প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:৫৭ পিএম
আপডেট : ২৯ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:৫৬ পিএম
সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। ফাইল ফটো
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটির এনফোর্সমেন্ট টিমের সহকারী পরিচালক নওশাদ আলীর নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট ঠিকানায় অভিযানে গিয়ে ফাউন্ডেশনের অস্তিত্ব মেলেনি।
কর মওকুফসহ বিভিন্ন আর্থিক অনিয়মের নথি সংগ্রহ করতে এই অভিযান চালানো হয়েছে।
দুদকের উপ-পরিচালক আকতারুল ইসলাম বুধবার (২৯ জানুয়ারি) জানান, দুদকের সহকারী পরিচালক নওশাদ আলীর নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি এনফোর্সমেন্ট টিম জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও সমাজ সেবা অধিদপ্তরের দেওয়া ঠিকানা ধরে সূচনা ফাউন্ডেশনের ধানমন্ডি অফিসে অভিযান চালায়। কিন্তু সেখানে গিয়ে সূচনা ফাউন্ডেশনের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
হাসিনা-কন্যা পুতুল বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক। তার বিষয়ে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগের অনুসন্ধান চালাচ্ছে দুদক। ইতোমধ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে পুতুলের বিরুদ্ধে একটি মামলাও করেছে দুদক। একই অভিযোগে শেখ হাসিনা, তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়, হাসিনার বোন শেখ রেহানা ও তার তিন সন্তানের নামে পৃথক ছয়টি মামলা করা হয়েছে।
স্বেচ্ছাসেবী ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ২০১৪ সালে গড়ে ওঠা সূচনা ফাউন্ডেশন মানসিক প্রতিবন্ধিতা, স্নায়বিক প্রতিবন্ধিতা, অটিজম এবং মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাযুক্ত ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করে। সায়মা ওয়াজেদ এটির প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন ছিলেন।
আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) গত নভেম্বরে এই ফাউন্ডেশনের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশনা দিয়ে দেশের বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠায়।
দুদক বলছে, পুতুল ‘সূচনা ফাউন্ডেশ’ নামের ওই প্রতিষ্ঠান খুলে বিভিন্ন সামাজিক ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে জোরপূর্বক উপঢৌকন নেওয়ার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেন। তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওপর অবৈধ প্রভাব বিস্তার করে ফাউন্ডেশনের নামে পাওয়া অর্থ করমুক্ত করিয়ে নেন। আর তাতে সরকারের বিপুল অর্থের ক্ষতি হয়েছে।
পুতুলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে দুদকের নথিতে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য বিভাগের আওতায় অটিস্টিক সেলকে ব্যবহার করে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে পুতুল রাষ্ট্রের বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হয়েছেন।
ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিতে লেখাপড়া করা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল যুক্তরাষ্ট্রে স্কুল সাইকোলজিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন। তার মা শেখ হাসিনা তাকে অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার বিষয়ক বাংলাদেশ জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসনের দায়িত্ব দেন। পরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টা প্যানেলেরও সদস্য করা হয় তাকে।