বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:০৭ পিএম
আপডেট : ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:৪৭ পিএম
ক্র্যাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ আলী মিয়া। প্রবা ফটো
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির ঘটনায় দেশে ও যুক্তরাষ্ট্রে করা মামলার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানিয়েছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ আলী মিয়া। তিনি বলেছেন, ব্যাংকের পক্ষে দেশে করা মামলাটির তদন্ত শেষ পর্যায়ে। তদন্তে রিজার্ভ চুরির ঘটনায় অবহেলা ও প্রযুক্তিগত দুর্বলতা পেয়েছে সিআইডি। যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে করা মামলা বিচারিক পর্যায়ে আছে, শুনানি শেষ হয়েছে।
সোমবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি সদর দপ্তরে এক মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের এসব জানান সিআইডিপ্রধান। বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে সুইফট কোডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮১ মিলিয়ন বা ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সরিয়ে নেয় একদল হ্যাকার। ১৫ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং ডিপার্টমেন্টের উপপরিচালক জোবায়ের বিন হুদা অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করছে সিআইডি।
অর্থ পাচারের মামলায় অগ্রগতি কতদূর– সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিআইডিপ্রধান মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘তদন্ত মোটামুটি অলমোস্ট ভালো পজিশনে আছে, শেষ পর্যায়ে। যেটা পেয়েছি– নেগলেজেন্সি আছে, টেকনিক্যালি সাইন্ড না।’
চুরি যাওয়া ১০১ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকের চারটি অ্যাকাউন্টে ৮১ মিলিয়ন ডলার এবং শ্রীলঙ্কার একটি ব্যাংকে ২০ মিলিয়ন ডলার সরিয়ে নেয় হ্যাকার দল। তবে স্থানান্তর শেষ মুহূর্তে শ্রীলঙ্কায় পাঠানো অর্থ আটকে যায়। তা ফেরত পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পরে ফিলিপাইন থেকে আরও প্রায় ১৫ মিলিয়ন ডলার পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাকি ৬৬ মিলিয়ন ডলার উদ্ধারের চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ প্রসঙ্গে সিআইডিপ্রধান বলেন, ‘এ সংক্রান্ত একটি মামলা নিউইয়র্কে হয়েছে। বিচারক ইতোমধ্যে শুনানি শেষ করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের মামলার অভিযোগপত্র দিলে কি ওই দেশ থেকে আসামি ধরে আনতে পারব? ইন্টারপোলের সাপোর্ট ছাড়া তো আমরা আসামি ধরে আনতে পারব না। আমরা যেটা চাইব– ফান্ডটা কীভাবে ফিরিয়ে আনা যায়।’
ক্র্যাবের নতুন কমিটির সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়ে সিআইডিপ্রধান মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘পুলিশ-সাংবাদিক একে-অপরের পরিপূরক। উভয়ের সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে যেকোনো অপরাধের রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব।’
এ সময় জিআইজি মাইনুল হাসান, অতিরিক্ত ডিআইজি খোন্দকার রফিকুল ইসলাম, কামরুল আহসান, বিশেষ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মিনহাজুল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং ক্র্যাবের সভাপতি কামরুজ্জামান খান, সহসভাপতি শাহীন আবুদল বারী, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিপন দেওয়ান, সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম রাজী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।