প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ এপ্রিল ২০২৪ ২১:০৩ পিএম
জীবন রক্ষাকারী বিভিন্ন কোম্পানীর ঔষধের বিপরীত নকল ও ভেজাল ঔষধ তৈরী করে সারাদেশে গত ১০ বছর ধরে সরবরাহ করছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। চক্রের সদ্যস্যদের অনেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত ঔষুধ কোম্পানীতে চাকরিরত। চক্রটি ইতোমধ্যে নকল ঔষধ বিক্রি করে হাতিয়ে নিয়েছে শত কোটি টাকা। সম্প্রতি এ চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় তাদের কাছে মজুদ থাকা ২ কোটি টাকা মূল্যের এন্টিবায়োটিকসহ কয়েক কোটি টাকার ভেজাল ও নকল ঔষধ জব্দ করা হয়েছে।
সোমবার (১ এপ্রিল) ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ এক সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান। তিনি বলেন ভেজাল ও নকল ঔষধ তৈরী করে বাজারজাত করার সঙ্গে জড়িত চক্রের ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন শাহীন, শহীদুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম, হৃদয়, হুমায়ুন। এসময় তাদের কাছ থেকে ৪ লাখ ৯৬ হাজার পিস নকল এন্টিবায়োটিক উদ্ধার করা হয়। যার বাজারমূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা। উদ্ধারকৃত নকল এন্টিবায়োটিকগুলো আটা, ময়দা, সুজি ও বিভিন্ন উপাদান দিয়ে তৈরী করা হতো।
তিনি আরও বলেন, চক্রটি গত প্রায় ১০ বছর ধরে এই ভেজাল ওষুধ তৈরি করে আসছিল। তাদের নামে ১৫টি মামলা রয়েছে। তাদের তিনজন আগেও গ্রেপ্তার হয়েছে। জামিনে বেরিয়ে তারা আবারও এই কাজে যুক্ত হয়।
অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ আরও বলেন, শহীদুল বরিশালের কোতয়ালীর নথুল্লাবাদ এলাকায় নকল এন্টিবায়োটিক মজুদ করে শাহিনের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রয় করে আসছিলেন। হুমায়ুন একটি ঔষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানীর বিক্রয়কর্মী হিসেবে চাকুরি করতেন। পাশাপাশি বিভিন্ন ফার্মেসীতে নকল এন্টিবায়োটিক বিক্রয় করতেন। এছাড়াও সিরাজুল এবং হৃদয় নকল ঔষধ বিক্রয়ের যাবতীয় কাজে শহীদুলকে সহায়তা করতেন।
ডিবির মতিঝিল বিভাগের উপ কমিশনাপর রাজিব আল মাসুদ জানান, মুলত কুমিল্লার আবু বকর এসব নকল ঔষদ তৈরি করে শহীদুলকে দিতেন। তিনি সেগুলো বরিশালে গুদামজাত করে পরে অন্যদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাতেন। যেসব ঔষধ কোম্পানি বাংলাদেশে নেই এবং বাজারে যে ঔষধুগুলোর সরবরাহ কম সেগুলোই তারা তৈরি করে বাজারজাত করতো। এছাড়াও তারা বিভিন্ন ব্র্র্যান্ডের ঔষধ নকল করে সেগুলোর ভেতরে আটা, ময়দা ও সুজি দিয়ে তৈরী করতো।
অভিযানের নেতৃত্বে থাকা সহকারী কমিশনার মো: এরশাদুর রহমান জানান, বাজারে না থাকা এমন এন্টেবায়োটিকগুলোকে টার্গেট করতো তারা। এসব নকল এন্টেবায়োটিক তৈরি করা হতো রাজধানীর অদূরে সাভার ও কুমিল্লার দুটি কারাখানা থেকে।