প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ জুন ২০২৩ ১৬:০১ পিএম
আপডেট : ১৩ জুন ২০২৩ ১৬:১৬ পিএম
পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার মো. শহীদুল ইসলাম। প্রবা ফটো
ঢাকার কেরানীগঞ্জের কোনাখোলা এলাকা থেকে অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় মো. শহীদুল ইসলাম (৩৮) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে নিহত নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে ঘাতক শহীদুল। কিন্তু হঠাৎ করে বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় তাকে কেরানীগঞ্জ নিয়ে ধর্ষণের পর খুন করে পালিয়ে যান তিনি।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) দুপুরে ঢাকার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আসাদুজ্জামান।
তিনি জানান, ১১ জুন রাতে ৯৯৯-এর কলে অজ্ঞাত এক নারীর গলায় ওড়না প্যাঁচানো মরদেহ উদ্ধার করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় কেরানীগঞ্জ থানার পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে এক অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। পরে সিআইডির ক্রাইম সিনের সহায়তায় ভুক্তভোগী নারীর পরিচয় শনাক্ত করা হয়।
জানা যায়, সালমা বেগম (৩৭) নামের ওই নারী খুলনা সদরের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তদন্তের একপর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে ঘাতক শহীদুল ইসলামের (৩৮) সন্ধান পায় পুলিশ। সোমবার দিবাগত মধ্যরাতে নারায়ণগঞ্জের পশ্চিম মাসদাইর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান বলেন, নিহত সালমার সঙ্গে ঘাতক শহীদুলের সাত থেকে আট বছরের পরকীয়া ছিল। হত্যার এক দিন আগে সালমা খুলনা থেকে শহীদুলের বরিশালের হিজলা এলাকার গ্রামের বাড়িতে যায়। সেখানে গিয়ে জানতে পারে, শহীদুল বিবাহিত। এ ঘটনায় সালমা তাৎক্ষণিকভাবে শহীদুলকে ফোন করে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে তাকে বিয়ে করার জন্য চাপ দেয়।
সালমা নিজেরও এর আগে এক বিয়ে হয়েছিল। তার নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া একটি মেয়ে আছে। গ্রামের বাড়িতে গিয়ে ঝামেলা করায় শহীদুল কৌশলে সালমাকে ঢাকায় আসতে বলে। ঢাকায় ১১ জুন বিকাল ৫টার দিকে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় দেখা করে। পরে রাত ১০টার দিকে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে হত্যার উদ্দেশ্যে সালমাকে কেরানীগঞ্জের কোনাবাড়ি এলাকায় নিয়ে যায় শহীদুল।
সেখানে শহীদুল জঙ্গলের ভেতর নিয়ে প্রথমে সালমাকে ধর্ষণ করে। পরে ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করা হয়। মরদেহ যাতে শনাক্ত করা না যায় সেজন্য পাশে থাকা ইটের টুকরা দিয়ে মুখ থেঁতলে দিয়ে চেহারা বিকৃত করে শহীদুল পালিয়ে যায়।
পুলিশ সুপার জানান, হত্যাকাণ্ডের পর শহীদুল বারবার তার অবস্থান পরিবর্তন করে আসছিল। গ্রেপ্তার এড়াতে বিভিন্ন স্থানে সে পালিয়ে বেড়াত। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় কেরানীগঞ্জ থানার একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।