সাইফুল হক মোল্লা দুলু, মধ্যাঞ্চল
প্রকাশ : ২৩ মে ২০২৪ ১০:৪৩ এএম
আপডেট : ২৩ মে ২০২৪ ১৬:১৩ পিএম
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় কোরবানির জন্য কৃষকের গরু পালন। প্রবা ফটো
কিশোরগঞ্জে এবারের কোরবানির জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৯৬টি গবাদিপশু। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে দেশীয় পদ্ধতিতে বিভিন্ন জাতের গরু মোটাতাজা করে প্রস্তুত করেছেন খামারি ও চাষিরা। জেলায় এবার কোরবানির পশুর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৩ হাজার ৩৮৩টি। কোরবানির জন্য উদ্বৃত্ত পশু রয়েছে ১৬ হাজার ৩১৩টি; যা জেলার বাইরে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোরবানির ঈদে লাভের আশায় খামারিরা কোনো ধরনের ক্ষতিকারক ওষুধ প্রয়োগ না করে সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে খড়, তাজা ঘাস ও ভুসিসহ পুষ্টিকর খাবার খাইয়ে মোটাতাজা করেছেন। হাওর ও উজানে সাধারণত গরু-মহিষকে প্রাকৃতিক পন্থায় মোটাতাজা ও সুস্থ রাখতে চেষ্টা করা হয়। এ ধরনের গরুর মাংস খেয়ে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি নেই বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। তবে অভিযোগ রয়েছে কয়েক বছর ধরে অতি মুনাফালোভী অসাধু খামারিরা কৃত্রিম উপায়ে ক্ষতিকর ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে গরু মোটাতাজা করে আসছেন। তবে এবার প্রাণিসম্পদ অফিসের নজরদারি থাকায় তা করা যাচ্ছে না।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জে ছোট-বড় ১০ হাজার খামারে গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া দেশীয় পদ্ধতিতে মোটাতাজাকরণ করছেন খামারিরা। কোরবানির পশু নিরাপদ করতে মোটাতাজাকরণে ক্ষতিকর ওষুধ ব্যবহার বন্ধে খামারে খামারে তদারকি বাড়ানো হয়েছে। গঠন করা হয়েছে একাধিক তদারকি টিম। প্রতিদিনই কোনো না কোনো খামারে যাচ্ছেন কর্মকর্তারা। তা ছাড়া খামারিরা যাতে অনলাইনে পশু বিক্রি করতে পারে, সেজন্য ‘কোরবানির পশুর ডিজিটাল হাট’ নামে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আইডি খোলা হয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, পশু চিকিৎসকদের পরামর্শে কৃমি, ভিটামিন ও রোগের ওষুধ খাওয়ানো হলেও ক্ষতিকর ওষুধ খাওয়াচ্ছেন না। এ ছাড়া এ বছর জেলায় শতাধিক কোরবানির পশুর হাটে প্রাণিসম্পদ অফিসের পক্ষ থেকে মেডিকেল টিম কাজ করবে; যাতে অসুস্থ বা রুগ্ণ কোনো পশু হাটে বিক্রি না হয়। মানুষ যেন নিরাপদ মাংস পেতে পারে, সেজন্য সার্বক্ষণিক হাটে মেডিকেল টিম কাজ করবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র পণ্ডিত জানান, কোরবানির পশুর মাংস নিরাপদ রাখতে এবং মানুষ যাতে সুস্থ থাকতে পারে, সেজন্য এ বছর এ জেলার ১৩টি উপজেলার সবকটি খামারি, ব্যক্তিমালিকানাধীন পালনকারী ও প্রান্তিক খামারিরা গরু, মহিষ, ভেড়া, ছাগল মোটাতাজাকরণে দেশীয় পদ্ধতিতে লালনপালন করছেন। এ ছাড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, খামারিরা যাতে কোনো ধরনের পাম ট্যাবলেট, স্টেরয়েড ও হরমন ব্যবহার করতে না পারেন। পাশাপাশি অধিদপ্তরের মেডিকেল টিমগুলো সার্বক্ষণিক কাজ করছে। এসব ওষুধ বিক্রেতা ফার্মেসি নজরদারিতে রয়েছে। যেন ক্ষতিকর ট্যাবলেট বা ইনজেকশন বিক্রি করতে না পারে।