কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ
সাইফুল হক মোল্লা দুলু, মধ্যাঞ্চল
প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৪ ১৭:৩৫ পিএম
কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য প্রস্তুত উড়াল সড়ক নামের এই গরুটি। সম্প্রতি কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার গুণধর ইউনিয়নের খয়রত গ্রামের একটি খামারে। প্রবা ফটো
কোরবানির ঈদ এলেই হাটে উঠে আসে বাহারি নামের গরু। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হচ্ছে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার একটি গরু। যার নাম রাখা হয়েছে ‘উড়াল সড়ক’। আর গরুটি দেখতে উপজেলার গুণধর ইউনিয়নের খয়রত গ্রামে মানুষের ভিড়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোরবানির ঈদ সামনে রেখে গরুটি প্রস্তুত করেছেন ঢাকা আইডিয়াল কলেজ তেজগাঁওয়ের অধ্যক্ষ ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া। গ্রামে ঊশা এগ্রো ফার্ম অ্যান্ড ডেইরি নামে তার একটি খামার রয়েছে। সেখানেই রয়েছে গরুটি। সাদাকালো রঙের গরুটির প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ৪ কেজি ভুসি, ৯ কেজি সবুজ ঘাস ও ৬ মুঠো খড় থাকে। সে হিসেবে প্রতিদিন গরুটির পেছনে খরচ হচ্ছে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা। ৯ ফুট লম্বা ও সাড়ে ৬ ফুট উচ্চতার গরুটির ওজন প্রায় ৩৫ মণ। দাম হাঁকছেন ১৫ লাখ টাকা।
খামারি ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘খামারের একটি গাভি থেকেই উড়াল সড়কের জন্ম হয়েছে। দীর্ঘ ৪ বছর ধরে লালনপালন করে আসছি। সম্পুর্ণ দেশীয় খাবার খাইয়ে যত্ন আর ভালোবাসা দিয়ে বড় করেছি। কৃত্রিম কোনো কিছু খাওয়ানো হয় না। প্রাকৃতিক উপায়ে খৈল, ভুসি, ভুট্টা, কলা, ভাত, খড়-ঘাস খাইয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘উড়াল সড়ককে সন্তানের মতো যত্ন করছি। তার সাহেবি স্বভাব মুগ্ধ করার মতো। গত বছর ওজন ছিল ১ হাজার ২০০ কেজি। তখন দাম উঠেছিল সাড়ে সাত লাখ টাকা। এ বছর ওজন ১ হাজার ৪০০ কেজি ছাড়িয়ে গেছে। প্রতিদিন দেড় থেকে দুই কেজি করে ওজন বাড়ছে। প্রাণী চিকিৎসকদের সহযোগিতায় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ফিতার মাপে ওজন নিশ্চিত হওয়া গেছে।’
নাম উড়াল সড়ক কেন- জানতে চাইলে ইকবাল হোসেন জানান, সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ মিঠামইন উপজেলা থেকে খয়রত গ্রাম পর্যন্ত একটি উড়াল সড়ক করছেন। সড়কটি খামারের পাশঘেঁষে নামবে। এ কারণে তিনি খামারের বড় গরুটির নাম আদর করে রেখেছেন উড়াল সড়ক। এখন কোরবানির হাটে বিক্রি করতে তিনি গরুর যত্ন করছেন। আর উড়াল সড়ককে কিনতে চাইলে ০১৭১৬৮০০৩০০ নম্বরে যোগাযোগেরও অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, গরু দেখতে খামারে ভিড় জমিয়েছেন শত শত মানুষ। দূরদূরান্ত থেকে আসছেন ক্রেতারাও। তারা জানান, এই এলাকায় এটি সবচেয়ে বড় গরু। রঙ সাদা-কালো। দেখতে সুন্দর। অনেকেই গরুটি দেখতে এসে সেলফি তুলছেন। তেমনিই একজন কিশোরগঞ্জ সদরের নীলগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা আজহার ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ‘গরুটি খুবই সুন্দর ও আকর্ষণীয়। আসলেই ষাঁড়টি দেখতে উড়াল সড়কের মতোই। লম্বা চওড়া। এবারের ঈদে এটি কিশোরগঞ্জ জেলার সেরা গরু। অনেকেই দেখার জন্য আসছেন, তাই আমিও এলাম।’
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নাজমুল হাছান জানান, গরুটির ওজন আনুমানিক ৩৬ মণ। ঈদ আসতে কিছুদিন বাকি আছে। এরই মধ্যে আরও ওজন বাড়বে বলে তিনি মনে করেন। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র পণ্ডিত বলেন, ‘উড়াল সড়কের মালিক একজন সফল উদ্যোক্তা। তার নিজস্ব খামারেই এটি বড় করা হয়েছে। আর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় নিয়মিত খোঁজখবর রাখছে।’