এসব খুচরা এমপি আমি পকেটে রাখি

লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুনের সমালোচনা করে বক্তব্য দিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ড. আশ্রাফ আলী চৌধুরী সারু।

সোমবার (১৩ মে) সকালে আলেকজান্ডার বাজারে দলীয় অফিসে উপজেলা আওয়ামী লীগের এক সভায় তিনি এই বক্তব্য দেন। যার ভিডিও সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

ওই বক্তব্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আশ্রাফ আলী চৌধুরী বলেন, ‘আমি যা বলেছি সবই সত্য। আমার বক্তব্যই আমার উত্তর। এসব খুচরা এমপি আমি পকেটে রাখি। এমপি সাহেব ২০১৪ থেকে ১৮ সাল পর্যন্ত রামগতি-কমলনগরে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। তিনি বিএনপি-জামায়াতকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য কাজ করছেন। যার প্রমাণ আপনারা দেখতে পাচ্ছেন।’

সোমবার ভাইরাল হওয়া বক্তব্যে বলেন, ‘পৌর নির্বাচনে এম মেজবাহ উদ্দিনকে মেয়র হিসেবে বিজয়ী করতে এক হাজার মানুষকে তাঁবু টানিয়ে দুই দিন ভাত খাইয়েছেন। পৌর নির্বাচনে প্রায় ১৩ লক্ষ টাকা খরচ করেছেন। এরপর সংসদ নির্বাচনে দাঁড়ানোর জন্য বিভিন্ন সংস্থা থেকে তাকে চাপ দেওয়া হলেও তিনি তা নাকচ করে দেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু এমপি, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন এমপি, ডিসি, ইউএনও, ওসিসহ প্রশাসনের বিভিন্ন লোককে লক্ষ লক্ষ টাকা সহায়তা করেন এবং উপঢৌকন দেন। করোনাকালীন প্রশাসনকে উপকরণ সহায়তাসহ নগদ টাকা দিয়েছেন।’

স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুনের নির্বাচনকালীন বিপুল টাকা ব্যয় করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় বর্তমান এমপি আব্দুল্লাহ আল মামুন আমাকে ব্ল্যাকমেইল করেছেন। আমি নির্বাচনের সময় তার জন্য ১৪ লাখ টাকা খরচ করেছি। এখন তিনি বিএনপি-জামায়াতকে রামগতিতে প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করছেন।’

উপজেলা নির্বাচনে এমপি মামুনের বিএনপি নেতা শরাফ উদ্দীন আজাদ সোহেলের পক্ষ অবলম্বন করার তীব্র সমালোচনা করে উপজেলা আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘এমপি সাহেব আমাকে কথা দিয়ে কথা রাখেননি। তিনি এখন বিএনপি নেতাকে উপজেলা চেয়ারম্যান বানিয়েছেন। ২০১৪ থেকে ১৮ সাল পর্যন্ত রামগতি-কমলনগরকে সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত করেছেন।’

২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এমপির পক্ষে নির্বাচন করার কথা উল্লেখ করে ড. সারু বলেন, ‘এমপি আব্দুল্লাহ অতীতের মতো আর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রশ্রয় দেবে না এবং জামায়াত-বিএনপিকে লালন পালন করবে না বলে ওয়াদা করায় আমি তার নির্বাচন করেছি। কিন্তু এখন তিনি তার কথা রাখেননি। তিনি আবারও সেই আগের মতোই কাজ করছেন। এমপি সাহেব এলাকায় সন্ত্রাস নৈরাজ্যকর পরিবেশ তৈরি করেছেন।’

স্বতন্ত্র এমপি আব্দুল্লাহ আল মামুনের পক্ষে নির্বাচন করায় রামগতি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ মুরাদকে অথর্ব উল্লেখ করে তার কড়া সমালোচনা করেন তিনি।

ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ, সিনিয়র সহসভাপতি আবুল কাশেম নিজাম, সহসভাপতি একরামুল কবির টিটু, সদস্য ও পৌর মেয়র এম মেজবাহ উদ্দিন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, সদস্য সাহেদ আলী মনুসহ অনেকে।

এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আশ্রাফ আলী সারু সংসদ নির্বাচনে আমার পক্ষে ২২ দিন প্রচারণা করে আমার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা নিয়েছেন। তিনি উগ্র মেজাজের মানুষ। কথায় কথায় তিনি অস্ত্র দেখিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। ছাগলকে পর্যন্ত অস্ত্র দেখান। তার সম্পর্কে আমি আর বেশি কিছু বলতে চাই না।’