× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

নেত্রকোণার মদন

৫৬০ শিক্ষার্থীর কেউই বিদ্যালয়ে আসে না

জিয়াউর রহমান, নেত্রকোণা

প্রকাশ : ১৪ মে ২০২৪ ১০:০৮ এএম

আপডেট : ১৪ মে ২০২৪ ১০:৪৭ এএম

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ৫৬০ জন। শিক্ষক-কর্মচারী ১৬ জন। কিন্তু একজন শিক্ষার্থীও বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকে না। শিক্ষক-কর্মচারীরাও সময়মতো আসেন না। যারা আসেন তারা অফিসকক্ষে বসে আড্ডায় ব্যস্ত থাকেন। কোনো কোনো শিক্ষক আবার অফিসরুমে বসে মনের সুখে ধূমপানও করেন বলে অভিযোগ। এমন চিত্র নেত্রকোণার মদন উপজেলার গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের পদমশ্রী এ.ইউ. খান উচ্চ বিদ্যালয়ের। 

কয়েক বছর ধরেই এমন অবস্থা বিদ্যালয়টির। অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও রাজনৈতিক প্রভাবের ফলে শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকার সচেতনমহলের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। 

স্থানীয় ও বিদ্যালয়সূত্রে জানা গেছে, হাওরাঞ্চলে শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য ১৯৭৬ সালে পদমশ্রী গ্রামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ে ১৪ জন শিক্ষক ও ২ জন কর্মচারী কর্মরত। শিক্ষার্থী রয়েছে ৫৬০ জনের বেশি। কয়েক মাস ধরে ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা উপস্থিত থাকে না। শিক্ষকরাও নিজেদের মতো করে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করেন। এমন সব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি সরজমিনে দেখা যায়, জাতীয় পতাকা উড়ছে। নিচতলার স্টাফ রুমে একজন নারী কর্মচারী ঘুমিয়ে আছেন। পাশেই একজন শিক্ষক এক শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন। দ্বিতীয় তলার অফিসরুমে চার-পাঁচজন শিক্ষক আড্ডায় ব্যস্ত। এ ছাড়া শিক্ষক স্টাফ রুমে দুইজন শিক্ষক গল্প করছেন। তাদের ধূমপান করতে দেখা গেছে। তবে একজন শিক্ষার্থীরও উপস্থিতি চোখে পড়েনি। 

নূরুল ইসলাম, সানাউল্লাহসহ বেশ কয়েকজন অভিভাবক জানান, বিদ্যালয়ে এখন আর লেখাপড়া হয় না, তাই ছেলেমেয়েরা যায় না। অনেক ছেলেমেয়ে লেখাপড়া ছেড়ে দিয়েছে। যাদের সাধ্য আছে তারা উপজেলা সদরে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছে। প্রধান শিক্ষকের গাফিলতি ও ম্যানেজিং কমিটির উদাসীনতায় বিদ্যালয়ের এমন অবস্থা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সরকারদলীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় এলাকার লোকজন কিছু বলতে সাহস পায় না। তারা নিজেদের ইচ্ছামতো বিদ্যালয়টি পরিচালনা করে শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করছে।

বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘শিক্ষক-কর্মচারীরা নিয়মিতই উপস্থিত থাকেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তেমন একটা আসে না। শিক্ষার্থীরা এখন কৃষিকাজে ব্যস্ত।’ উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার জোসনা বেগম জানান, ‘পদমশ্রী এ.ইউ. খান উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া হয় না এই বিষয়টি এলাকার লোকজন আমাদের জানিয়েছে। যোগাযোগব্যবস্থার কারণে ঠিকমতো মনিটরিং করা সম্ভব হচ্ছে না।’ 

জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমীর কুমার বলেন, ‘আমার স্কুলটা হাওর এলাকায়। হাওরে বর্তমানে বোরো ধান ঘরে তোলার পুরো মৌসুম। তাই কাজের ব্যস্ততার কারণে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসে না। তবে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী করতে শিক্ষকরা বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন।’ এজন্য বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা আসতে শুরু করেছে বলেও জানান তিনি।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অধীর চক্রবর্তীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল বারী বলেন, ‘আমি অসুস্থ তাই ময়মনসিংহে আছি। বিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থার বেহাল অবস্থার খবর পেয়ে প্রধান শিক্ষককে ফোন দিয়েছি। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানো নোটিস দেওয়া হবে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা