× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

চকরিয়ায় উজাড় হচ্ছে বন, সাবাড় হচ্ছে পাহাড়

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৩ ১৩:২৮ পিএম

কক্সবাজারের চকরিয়ায় বিস্তৃত বনভূমি পরিণত হয়েছে বিরানভূমিতে। প্রবা ফটো

কক্সবাজারের চকরিয়ায় বিস্তৃত বনভূমি পরিণত হয়েছে বিরানভূমিতে। প্রবা ফটো

কক্সবাজারের চকরিয়ায় বিস্তৃত বনভূমির বেশিরভাগই বৃক্ষশূন্য বিরানভূমিতে পরিণত হয়েছে। অন্তত ১০০ পাহাড় কেটে বালি ও মাটি বিক্রি করা হয়েছে।

একসময় বন্য প্রাণীর ভয়ে যে বনে ঢুকতে গা ছমছম করত, সেই বন এখন দেখতে ন্যাড়া মাথার মতো হয়েছে। একেকটি পাহাড় যেন মানুষের হিংস্র থাবার ক্ষতের জানান দিচ্ছে। পাহাড় কেটে মাটি ও বালি সরিয়ে নেওয়ার পর সেখানে গড়ে উঠছে বসতি। এমনকি দোকানপাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।

ভৌগোলিক দিক দিয়ে বৈচিত্র্যময় চকরিয়ার পশ্চিমে সাগর, উত্তরে পেকুয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বিশাল বনভূমি। বন বিভাগের এক বছর আগের তথ্য অনুযায়ী, কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের অধীনে পাঁচটি বিটের আওতায় মোট বনভূমির পরিমাণ ১৩ হাজার ৪৪৪ একর। এর মধ্যে ১ হাজার ৯৪৮ জনের দখলে ৫৫৪ দশমিক ৮১ একর বনভূমি।

গত এক বছরে যে হারে বন বিভাগের পাহাড় সাবাড় ও দখল হয়েছে, তা নিরূপণ করলে বেদখলের পরিমাণ বন বিভাগের তথ্যের চেয়ে অন্তত দিগুণ বেশি হবে বলে এলাকাবাসীর দাবি। অনুরূপভাবে চট্টগ্রাম দক্ষিণের তিনটি বিট ও মাতামুহুরী বিটের বনভূমিরও বেশিরভাগ বেদখল হয়ে গেছে।

সরেজমিন জানা গেছে, চকরিয়া উপজেলার সংরক্ষিত বনভূমির ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের অধীন সব বিটেরই বন উজাড় হয়েছে ব্যাপক পরিসরে। কাকারা, ডুলাহাজারা, ফাঁসিয়াখালী, মানিকপুর, নলবিলা বিটের বেশিরভাগ বন ন্যাড়া পাহাড়ে পরিণত হয়েছে। শত শত ঘরবাড়ি তৈরি হয়েছে গত কয়েক বছরে।

পরিবেশ সচেতন স্থানীয় লোকজন জানান, টাকা পেলে বন কর্মকর্তারা চোখে টিনের চশমা পরেন। গাছ কাটার খবর দিলেও চুপচাপ থাকতে দেখা যায় তাদের। নাকের ডগায় সব ঘটলেও তারা যেন বধির, অন্ধ। অভিযোগ রয়েছে, বন কর্মকর্তারা হাতেগোনা কয়েকটি মামলা করলেও তাতে প্রভাবশালীদের আসামি করা হয় না।

মামলায় ভয় নেই আসামিদের

বনাঞ্চলের গাছ বিক্রি যাদের ব্যবসা, তারা নিয়মিতই গাছ কাটে। তাদের বিরুদ্ধে বন বিভাগ মামলা করে। এতে মামলার সংখ্যা বেড়েই চলেছে। কিন্তু আসামিদের কিছু যায়-আসে না। বনখেকোরা দম্ভোক্তি করে বলে বেড়ান, গাছ বিক্রি করে তাদের যা আয় হয়, তা থেকে নগণ্য কিছু খরচ করলে তারা সহজেই জামিন পেয়ে যান। ফলে মামলা যেন তাদের কাছে ছেলেখেলা ছাড়া কিছু না। এতে তারা দিন দিন দুঃসাহসী হচ্ছেন।

গত এক মাসে বন বিভাগের কর্মীদের ওপর গুলি চালানো, অপহরণসহ বেশ কয়েকটি ঘটনা তারই জানান দিচ্ছে। গত ৫ মে বনদস্যুদের গুলিতে ডুলাহাজারা বিটের মালুমঘাট পূর্ব ডুমখালী রিজার্ভ পাড়ায় চার বনকর্মী আহত হয়। ১২ মে কাকারা বিটে চার বনকর্মীকে অপহরণ করে মারধর ও গাছ লুটের ঘটনা ঘটে। এর আগে কাকারার পাহাড়তলীতে ঘটে গোলাগুলির ঘটনা।

কাকারা বিটের বন কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বলেন, ‘আমাদের জনবল সংকট রয়েছে। তবু থেমে থাকি না। বনরক্ষা করতে গিয়ে পাহাড়তলীতে গোলাগুলি, সাইনবোর্ড, পাহাড়ে অপহরণের পর জিম্মি করে মারধর করা হয়েছে আমাদের লোকজনকে। আমি এই বিটে গত ১২ ডিসেম্বর যোগদানের পর থেকে থানা ও বন আদালতে ১৬টি মামলা করেছি।’

ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মেহরাজ উদ্দীন বলেন, ‘আমি কিছুদিন ধরে প্রশিক্ষণে রয়েছি। দায়িত্বে থাকাকালে গভীর রাতেও গাছ কাটা ও নিধনের খবর পেলেই ঝুঁকি নিয়ে ছুটে গিয়েছি। বেশ কয়েকবার কাটা গাছ জব্দ করেছি। বনখেকোদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে গিয়ে প্রভাবশালীদের হুমকির শিকারও হয়েছি। তবু দায়িত্বে অবহেলা করিনি।’

ফুলছড়ির সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) শীতল পাল বলেন, ‘আমি কয়েক মাস আগে এ স্টেশনে যোগ দিয়েছি। বনরক্ষায় স্টাফদের নির্দেশনা দিচ্ছি নিয়মিত।’ দখল-বেদখলের তথ্য জানার চেষ্টা করলেও চার দিনেও তিনি তথ্য দিতে পারেননি।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান বলেন, ‘পাহাড় কাটার সংবাদ পাওয়া মাত্রই আমি বা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাহাত উজ জামান ছুটে যাই। কয়েকবার একসঙ্গেও গিয়েছি আমরা। অভিযানে এর পূর্বে এক্সকাভেটরসহ পাহাড় ও মাটি কাটার বেশকিছু সরঞ্জাম জব্দ করেছি।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: protidinerbangladesh.pb@gmail.com

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: pbad2022@gmail.com

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: pbonlinead@gmail.com

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: pbcirculation@gmail.com

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা