প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ জুলাই ২০২৪ ২৩:০০ পিএম
লিবিয়ায় বাংলাদেশিদের আটকে মুক্তিপণ আদায় চক্রের হোতা গ্রেপ্তার মাহবুব পাঠান। প্রবা ফটো
লিবিয়ায় বাংলাদেশিদের আটকে মুক্তিপণ আদায় চক্রের হোতা গ্রেপ্তার মাহবুব পাঠানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গত শুক্রবার (২৮ জুন) হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ইতোমধ্যে সে নিজের দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।
সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডি জানিয়েছে, গ্রেপ্তার মাহবুব পাঠানের সিন্ডিকেট ২০২১ সালে ৬৫ জন বাংলাদেশিকে ইতালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নিয়ে কাজ পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেয়। সেই লক্ষ্যে জানুয়ারি মাসে তাদের এমিরেটস বিমানের একটি ফ্লাইটে করে প্রথমে দুবাই নেয়। এরপর সেখান থেকে লিবিয়ায় নিয়ে আটকে নির্যতান করতে থাকে টাকার জন্য। প্রত্যেকের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করা হয়। পরে ১৭ মে মাসে ওই ৬৫ বাংলাদেশিসহ অন্যান্য দেশের নাগরিকসহ ১০৪ জনকে একটি ছোট্ট নৌকায় তুলে দিয়ে সাগরে ভাসিয়ে দেয়। ১৬ ঘন্টা সাগরে উত্তাল ঢেউয়ে ভেসে বিপদজ্জনক অবস্থায় তাদের উদ্ধার করা হয়। পরে ৬৫ বাংলাদেশি দেশে ফিরে আসে।
ওই ৬৫ জনের মধ্যে একজন শরিয়তপুরের মিলন ব্যাপারী। সেই সময় দেশে ফিরে এসে মাহবুব পাঠানসহ মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে নির্যাতন করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ নেওয়ার অভিযোগে মামলা করেন মিলনের মা। এছাড়া আরও এক বাংলাদেশি পৃথক আরও একটি মামলা করেন। মামলায় মাহবুব পাঠানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশিদের আটকে প্রত্যেকের কাছ থেকে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ অদাায়ের অভিযোগ করা হয়। মামলাটি তখন সিআইডি তদন্ত শুরু করে।
সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান জানান, তখন মাহবুব পাঠান লিবিয়ায় ছিল বলে তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। সম্প্রতি সে দেশে আসে। গত ২৮ জুন কৌশলে লিবিয়ায় ফিরে যাওয়ার সময় হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ইতোমধ্যে সে নিজের দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।
তিনি জানান, লিবিয়ায় একাধিক বাংলাদেশি যারা ওই দেশে থেকে মানবপাচারকারী চক্রের নিয়ন্ত্রণ করে। এদের মধ্যে মাহবুব পাঠানও একজন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে লিবিয়ায় থাকেন। মাহবুব পাঠানের সঙ্গে দেশি বিদেশি একাধিক ব্যক্তি রয়েছে যারা ইতালি, সুইজারল্যান্ড,অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে উচ্চ বেতনে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে যেতে চায় এমন ব্যক্তিদের টার্গেট করে। পরে তাদের লিবিয়ায় নিয়ে অপহরণ করে আটকে রেখে নির্যাতন করে দেশে থাকা স্বজনদের কাছে থেকে মুক্তিপণ আদায় করে। এর আগেও একাধিক চক্র গ্রেপ্তার হয়েছে। তবে লিবিয়ায় আরও একাধিক সহযোগী রয়েছে যাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে।