× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

হলি আর্টিজান হামলার ৮ বছর আজ

সমতল ছেড়ে জঙ্গিরা এখন আস্তানা গড়ছে পাহাড়ে

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০১ জুলাই ২০২৪ ১১:৩৫ এএম

রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান হামলার ৮ বছর আজ। ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান হামলার ৮ বছর আজ। ছবি : সংগৃহীত

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে সমতল ছেড়ে পাহাড়কেন্দ্রিক অপতৎপরতা শুরু করেছে বিভিন্ন নিষিদ্ধ সংগঠনের জঙ্গিরা। নতুন নতুন নামে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে তারা। কৌশলে স্থাপন করছে নতুন নতুন আস্তানা। সেখান থেকে সংগঠিত হয়ে আবার বড় ধরনের হামলার উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানা গেছে।

এভাবেই রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার আস্তানা থেকে ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা করে সশস্ত্র জঙ্গিরা। ওই হামলার ৮ বছর আজ। ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে জঙ্গি হামলায় ১৭ জন বিদেশিসহ নিহত হন মোট ২২ জন। তাদের মধ্যে দুজন পুলিশ কর্মকর্তা। জঙ্গিদের গুলি ও বোমায় আহত হন পুলিশের অনেকে। সেনাবাহিনীর অপারেশন থান্ডারবোল্টে নিহত হয় ৬ হামলাকারী জঙ্গি। 

আজ সোমবার হলি আর্টিজান দিবস পালন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হলি আর্টিসান হামলার পর জঙ্গিদের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযান চালায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। অভিযানের সময় এনকাউন্টারে একাধিক শীর্ষ জঙ্গি নেতা মারা যায়। আবার গ্রেপ্তার হয় অনেকে। তারপরও জঙ্গিদের তৎপরতা এখনও আছে বলে নিশ্চিত হয়েছে সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। আত্মগোপনে থাকা জঙ্গিরা মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পুলিশ ও র‌্যাবের। তাদের মধ্য কেউ কেউ দেশের বাইরে থেকেও সংগঠনের কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। 

পুলিশের তথ্যানুযায়ী, সংগঠনগুলোর অর্থায়ন কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না। বিদেশ থেকে আসছে মোটা অঙ্কের অর্থ। ব্যাংকিং, নন-ব্যাংকিং চ্যানেলে নিয়মিতই আসছে অর্থ। মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে জঙ্গিদের অর্থ লেনদেনের প্রমাণও পেয়েছে তদন্তকারী সংস্থাগুলো। যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, কুয়েত ও মালয়েশিয়া থেকে জঙ্গিদের কাছে বিপুল পরিমাণ টাকা আসার বিষয়ে তথ্য পেয়েছে পুলিশ। জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমরা হার্ডলাইনে। এখনও জঙ্গিরা নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলা যাবে না। তবে তাদের নিধন করতে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি। আমাদের গোয়েন্দা তথ্যমতে, জঙ্গিদের আক্রমণাত্মক হওয়ার সামর্থ্য নেই। জঙ্গিরা চাইলেও হলি আর্টিসানের মতো সন্ত্রাসী তৎপরতা আর চালাতে পারবে না। তাদের মোকাবিলায় র‌্যাব-পুলিশ যথেষ্ট সক্ষমতা রাখে। 

পুলিশ সূত্র জানায়, জঙ্গিদের বিষয়ে আরও কঠোর হতে গত সপ্তাহে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে ইউনিট প্রধান, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলার পুলিশ সুপারদের কাছে বিশেষ নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। আত্মগোপনে থাকা জঙ্গিরা যাতে দেশের বাইরে যেতে না পারে সে জন্য দেশের সবকটি বিমানবন্দর ও সীমান্তবর্তী এলাকায় কড়াকড়ি আরোপ করতে বলা হয়েছে। নতুন সংগঠন জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকিয়া ও শাহাদাতের ব্যানারে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে বলে নির্দেশনায় বলা হয়েছে। তদন্তকারী সংস্থাগুলো নিশ্চিত হয়েছে, ক্লোজড গ্রুপের মাধ্যমে তরুণদের মগজ ধোলাই করছে শীর্ষ জঙ্গি নেতারা। এই মুহূর্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পলাতক জঙ্গিরা। সংগঠনের মতাদর্শে বিশ্বাসী হয়ে কেউ কেউ কথিত হিজরতের নামে বাড়িঘর ছেড়ে যাচ্ছে। 

পুলিশ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, জঙ্গিরা সবসময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি তীক্ষ্ন দৃষ্টি রাখে। জঙ্গিরা সুযোগ বুঝে কাজে লাগানোর চেষ্টা করে। নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনগুলোর বাইরে কিছু নতুন সংগঠন গড়ে উঠেছে। ওরা সাংগঠনিক কাজে বাধা পেলে পাল্টা আঘাত করার টার্গেট নিয়ে কাজ করে থাকে। তাদের মধ্যে অনেকে পাহাড়ি অঞ্চলে ঘাপটি মেরে থাকে। কিছুদিন আগে শাহাদাত নামে নতুন একটি সংগঠনের সক্রিয় সদস্য ইসমাইল হোসেন, জিহাদ হোসেন ওরফে হুজাইফা ও আমিনুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছেÑ যা অ্যালার্মিং। তারা একসময় আনসার আল ইসলামের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। তারা আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থানে উদ্বুদ্ধ এবং আল-কায়েদা মতাদর্শে বিশ্বাসী বলে স্বীকার করেছে। ধৃতরা কৌশলে মাদ্রাসার ছাত্রদের টার্গেট করে ‘জঙ্গি আদর্শে’ অনুপ্রাণিত করছে।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, জঙ্গি সংগঠনগুলোর ব্যাকআপ টিম রয়েছে। যারা ঘর থেকে বের হয়ে যাচ্ছে তাদের জঙ্গিরা তিন ভাগে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। প্রথমে পাহাড়ের ক্যাম্পে শারীরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। দ্বিতীয় ধাপে যুদ্ধকৌশলÑডামি অস্ত্র দিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। শেষ ধাপে প্যাট্রোলিং শেখানো হয়। 

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গত দুই বছরে একটিও জঙ্গি হামলা হয়নি। এটা আমাদের একটি সফলতা। পর্যবেক্ষণে আমরা দেখেছি, জঙ্গিবাদে ধাবিত হয়ে কেউ কেউ হিজরত করছে। হিজরতকারীদের আমরা নিয়মিতভাবে খুঁজে বের করছি। সিটিটিসি প্রতি মাসেই দুয়েকজনকে বের করে। যারা প্রাথমিক অবস্থায় থাকে, তাদের বুঝিয়ে আমরা পরিবারের কাছে হস্তান্তর করি। নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার কারণে আমরা এগুলো প্রকাশ করি না। তবে যাদের বুঝিয়ে ভালো পথে আনা না যায়, তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। 

র‌্যাবের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘জঙ্গি নির্মূল করতে র‌্যাবের পাশাপাশি পুলিশসহ সবকটি গোয়েন্দা সংস্থা আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে। জামিন নিয়ে অনেক জঙ্গি পালিয়ে আছে। তাদের ধরতে র‌্যাবের প্রতিটি ব্যাটালিয়ন কাজ করছে। তবে বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটানোর সামর্থ্য নেই তাদের। জামিনে বের হওয়া জঙ্গিদের নিয়ে আমরা একটু দুশ্চিতায় আছি। তারা আদালতে নিয়মিত হাজিরা দেওয়ার কথা থাকলেও তা করছে না। তাদের মধ্যে অনেকেই দেশের বাইরে পালিয়ে গেছে বলে আমাদের কাছ তথ্য এসেছে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা