প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২৪ ২১:১৯ পিএম
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নানা কাজে ঢাকায় আসা অনেকে রাস্তাঘাট ঠিকমতো চেনে না। তাদের কাছে অনেক সময় বিপুল পরিমাণ অর্থ ও মূল্যবান মালপত্র থাকে। এসব মানুষকে টার্গেট করে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে তাদের গ্রেপ্তার ও মামলার ভয় দেখিয়ে সব লুটে নেয়। সম্প্রতি বরগুনা থেকে আসা তিনজনের রিকশা থামিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে এমন তথ্য দিয়েছে পুলিশ।
সোমবার (১১ মার্চ) ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান হারুন-অর-রশীদ বলেন, বরগুনা থেকে বাসে করে এসে গত ৪ মার্চ ভোরে ঢাকায় নামেন কবির হোসেনসহ তিনজন। তারা সৌদি আরবে যাওয়ার জন্য পুরানা পল্টনের একটি এজেন্সিতে মেডিকেল করার কাগজ জমা দিতে আসেন। ঘটনার দিন ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে বাস থেকে নেমে তিনজন সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে রিকশায় করে পল্টনের উদ্দেশে যাত্রা করেন। কিছুদূর যাওয়ার পরে শশী মোহন বসাক লেন এলাকায় নিরিবিলি স্থানে পুলিশ পরিচয়ে রিকশার গতিরোধ করা হয়। কবিরের কাছে থাকা প্রায় ৩৩ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এমনকি ডাকাত সরদার নাহিদ ভুক্তভোগী কবিরের মাথা ধরে সজোরে দেয়ালে আঘাত করেন। এ ঘটনায় কবির বাদী হয়ে ওয়ারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার ছায়া তদন্তে নামে ডিবির ওয়ারী বিভাগ। ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রিকশায় করে ঘুরে ঘুরে ডাকাতি করা এই চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার মনতাজুল ও রতন দায় স্বীকার করে ছয়জনের সম্পৃক্ততার কথা জানিয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। গ্রেপ্তার ডাকাত সরদার নাহিদের বিরুদ্ধে তিনটি ছিনতাই, একটি মাদকসহ পাঁচটি, বাবুলের বিরুদ্ধে পাঁচটি ছিনতাই, দুটি দ্রুত বিচার আইনে ও তিনটি মাদক মামলাসহ ১০টি ও দেলোয়ারের বিরুদ্ধে দুটি ছিনতাই মামলা রয়েছে। তাদের কাছ থেকে ডাকাতি করে নেওয়া টাকা ও ব্যবহৃত দুটি রিকশা উদ্ধার করা হয় বলে জানান গোয়েন্দাপ্রধান হারুন-অর-রশীদ।
তিনি বলেন, রাজধানীর কারওয়ান বাজার, ‘সায়েদাবাদ, গাবতলী, গুলিস্তান, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালসহ আন্তঃজেলা বাস ও লঞ্চে করে ঢাকায় আসা যাত্রীদের টার্গেট করে দীর্ঘদিন ছিনতাই ও ডাকাতি করছিল চক্রটি। কেউ তাদের কাজে বাধা দিলে আঘাত করে সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়। আমরা বলব, ভোরে চলার পথে কেউ ডাক দিলে থামা যাবে না। কেউ ভোরে ঢাকায় এলে টার্মিনালে একটু অপেক্ষা করে বেলা বাড়লে বের হওয়ার অনুরোধ করছি।’ রমজানকে কেন্দ্রে করে ইফতার, সেহরিসহ নির্জন সময়ে এমন ডাকাতি বা ছিনতাই প্রতিরোধে ডিবি পুলিশ মাঠে থাকবে বলে তিনি জানান। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেনÑ ডাকাত দলের সরদার নাহিদ হোসেন ওরফে আনন্দ ও তার সহযোগী মো. বাবুল, মো. দেলোয়ার ওরফে রিপন, মো. মনতাজুল, মো. রতন ইসলাম।