প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ অক্টোবর ২০২৪ ২৩:৫৪ পিএম
আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০২৪ ০০:৩৪ এএম
ফ্ল্যাটের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্বে রাজধানীর হাতিরঝিলে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দীপ্ত টিভির সম্প্রচার কর্মকর্তা তানজিল জাহান ইসলাম ওরফে তামিম হত্যায় নিজের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলম রবি। একই সঙ্গে তিনি যাচাই-বাছাই করে সঠিক এবং সত্য সংবাদ পরিবেশন করতে গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
রবিবার (১৩ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে রবি বলেন, ঘটনার পেছনে কোনো সন্ত্রাসী কার্যকলাপ কিংবা রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার, কোনো রকমের দখলদারত্ব কিংবা আমার কোনো অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না। তামিমের দুঃখজনক মৃত্যুর কারণে প্রচারমাধ্যমে ঘটনাটি ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হলেও প্রকৃতপক্ষে এটি ছিল নিছক একটি অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু। আমি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় দলটি সম্পর্কে জনমনে বিরূপ ধারণা দেওয়ার সুগভীর চক্রান্তের অংশ হিসেবেই অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
নিচে তার বক্তব্য হুবহু তুলে ধরা হলো—
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায় একটি চরম অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু ও ধারণাপ্রসুত প্রকাশিত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে আমার বক্তব্য--
আমি শেখ রবিউল আলম। দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের একজন কর্মী থেকে যাত্রা শুরু করে বর্তমানে আমি বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটি সদস্য। রাজনীতির পাশাপাশি আমি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। আমি বর্তমানে প্লিজেন্ট প্রপার্টি নামের একটি সুপ্রতিষ্ঠিত আবাসন প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবেও কর্মরত। আমার প্রতিষ্ঠানটি রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) এর তালিকাভুক্ত সদস্য। সকল নিয়মনীতি মেনেই আমি বিগত ২০ বছর ধরে সুনামের সঙ্গে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। আমার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আমি অনেকগুলো আবাসন প্রকল্প নির্মাণ করেছি। অতীতে কখনোই কোনো আবাসন প্রকল্পে বড় ধরনের কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি।
তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে গত ১০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার আমার প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে নির্মিত রাজধানীর হাতিরঝিল থানাধীন মহানগর প্রকল্পে একটি ফ্ল্যাটের মালিকানা নিয়ে চরম অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা ঘটে। একটি ফ্ল্যাটের অর্ধেকাংশের মালিকানা নিয়ে গত তিন বছর ধরে চলা অমীমাংসিত ঘটনার সূত্র ধরে তানজিল ইসলাম তামিম নামের একজন অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে মৃত্যুবরণ করে।
হাতিরঝিল থানাধীন মহানগর প্রজেক্টে যেই জমির ওপর আবাসন প্রকল্পটি নির্মাণ করা হয় ওই জমির মালিক মোট তিনজন। আমার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জমির মালিকদের চুক্তির পর যথানিয়মে ভবন নির্মাণ করে তিন বছর আগেই জমির মালিক ও ফ্ল্যাট ক্রেতাদের সকল ফ্লাট যথারীতি হস্তান্তর করে দেয়া হয়। জমির তিনজন মালিকের মধ্যে ২ জন যথাক্রমে জনাব মোজাম্মেল হক কবির এবং খুরশিদা আহমেদ স্বেচ্ছায় চুক্তির ৯/সি এর পরিবর্তে ১/সি এবং ৭/সি এর পরিবর্তে ২/এ ফ্ল্যাট পরিবর্তন করে নেন। সংশ্লিষ্টদের সম্মতি অনুযায়ী আমার কোম্পানি যথানিয়মে ফ্ল্যাট বিক্রি করে।
জমির তিনজন মালিকের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী প্রত্যেক জমির মালিক সাড়ে চারটা ফ্ল্যাট পাবেন। চুক্তি অনুযায়ী আরো অর্ধেক ফ্ল্যাট কোম্পানির কাছ থেকে ক্রয় করে প্রত্যেকে পাঁচটি করে ফ্ল্যাটের মালিকানা ভোগ করবেন। চুক্তি অনুসারে ৩ জনের মধ্যে ২ জন যথাক্রমে জনাব মোজাম্মেল হক কবির এবং আয়েশা আক্তার তাদের প্রাপ্ত সাড়ে চারটি ফ্ল্যাটের সঙ্গে আমার কোম্পানির কাছ থেকে আরো অর্ধাংশ ফ্ল্যাট কিনে নিয়ে তারা প্রত্যেকে পাঁচটি করে ফ্ল্যাট বুঝে নিয়ে দীর্ঘ ৩ বছর যাবৎ ভোগ দখল করছেন। কিন্তু জমির আরও একজন মালিক জনাবা খুরশিদা আহমেদ তাঁর সাড়ে চারটি ফ্ল্যাটের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী আরও অর্ধাংশ ফ্ল্যাট না কিনেই মোট পাঁচটি ফ্লাট দীর্ঘ তিন বছর যাবৎ জবরদখল করে ভোগ করে আসছেন।
এ ব্যাপারে কোম্পানির পক্ষ থেকে যথানিয়মে জনাবা খুরশিদা আহমেদকে একাধিকবার কোম্পানির মালিকানাধীন ফ্ল্যাটের অর্ধাংশের মূল্য পরিশোধ অথবা ফ্ল্যাটের অর্ধাংশ ছেড়ে দেয়ার জন্য বিভিন্ন সময়ে তাগাদা দেয়া হয়। কিন্তু জনাবা খুরশিদা আহমেদ ফ্ল্যাটের অর্ধাংশ ছেড়ে না দিয়ে কিংবা মূল্য পরিশোধ না করেই বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রভাব খাটিয়ে স্থানীয় মহানগর সোসাইটি, পুলিশের ডিবি হেডকোয়ার্টার্স এবং পুলিশের ডিসি তেজগাঁও এর কার্যালয়ে সালিশ বিচার বসান। প্রভাব খাটিয়ে কোম্পানির প্রতিনিধিদেরকে সালিশ বিচারে বসতে বাধ্য করেন। আমার কোম্পানির প্রতিনিধিরা সালিশ বিচারের মীমাংসা মেনে নিলেও খুরশিদা আহমেদ নিজেই সালিশ বিচারের সিদ্ধান্ত অমান্য করেন।
গত ১০ অক্টোবরের অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা প্রায় এক মাস আগে জনাবা খুরশিদা আহমেদের প্রতিনিধি হিসেবে তাঁর স্বামী জনাব সুলতান আহমেদ আমাদের আবাসন প্রতিষ্ঠান প্লিজেন্ট প্রপার্টির কার্যালয়ে আসেন। তিনি জানান যে, ৭/বি (যৌথ মালিকানাধীন) ফ্ল্যাটের অর্ধাংশ তিনি ক্রয় করবেন না। তিনি ফ্ল্যাটের অর্ধাংশ কোম্পানিকে বুঝিয়ে দেবেন। (জনাব সুলতান আহমেদ আমার অফিসে এসে ফ্ল্যাটের অর্ধেকাংশ ফেরত দেয়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার সাক্ষ্যপ্রমাণ রয়েছে)। জনাব সুলতান আহমেদ ফ্ল্যাটের অর্ধেকাংশ ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত জানানোর কারণে কোম্পানি ৭/বি ফ্ল্যাটের ওই অর্ধেকাংশ পাশের ফ্ল্যাট মালিক জনাব ফজলুর রহমানের কাছে বিক্রয় করতে চুক্তিবদ্ধ হয়। তবে চুক্তি অনুযায়ী জনাব ফজলুর রহমান ফ্ল্যাটের অর্ধাংশের মালিকানা চাইলেও খুরশিদা আহমেদ অর্ধেকাংশের মালিকানা হস্তান্তর না করে গড়িমসি করতে থাকেন। এমন পরিস্থিতিতে গত ১০ অক্টোবর কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল লতিফ দুইজন সহকারীসহ অফিসের দায়িত্ব হিসেবে ফ্ল্যাটের অর্ধেকাংশের ক্রেতা জনাব ফজলুর রহমানকে ফ্ল্যাটের অর্ধাংশ বুঝিয়ে দিতে হাতিরঝিল মহানগর প্রকল্পে যান। এ সময় কোম্পানির কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফ্ল্যাটের অর্ধাংশের ক্রেতা ফজলুর রহমান, তার দুই ছেলে এবং তাদের মেয়ের জামাই মামুনও উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, কোম্পানির বিদ্যমান নিয়মানুযায়ী ফ্ল্যাটের অর্ধেকাংশের মালিকানা মালিকের কাছে বুঝিয়ে দেয়া ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দায়িত্ব। আমি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং দুইজন সহকারী ঐদিন কখন মহানগর প্রকল্পে গিয়েছেন আমি সে ব্যাপারে অবগত ছিলাম না। কারণ, আবাসন প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা যথানিয়মে যার যার বিভাগের নির্ধারিত দায়িত্ব তারা নিজ উদ্যোগেই পালন করে থাকেন। এ কারণেই ওইদিন হাতিরঝিলে মহানগর প্রকল্পে যাওয়ার কথা আমাকে জানানোরও প্রয়োজন ছিল না।
তবে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর ঘটনা সম্পর্কে আমি অবগত হই। আমি জানতে পারি, কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল লতিফ এবং ফ্ল্যাটের অর্ধেকাংশের মালিক ফজলুর রহমানসহ সংশ্লিষ্টরা উক্ত ভবনে যাওয়ার পর ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল লতিফ দেখতে পান খুরশিদা আহমেদের লোকজন ফ্ল্যাটের অর্ধেকাংশের মালিকানা বুঝিয়ে না দিয়ে বরং ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে পুরো ফ্ল্যাটে ডেকোরেশনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে জানার জন্য তাদেরকে ডাকা হলেও তারা দরজা খুলেননি। একপর্যায়ে ফ্ল্যাটের দরজা খোলার পর ফ্ল্যাটের অর্ধাংশের ক্রেতা ফজলুর রহমান, তার দুই ছেলে ও মেয়ের জামাই মামুন এবং কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল লতিফ এবং দুই সহকারীর সঙ্গে খুরশিদা আহমেদের দুই ছেলে, স্বামী এবং তাদের ফ্ল্যাটে উপস্থিত লোকজনের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা, ধাক্কাধাক্কি, হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে।
ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই ফোন পেয়ে হাতিরঝিল থানার দায়িত্বরত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। তারা ঘটনাস্থল থেকেই তাৎক্ষণিক তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজখবর নিতে থাকেন। ঘটনার ব্যাপারে পুলিশ খুরশিদা আহমেদের পরিবারের অন্য সদস্যের সঙ্গে উপস্থিত তানজিল ইসলাম তামিমের সঙ্গেও বেশ কিছু সময় কথা বলেন। তামিম পুলিশের কাছে ঘটনার বর্ণনা দেন। এর একপর্যায়ে তামিম অসুস্থ বোধ করলে তাকে সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় মনোয়ারা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তানজিল ইসলাম তামিম মৃত্যুবরণ করেন।
আমার জানা মতে, প্রয়াত তানজিল ইসলাম তামিমের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। তবে এখনো ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তৈরি হয়নি। তামিমের চরম অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং প্লিজেন্ট প্রপার্টিজ লিমিটেড তামিমের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুতে শোকাহত। ওইদিনের ওই দুর্ঘটনার সময় আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম না। ঘটনার আগেও বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছিলাম না। তামিমের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা এজাহারেও ঘটনাস্থলে আমার উপস্থিতির কথা উল্লেখ নেই। থানায় গৃহীত এজাহারে, ফ্ল্যাটের ক্রেতা ফজলুর রহমান এবং তার ছয় সহযোগীর নাম, কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার লতিফসহ দুই সহযোগীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়াও মামলার এজাহারে আমার নাম এবং এই জমির তিনজন মালিকের অন্যতম জনাব মোজাম্মেল কবিরের নামও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, তামিমের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর কারণে এই ঘটনাটিকে প্রচারমাধ্যমে 'দখলদারিত্ব' হিসেবে প্রচারের চেষ্টা করা হলেও এটি কোনো 'দখলদারির' বিষয় ছিল না। এটি যদি 'দখলদারি'র ঘটনা হতো এই জমির তিনজন মালিকের অন্যতম জনাব মোজাম্মেল কবিরের নাম এজাহারভুক্ত হওয়ার কোনো কারণ ছিল না। বরং এই জমির তিনজন মালিকের মধ্যে মোজাম্মেল কবিরসহ দুইজনই অবগত যে অপর মালিক খুরশিদা আহমেদ শুরু থেকেই চুক্তি অনুযায়ী কোম্পানিকে ফ্ল্যাটের অতিরিক্ত অর্ধাংশের মূল্য পরিশোধ করতে অনিচ্ছুক ছিলেন।
সুতরাং, এটি স্পষ্ট, মহানগর প্রকল্পে ১০ অক্টোবরের ঘটনার পেছনে কোনো সন্ত্রাসী কার্যকলাপ কিংবা রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার, কোনো রকমের দখলদারিত্ব কিংবা আমার কোনো অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না। বরং পুরো বিষয়টিই ছিল আমার ব্যবসায়িক কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তামিমের দুঃখজনক মৃত্যুর কারণে প্রচারমাধ্যমে ঘটনাটি ভিন্নভাবে উপস্থাপন করলেও প্রকৃতপক্ষে এটি ছিল নিছক একটি অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু। তবে যেহেতু একটি অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু হয়েছে এবং এই ঘটনার সঙ্গে আমার কোম্পানির নাম জড়িয়ে পড়েছে সেহেতু দেশের প্রচলিত আইনগত ব্যবস্থায় আমি আইনগতভাবে বিষয়টি মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। কিন্তু আমি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হওয়ার কারণে বিশেষ করে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল বিএনপির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে এই ঘটনাটিকে পুঁজি করে বিএনপি সম্পর্কে জনমনে বিরূপ ধারণা দেয়ার সুগভীর চক্রান্তের অংশ হিসেবেই অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
আমাদের প্রতিষ্ঠিত প্লিজেন্ট প্রপার্টিজ লিমিটেড একটি জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি এবং একটি পেশাদার নির্মাণ প্রতিষ্ঠান। কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডার এর মধ্যে আমিও একজন শেয়ারহোল্ডার। দীর্ঘ ২০ বছর সুনামের সঙ্গে আমি আমাদের এই আবাসন ব্যবসা দাঁড় করিয়েছি। এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে রাজধানীতে অনেকগুলো আবাসন প্রকল্প নির্মাণ করেছি। তাহলে আমি কেন আমাদের প্রতিষ্ঠিত আবাসন প্রতিষ্ঠানের নির্মিত একটি ফ্ল্যাটের অর্ধেক দখল করব? কোন যুক্তিতে? দখল করলে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পতনের পরেই সৃষ্ট পরিস্থিতিতে করতে যেতাম। বরং সংক্ষুব্ধ জনগণের রোষানল থেকে অনেক কিছু রক্ষা করেছি। অথচ, একটি অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আমার বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
আমি দীর্ঘ ৩৫ বছর যাবৎ বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় থেকেছি। ওয়ার্ড থেকে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে বিভিন্ন পদে থেকে দায়িত্ব পালন করেছি।
আমি আবারো বিনীতভাবে জানাতে চাই, তামিমের মৃত্যুর ঘটনা সম্পূর্ণ অনাহুত, অনাকাঙ্ক্ষিত। এর পেছনে কোনো সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, দখলদারিত্ব, অসৎউদ্দেশ্য সাধন কিংবা কোনো রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের বিষয় ছিল না।
আপনাদের প্রতি অনুরোধ, অনুমান ও অসত্য তথ্যনির্ভর সংবাদ প্রকাশ করে আমার ৩৫ বছরের রাজনীতি ও ২০ বছরের ব্যবসাকে ভিকটিম না বানিয়ে একটু সত্য জানার চেষ্টা করেন। আমি যদি ৩ জন জমির মালিকের মধ্যে ২ জনকেই ফ্ল্যাট বুঝায় দিই ওনাকে কেন দেব না? ওনার সাথে আমার আলাদা কোনো শত্রুতা ছিল না। আবার আমি যদি ২০/২৫ জন লোক পাঠাই তাইলে আমাদের কোম্পানির ৪ জনের নামে মামলা ছাড়া অন্য জমির মালিক এবং ফ্ল্যাট মালিকদের ১২ জনের নামে মামলা হলো কেন? তাই আপনাদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ, তথ্য যাচাই-বাছাইপূর্বক সঠিক এবং সত্য সংবাদ পরিবেশন করবেন।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে নাম জড়ানোর পর দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ ও নৈতিকতা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে শেখ রবিউল আলম রবিকে শোকজ করেছে বিএনপি।