প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২৪ ১০:৪২ এএম
আপডেট : ২৪ জুন ২০২৪ ১৫:৪৪ পিএম
প্রতীকী ছবি
জামালপুর থেকে কোরবানির গরু বিক্রির জন্য ঢাকায় আনেন জামালপুরের একদল বেপারি। বিক্রি শেষে গরু বিক্রির টাকা নিয়ে এয়ারপোর্ট রোড থেকে জামালপুরের উদ্দেশে একটি বাসে ওঠেন তারা। বাসে চালক-হেলপার ও যাত্রী বেশে থাকা সংঘবদ্ধ ডাকাতদল তাদের জিম্মি করে গরু বিক্রির সব টাকা কেড়ে নেয়। ওই টাকায় ডাকাতদলের সদস্যরা নিজ এলাকায় গিয়ে গরু কিনে কোরবানিও দেয়। সংঘবদ্ধ এ ডাকাতদল ঈদের আগ পর্যন্ত বিমানবন্দর এলাকায় সাতটি ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে। চক্রের প্রত্যেক সদস্যের নামে রয়েছে একাধিক ডাকাতির মামলা। এ চক্রের ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল রবিবার ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি জানান, রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর ও ময়মনসিংহ রোডে ডাকাতি করা এ চক্রের ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উত্তরা বিভাগ। তারা হলোÑ মো. ফয়সাল আহাম্মেদ রিগান, মো. তারেক মিয়া, তানভীর আহম্মেদ অন্তর, মো. মিলন, মো. জাবেদ ইকবাল ওরফে বাদল, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মো. রতন মিয়া, মো. সেলিম মিয়া, মো. রুবেল মিয়া ও মো. সুমন মিয়া। তাদের কাছ থেকে লুট করা ৭ লাখ ১৪ হাজার টাকা, ১৩টি মোবাইল ফোন, ২টি চাকু ও প্লাস্টিকের রশি উদ্ধার করা হয়। গত শনিবার রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানাধীন নাবিস্কো ও ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানাধীন চরপাড়া মোড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ডিবিপ্রধান বলেন, গত ১৬ জুন রাজধানীতে গরু বিক্রি করে পাইকারদের একটি দল বিমানবন্দর এলাকা থেকে একটি বাসে ওঠে জামালপুর যাওয়ার জন্য। বাসে ওঠার পর বাসের দরজা লক করে দেয় হেলপার। আব্দুল্লাহপুর যাওয়ার আগে পাইকারদের কাছ থেকে বাসের ভাড়া চায় হেলপার। জামালপুরের রাস্তা অনেক দূরে, সেজন্য পাইকাররা পরে ভাড়া দিতে চান। এরপরই পাইকারদের শার্টের কলার ধরে ফেলে বাসের হেলপারসহ বাসে আগে থেকে থাকা ডাকাতদলের সদস্যরা। তারা পাইকারদের কিল-ঘুষি দিয়ে তাদের মুখ বেঁধে ফেলে এবং বিভিন্ন হুমকি দিতে থাকে। এরপর গরু বিক্রির সব টাকা রেখে পাইকারদের রাস্তায় ফেলে দেয়।
মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ঘটনার দিন বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা হয়। মামলা হওয়ার পর থেকে এই বিষয়ে কাজ করে ডিবির উত্তরা বিভাগ। তদন্তের একপর্যায়ে এই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ১০ জনের বিরুদ্ধে ঢাকা, ময়মনসিংহ ও গাজীপুর এলাকায় একাধিক মামলা রয়েছে। এ ডাকাতদলের কাজই হচ্ছে বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে ডাকাতি করা। এ ছাড়া বিমানবন্দর এলাকায় প্রবাসীদের গাড়ির গতিরোধ করে লুট করে তারা।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, লুট করা টাকার মধ্য থেকে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা দিয়ে ডাকাতদলের অন্যতম নেতা মো. জাবেদ ইকবাল ওরফে বাদল এবার ঈদে গরু কোরবানি দিয়েছেন। ডাকাতদলের আরেক নেতা মো. তারেক মিয়া ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে একটি গরু কোরবানি দিয়েছেন। গরুর পাইকারদের কাছ থেকে টাকা লুট করে সেই টাকা দিয়ে আবার গরু কিনে কোরবানি দিয়েছেন তারা।