প্লাবন শুভ, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)
প্রকাশ : ০৮ মে ২০২৪ ১৭:২৪ পিএম
আপডেট : ০৮ মে ২০২৪ ১৮:৩৯ পিএম
রিকশা-ভ্যান, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে হেডলাইট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে উজ্জ্বল ও সাদা আলোর নিষিদ্ধ এলইডি লাইট যা বিপরীত দিকের যানবাহনের চালকসহ পথচারীদের চোখে তৈরি করে ভীষণ সমস্যা। এ আলো চোখে পড়লে মুহূর্তেই সব অন্ধকার হয়ে যায়। এতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার আঞ্চলিক সড়ক, মহাসড়কসহ গ্রামীণ সড়কগুলোর নিত্যদিনের চিত্র এমনটাই।
উপজেলা প্রশাসন কিংবা পৌরসভার উদ্যোগে নেওয়া হয় না এসব নিষিদ্ধ লাইটের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ। ফলে যে যার মতো যেকোনো যানবাহনে ব্যবহার করছে ক্ষতিকারক এ বাতি। চক্ষুবিশেষজ্ঞদের মতে, সহনীয় মাত্রার বেশি আলোকরশ্মি উৎপন্ন করায় এলইডি লাইট সরাসরি চোখের রেটিনায় আঘাত করে। এতে কর্নিয়াসহ দৃষ্টিশক্তির মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।
বর্তমানে ফুলবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে ব্যাটারিচালিত ভ্যান, ইজিবাইক, ইঞ্জিনচালিত নসিমন, করিমন ও পাগলু গাড়ির সাদা লাইটের আলোয় বেড়েছে দুর্ঘটনার হার। এসব যানবাহনের হেডলাইটের সাদা আলোয় চলাচলে সমস্যা হচ্ছে পথচারীদের। প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই এসব যানের চালক নিজেদের সুবিধার্থে এলইডি লাইট জ্বালিয়ে সড়কে চলাচল করছেন। এলইডি আলোর রশ্মি এতই বেশি যে, তার বিপরীত দিক থেকে আসা যানবাহনের চালক বা পথচারীদের সরাসরি চোখে পড়ে। এ সময় চোখে দেখতে না পেয়ে ঘটছে দুর্ঘটনা।
ফুলবাড়ীর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক চন্দ্রনাথ গুপ্ত বলেন, সন্ধ্যার পর পথ চলাচলের সময় এলইডি লাইটের কারণে চোখে কিছু দেখা যায় না। দুর্ঘটনার মূল কারণ এখন এসব নিষিদ্ধ এলইডি লাইট। এদিকে সংশ্লিষ্টদের কোনো নজর নেই। তাদের নজরদারি অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম বলেন, অবৈধ এসব যানবাহনের আলোর গতি সাধারণ আলোর চেয়ে অনেক বেশি। এ জাতীয় বাতির আলো সামনে পড়লে বেশ কিছুক্ষণ চোখে কিছু দেখা যায় না। এ ছাড়া বেশিরভাগ সময় লাইটগুলো উঁচু করে দেওয়া হয়। এতে চালক ও সাধারণ মানুষের পথ চলতে চরম অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। এ কারণে সড়ক পারাপারের সময় প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। বিষয়টি জরুরিভাবে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন।
ইজিবাইকের চালক ঝিনুক বলেন, ইজিবাইক কেনার সময় গাড়ির সঙ্গে যে লাইটটি ছিল সেটি ভালো ছিল। কিন্তু সেটি নষ্ট হওয়ার পর স্থানীয় দোকানদাররা এ এলইডি লাইট বিক্রি করেছেন। এটির আলো একটু বেশি চোখে ধরে।
ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান বলেন, পাগলু, নসিমন, করিমন, রিকশা-ভ্যানসহ যা আছে; এগুলো মহাসড়কে চলাচলের কোনো আইন নেই। এসব যানবাহন অবৈধ। এসব যানবাহনসহ অন্য যেগুলোয় এলইডি লাইট লাগানো আছে, সেগুলো বন্ধ করতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মশিউর রহমান বলেন, যানবাহনে ব্যবহৃত এলইডি লাইট মানুষের চোখের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক। এ লাইটের প্রভাবে সরাসরি চোখের রেটিনার কর্মক্ষমতা কমে যায়। ফলে চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে শুরু করে।
ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মো. আল কামাহ্ তমাল বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে এলইডি লাইট ব্যবহার বন্ধ করার জন্য বিধি মোতাবেক আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।