সিঙ্গাইর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২২:১০ পিএম
সিঙ্গাইর উপজেলার জামির্ত্তা ইউনিয়নে অবস্থিত রিসোর্টটি বন্ধের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। ছবি : প্রবা
মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে ‘সায়ান রিসোর্ট’ নামের এক অবকাশ কেন্দ্রে নারী, মাদকের কারবারসহ নানা অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছে।
সিঙ্গাইর উপজেলার জামির্ত্তা ইউনিয়নের জামির্ত্তা এলাকার প্রকৌশলী ড. ইউনুসের মালিকানাধীন রিসোর্টটি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
এদিকে রিসোর্টের বিরুদ্ধে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ পেয়ে গতকাল রবিবার গণমাধ্যমকর্মীরা সরেজমিন সংবাদ সংগ্রহের জন্য গেলে তাদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন রিসোর্টের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ঘটনার ছবি ও ভিডিও ফুটেজ নিতে গেলেও তারা বাধা দেন। এক পর্যায়ে মোবাইল ফোনে ধারণ করা ছবি ও ভিডিও মুছে ফেলতে সাংবাদিকদের বাধ্য করা হয়।
নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সায়ান রিসোর্টের আবাসিক কক্ষে নারী, মাদক সেবনসহ নানা ধরনের অসামাজিক ও অনৈতিক কার্যকলাপ চলে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত। আশপাশ এলাকার মানুষের রাতের ঘুম হারাম করে রিসোর্টের অভ্যন্তরে গভীর রাত পর্যন্ত চলে সাউন্ড বক্সে উচ্চ স্বরে গানবাজনা।
রিসোর্সটি বন্ধের জন্য স্থানীয় সচেতন মহল প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
সম্প্রতি সায়ান রিসোর্টে এক তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে গত ২০ ফেব্রুয়ারি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্ত সালমান তারিক ভুক্তভোগী তরুণীকে বিয়ের প্রলোভনে গত বছরের ১১ আগস্ট রাতে সায়ান রিসোর্টে নিয়ে ধর্ষণ করেন। সালমান উপজেলার গোবিন্দল (ধাইরাপাড়া) গ্রামের আলী আকবরের ছেলে।
আম্মার মোহাম্মদ লিটন নামে স্থানীয় এক যুবক বলেন, ‘বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমলে প্রভাবশালী নেতাদের ছত্রছায়ায় অসৎ উদ্দেশ্যে এখানে রিসোর্টটি গড়ে তোলা হয়। আ শুরু থেকেই রিসোর্টে বিনোদন ও অবকাশ যাপনের অন্তরালে চলছে মাদকের কারবার ও সেবনসহ নানা অনৈতিক ও অসামাজিক কার্যকলাপ। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি, দ্রুত প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করা হোক।’
স্থানীয় তারিকুর ইসলাম আলাল বলেন, ‘রিসোর্টের আবাসিক হোটেলে অভিযান পরিচালনা করা উচিত। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এখানে মাদক সেবনসহ নানামুখী অনৈতিক কার্যকলাপ কিভাবে চলে আসছে সেটি আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না। ওই রিসোর্টের সাউন্ড বক্সের আওয়াজে আশপাশের লোকজন রাতে ঘুমাতে পারে না।’
এ ব্যাপারে সায়ান রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান সাইফ বলেন, ‘সাংবাদিকদের সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। রিসোর্টে নারী ও মাদকের বিষয়টি সত্য নয়। আর রিসোর্টে ধর্ষণের ঘটনাটিও সত্য নয়। কারণ ওই সময় আমাদের রিসোর্সটি বন্ধ ছিলো।’
সিঙ্গাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান সোহাগ বলেন, ‘রিসোর্টে অসামাজিক কার্যকলাপ হয়ে থাকলে অবশ্যই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে দেখবো।’