× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

শিশু অপহরণ চক্র গড়েন দম্পতি, ছাড় পায়নি পরিবারের সদস্যরাও

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০২ মার্চ ২০২৪ ১৩:১১ পিএম

আপডেট : ০২ মার্চ ২০২৪ ১৩:৪৮ পিএম

শিশু অপহরণকারী মোস্তফা কামাল ওরফে উজ্জল ওরফে জুয়েল রানা ও তার স্ত্রী প্রমি আক্তার। ফাইল ফটো

শিশু অপহরণকারী মোস্তফা কামাল ওরফে উজ্জল ওরফে জুয়েল রানা ও তার স্ত্রী প্রমি আক্তার। ফাইল ফটো

স্বামী-স্ত্রী মিলে গড়ে তুলেছেন শিশু অপহরণ চক্র। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ফ্ল্যাট বাসায় সাবলেট ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে শিশু অপহরণ করতেন তারা। এমনকি নিজের বড় ভাইয়ের মেয়েকেও অপহরণ করে আদায় করেছেন মোটা অংকের টাকা। সম্প্রতি তাদের গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

শনিবার (২ মার্চ) গোয়েন্দা পুলিশের মিরপুর বিভাগের পল্লবী জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) রাশেদ হাসান তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান।

গ্রেপ্তার দম্পতি হলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার শিমরাইল সাতপাড়া এলাকার বাসিন্দা মোস্তফা কামাল ওরফে উজ্জল ওরফে জুয়েল রানা ও তার স্ত্রী প্রমি আক্তার।

অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার বলেন, ‘২০২৩ সালের ১৮ নভেম্বর রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী এলাকার বায়তুল রাসুল (সাঃ) মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত নামের ৯ বছরের এক শিশুকে অপহরণের ঘটনায় দায়ের করা মামলা তদন্তে নেমে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মিরপুর বিভাগের পল্লবী জোনাল টিম এই দুর্ধর্ষ অপহরণ দম্পতির সন্ধান পায়। তবে শেষ রক্ষা হয়নি তাদের।  গত বছরের ১১ ডিসেম্বর ভাটারা থানার ছোলমাইদ এলাকা থেকে প্রমি আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর দুই মাস পর ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় অভিযান চালিয়ে মোস্তফা কামালকে গ্রেপ্তার করা হয়।’

রাশেদ হাসান বলেন, ‘অপহরণ চক্রের মাস্টারমাইন্ড মোস্তফা কামাল ও তার স্ত্রী প্রমি মিলে দীর্ঘদিন ধরে অপহরণ করে আসছে। তারা বিভিন্নভাবে মানুষের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে আবার কখনও ফ্ল্যাট বাসায় সাবলেট হিসেবে উঠে টার্গেটকৃত শিশুদের অপহরণ করে। এমনকি তাদের অপহরণের তালিকায় পরিবারের সদস্যরাও আছে। তারা দুজনে মিলে প্রমির বড় ভাইয়ের মেয়েকে অপহরণ করেছে। সেই মেয়েকে জিম্মি করে দুই লাখ টাকা আদায় করেছে। এ ছাড়া মোস্তফার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগও রয়েছে।’

ইয়াসিনকে অপহরণের ঘটনার বিষয়ে এডিসি রাশেদ বলেন, ‘মিরপুরে পল্লবী থানার সেকশন ৭ নম্বর এলাকায় ইয়াসিনের পরিবার একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকে। এ ঘটনার পাঁচ মাস আগে মোস্তফা কামাল ও প্রমি সাবলেট ভাড়ায় ওঠে। তারা আগে থেকে টার্গেট করে বাসা ভাড়া নেয়। এ সময় পরিবারটির সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলে। গত বছরের ২৮ নভেম্বর খেলনা কিনে দেওয়ার কথা বলে শিশু ইয়াসিন আরাফাতকে অপহরণ করে। এরপর রাজধানীর ভাটারা, বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন এলাকায় স্থান পরিবর্তন করে। অপহরণের পুরো প্রক্রিয়ায় মোস্তফাকে সহযোগিতা করে তার স্ত্রী প্রমি। অপহরণের পর তারা ভাটারা এলাকার একটি বস্তিতে বাসা ভাড়া নিয়ে অবস্থান করছিল। এ সময় নানা কৌশলে শিশুটিকে তাদের সঙ্গে রাখে। আর অন্যদিকে শিশু ইয়াসিনের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে হুমকি দিয়ে ১ লাখ ১৭ হাজার টাকা আদায় করে। তবে টাকা আদায় করলেও শিশু ইয়াসিনকে ফেরত দেয়নি অপহরণকারীরা।’

রাশেদ হাসান আরও বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার করতে মাঠে নামে গোয়েন্দা পুলিশ। তবে বারবার স্থান পরিবর্তন করায় তাকে গ্রেপ্তার করতে বেগ পেতে হচ্ছিল। এমনকি গোয়েন্দা পুলিশের তৎপরতা টের পেয়ে রাস্তায় শিশুটিকে ফেলে পালিয়ে যায়। তবে শিশুটিকে উদ্ধার করলেও আমরা থামিনি। দীর্ঘদিন এই চক্রের পেছনে লেগে ছিলাম।’

এই দম্পতিকে ধরতে বেশ কিছু অভিযান পরিচালনা করতে হয়েছে জানিয়ে রাশেদ হাসান বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ভাটারা থানার নর্দার নাসিরটেক এলাকায় অভিযান চালানো হয়। কিন্তু স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে সটকে পড়ে মোস্তফা কামাল। পরে কুমিল্লার উদ্দেশে পালানোর সময় সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড ও মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের যাত্রাবাড়ী টোল প্লাজা অভিযান চালানো হয়। তখনও পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে যাত্রা বাতিল করে। গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ১১ ডিসেম্বর ভাটারা থানার ছোলমাইদ এলাকায় অভিযান চালায় গোয়েন্দারা। সেবার মোস্তফার স্ত্রী প্রমি গ্রেপ্তার হলেও পালাতে সক্ষম হয় মোস্তফা। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা থানার শিমরাইল সাতপাড়া এলাকায় ভোর রাতে অভিযান চালিয়ে মোস্তফা কামালকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।’

মোস্তফার বরাত দিয়ে এডিসি রাশেদ বলেন, ‘প্রযুক্তিগত নানা বিষয়ে দক্ষ মোস্তফা একটি ফোন ও সিম একবারের বেশি ব্যবহার করে না। আর বারবার স্থান পরিবর্তন করে। ফলে অপহরণের পর তাকে গ্রেপ্তারে বারবার অভিযান চালিয়েও ব্যর্থ হতে হয়েছে। তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ সিম উদ্ধার করা হয়েছে। যা সবই বেনামি। এ ছাড়া তাদের দুজনের জাতীয় পরিচয়পত্রও ভুয়া। সার্ভারে না থাকলেও তারা অন্যের তথ্য ব্যবহার করে কম্পিউটারের দোকান থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র বানিয়ে ব্যবহার করে আসছিল।’

তিনি বলেন, ‘এই স্বামী-স্ত্রীর পেশা অপহরণ করা। যদিও মোস্তফার দাবি একসময় ব্যবসা করত। তবে আমরা এমন কোনো প্রমাণ পাইনি। দুজনের বিরুদ্ধে একাধিক অপহরণ মামলা রয়েছে। মোস্তফার বিরুদ্ধে পবিত্র কুরআন ছিঁড়ে রাস্তায় ফেলে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হলেও তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে গ্রেপ্তার করতে বেগ পেতে হয়। এমনকি সে কয়েকটি সংস্থাকে ওপেন চ্যালেঞ্জ করেছিল। যদিও পরে একটি সংস্থার হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিল।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা