বরগুনা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৮ মে ২০২৪ ২৩:১৭ পিএম
বরগুনার তালতলী উপজেলায় এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে তিন চেয়ারম্যান ও এক ছাত্রলীগনেতার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। এর আগে এই চার বিবাদী এই নারীর বিরুদ্ধে পর্নগ্রাফি আইনে মামলা করেন। সেই মামলা এই নারী কারাগারে রয়েছেন। এ নিয়ে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে ঘটনা নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
বুধবার (৮ মে) বরগুনার নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল আদালতে ওই নারীর বাবা বাদী হয়ে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলায় উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বাচ্চু কে ১নং, পচাকোরালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক কে ২ নং, তালতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রেজভিউল কবির জমাদ্দারকে ৩ নং এবং তালতলী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল আবেদীন মিঠুকে ৪ নং বিবাদী করা হয়েছে। আদালতের বিচারক মোঃ মশিউর রহমান খাঁন মামলাটি আমলে নিয়ে পটুয়াখালী পিবিআইকে তদন্ত পুর্বক সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
তিন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় উপজেলা ব্যাপী চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে শাস্তি দাবী করছেন এলাকাবাসী। মামলার বিবরন সুত্রে জানাগেছে, তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু মিয়ার সঙ্গে মামলার বাদীর মেয়ের মোবাইল ফোনে প্রেম হয়। এক পর্যায় চেয়ারম্যান বাচ্চু তার মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তুলে। কিন্তু চেয়ারম্যান তাকে বিয়ে না করে টালবাহানা করতে থাকে।
মামলায় আরো বলা হয়েছে ২ নং আসামির বাসায় বাদীর মেয়েকে জোরপূর্বক আটকে রেখে চারজন আসামি ধর্ষণ করেছেন। ধর্ষিতা বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে চেয়ারম্যান তাকে বিয়ে করবে বলে স্ট্যাম্পে লিখিত দেয় এবং বিভিন্ন স্থানে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ধর্ষণ করে এবং ধর্ষিতার অজান্তে গোপনে মোবাইলে নগ্ন ছবি ধারণ করে। ওই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে মামলার ২ নং আসামী পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করেন। চেয়ারম্যান রাজ্জাক তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন এবং তিনিও মোবাইলে নগ্ন ছবি ধারন করে রাখে।
পরে পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বাদীর মেয়েকে ব্ল্যাকমেইল করেন এবং তালতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ রেজবি-উল কবির জোমাদ্দার ধর্ষণ করেন। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানও তাকে বিভিন্ন হোটেল ও লঞ্চে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। তাদের হাত থেকে রক্ষা পেতে বাদীর মেয়ে ধর্ষণ মামলা করবেন বলে হুমকি দেন।
এরপর তিন চেয়ারম্যান ও ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মিলে ধর্ষিতার বিরুদ্ধে উল্টো পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দেন। ওই মামলায় ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে ওই মামলায় ধর্ষিতা জেল হাজতে রয়েছে। মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবি মোঃ আনিচুর রহমান মিলন বলেন, আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে পটুয়াখালী পিবিআইকে তদন্ত করে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।