মানিকগঞ্জ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১০ মে ২০২৪ ১৬:৫৬ পিএম
আপডেট : ১০ মে ২০২৪ ১৭:১২ পিএম
শুক্রবার দুপুরে মানিকগঞ্জ শহরের সেওতা কবরস্থানে পাইলট আসিম জাওয়াদ রিফাতকে দাফন করা হয়। প্রবা ফটো
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত পাইলট আসিম জাওয়াদ রিফাতের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার (১০ মে) দুপুর সোয়া ৩টার দিকে মানিকগঞ্জ শহরের সেওতা কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এর আগে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারযোগে মানিকগঞ্জের শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে তার মরদেহ পৌঁছয়।
বৈমানিক আসিম জাওয়াদের মরদেহের সঙ্গে তার বাবা ডা. আমান উল্লাহ, স্ত্রী অন্তরা আক্তার ও দুই সন্তান হেলিকপ্টারে আসেন। নিহত ছেলের বহনকারী হেলিকপ্টার দেখেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তার মা নিলুফা খানমসহ স্বজনরা।
সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক শিক্ষক নিলুফা আক্তার খানম ও চিকিৎসক আমান উল্লাহর একমাত্র সন্তান ছিলেন আসিম জাওয়াদ। সন্তানকে হারিয়ে কান্না করতে করতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা নিলুফা খানম।
নিহত পাইলটের মামা সাংবাদিক সুরুজ খান জানান, আসিম জাওয়াদ খুবই মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তিনি পরিবারের একমাত্র সন্তান। ছোটবেলা থেকেই তার পাইলট হওয়ার স্বপ্ন ছিল। তাই তিনি ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার বিষয়ে চান্স পেয়েও ভর্তি হননি। পাইলট হওয়ার স্বপ্নে তিনি অন্য কোনো চাকরিতেও আবেদন করেননি। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে বিমানবাহিনীতে যোগদান করে অবশেষে তার স্বপ্ন পূরণ হয়। কিন্তু তার এই স্বপ্ন পূরণ হলেও হলো না দীর্ঘস্থায়ী। ক্ষণস্থায়ী স্বপ্নের কাছে হার মানলেন তিনি। সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। তার মৃত্যুর খবরে আমার বোন নিলুফা পাগলপ্রায়। তার মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জাওয়াদের বাবা ডা. আমান উল্লাহ জানান, ২০১০ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ এয়ারফোর্স একাডেমিতে (বাফা) যোগদান করে আসিম জাওয়াদ। ২০১১ সালে অফিসার হিসেবে কমিশন লাভ করেন জাওয়াদ। স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে চট্টগ্রাম বিমানবাহিনীর ঘাঁটি জহরুল হকের অফিসার্স আবাসিক এলাকার নীলিমাতে বসবাস করত আসিম। আমি দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে চট্টগ্রাম চলে যাই। কিন্তু সেখানে গিয়ে আমি আমার জীবিত আসিমকে আর ফিরে পেলাম না। একমাত্র সন্তান হারানোর দুঃখ-কষ্ট কোনোভাবে ভাষায় বলে বোঝানো যাবে না।
বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর মোহনায় বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান ইয়াক-১৩০ বিধ্বস্ত হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পতেঙ্গার বানৌজা ঈসা খাঁ হাসপাতালে (নেভি হাসপাতাল) পাইলট জাওয়াদ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার গোপালপুর ধুলট গ্রামে। তবে তিনি মানিকগঞ্জ শহরের নগর ভবন রোডে গোল্ডেন টাওয়ার ভবনের সপ্তমতলার নিজস্ব ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন।