার টাকায় দামি এই মোবাইলগুলো বিক্রি করে দেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘দালালরা আবার মোতালেব প্লাজা, উত্তরার মাসকট প্লাজা, মিরপুরের শাহ আলী প্লাজা, চট্টগ্রাম রোডের একাধিক খুপড়ি দোকানে থাকা কম্পিউটারের হাতুড়িয়া প্রোগ্রামের কাছে বিক্রি করে দেয়; যারা চাইনিজ বিভিন্ন সফটওয়্যার দিয়ে আইএমইআই পরিবর্তন করে অন্য রিটেইলার ও হোলসেলারদের কাছে বিক্রি করে দেয়। কখনও কখনও মোবাইলের ডিসপ্লে, ক্যামেরা কেসিং মাদারবোর্ড ব্যাটারি ইত্যাদি আলাদা করে খুচরা যন্ত্র হিসেবে চড়া দামে বিভিন্নজনের কাছে বিক্রি করে থাকে। আইএমইআই চেঞ্জ অথবা খুচরা যন্ত্রাংশে রূপান্তরিত করে মোবাইলগুলোকে বিক্রি করে দেওয়া হয় বলে অধিকাংশ সময়ই চুরি হওয়া, হারিয়ে যাওয়া মোবাইলগুলোকে উদ্ধার করে আর ভুক্তভোগীকে ফেরত দেওয়া সম্ভব হয় না।’