জবি ছাত্রীর অভিযোগ
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০২৪ ১৭:২৬ পিএম
আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৪ ১৯:৩৯ পিএম
বাঁ থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মীম, শিক্ষক আবু শাহেদ ইমন ও চেয়ারম্যান জুনায়েদ আহমেদ হালিম।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মীম, একই বিভাগের শিক্ষক আবু শাহেদ ইমন ও চেয়ারম্যান জুনায়েদ আহমেদ হালিমের বক্তব্য শুনেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। পরে তারা তিনজনই গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তারা পাল্টাপাল্টি মন্তব্য করেছেন।
বুধবার (২০ মার্চ) বিকালে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে উপস্থিত হন তারা তিনজন। ডিবির জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তারা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
এর আগে সোমবার ডিবি কার্যালয়ে অভিযোগ দেন কাজী ফারজানা মীম। তার অভিযোগ– শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ দেওয়ায় হত্যাসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি পাচ্ছেন। এজন্য জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে শিক্ষক আবু শাহেদ ইমন ও বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ আহমেদ হালিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন।
ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আবু সাহেদ ইমন সাংবাদিকদের বলেন, ‘২০১৯ সালে ঘটনার কথা উল্লেখ করে ২০২২ সালে এসে কাল্পনিক অভিযোগ দেয় (মীম)। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করে আন্দোলন হয়েছে। ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের তদন্তের দীর্ঘসূত্রিতার কারণে দুই বছরেও ফলাফল পাওয়া যায়নি। মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদনের ঘটনায় উচ্চ আদালতে যাওয়া ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার বিষয়ে ডিবি আমাদের ডেকেছে। এ বিষয়ে তারা যা জানতে চেয়েছে আমরা সেই তথ্য দিয়েছি।’
জুনায়েদ আহমেদ হালিম বলেন, ‘এখানে দুই ধরনের অভিযোগ রয়েছে। যৌন হয়রানির বিষয়টি নিয়ে আদালতে কার্যক্রম চলছে। এটা নিয়ে কথা বলতে পারছি না।’
মৌখিক পরীক্ষায় মীমকে শূন্য দেওয়া হয়েছে– এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলাফল প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার একটা নিয়ম আছে। পরীক্ষকরা গোপন একটি খামে সিলগালা করে নম্বরপত্র পাঠান। সে (মীম) ঠিকমতো ক্লাসে আসত না। দ্বিতীয় সেমিস্টারের একটি কোর্সে অ্যাসাইনমেন্টে ও উপস্থিতি মিলিয়ে ৪০ নম্বর থাকে। সে (মীম) এইটার কোনো কার্যক্রমে যোগ দেয়নি। ফলে সে শূন্য পেয়েছে। সপ্তম সেমিস্টারেও চারটি অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেয়নি। সব মিলিয়ে ২৩ পেয়েছিল। যেহেতু ৪০ নম্বরে পাস, তাই রেজাল্টশিটে শূন্য এসেছে।’
কাজী ফারজানা মীম বলেন, ‘আমি মিডিয়ায় বক্তব্য দেওয়ার কারণে অভিযুক্ত শিক্ষকরা নানা মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখাচ্ছিলেন। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলাম। এটা নিয়ে ডিবিতে অভিযোগ দিয়েছিলাম। আজ তারা এ বিষয়ে অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে ডেকেছিল। ডিবির প্রধান তাদের বলে দিয়েছেন– যেন আমাকে কোনোভাবে হুমকি না দেন।’
পরীক্ষায় শূন্য পাওয়া নিয়ে বিভাগের চেয়ারম্যানের বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তারা বানোয়াট কথা বলেছেন। আমি পরীক্ষা দিয়েছি। তারা আমাকে অনুপস্থিত দেখিয়েছেন। এ ঘটনা আমার যৌন হয়রানির অভিযোগেও উল্লেখ করেছি।’
পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ বলেন, ‘দুই পক্ষকে আমরা ডেকেছি। মীম আমাদের কাছে বলেছে সে যেন স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারে। কেউ যেন কোনো সমস্যা না করে। আমরা বিষয়টি শিক্ষকদের বলেছি। তারা বলেছে– আমরা কোনো ডিস্টার্ব করব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এরপরও যদি মীমকে কেউ ডিস্টার্ব করে, মীমকে বলা হয়েছে, আমাদের ডিবির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে জানানোর জন্য। তারা ব্যবস্থা নেবে। যৌন হয়রানির অভিযোগ আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত এখনও শেষ হয়নি।’