ছান্নুর আয় বেড়ে দশ গুণ নগদ বেড়েছে ৩৩ গুণ

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন ছান্নুর গত পাঁচ বছরের ব্যবধানে নগদ টাকা বেড়েছে ৩৩ গুণ। পাশাপাশি কৃষি ছেড়ে ব্যবসায়ী হয়ে তার আয় দশ গুণ বেড়েছে। একই সঙ্গে তার স্ত্রীও হয়েছেন কয়েক লাখ টাকার সম্পদের মালিক। 

৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জমা দেওয়া হলফনামা এবং ২০১৯ সালের ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। 

সোহরাব হোসেন ছান্নু বর্তমানে শাজাহানপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। এবারও তিনি চেয়ারম্যান পদে ভোটের মাঠে লড়াই করছেন। এ ছাড়াও তিনি শাজাহানপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি। 

হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০১৯ সালে সোহরাব হোসেন ছান্নুর পেশা ছিল চাকরি ও কৃষি। এবারের হলফনামায় তিনি চাকরির পাশাপাশি কৃষির পরিবর্তে ব্যবসা উল্লেখ করেছেন।

গত পাঁচ বছরের ব্যবধানে সোহরাব হোসেন ছান্নুর আয় বেড়েছে দশ গুণ। ২০১৯ সালে তার আয় ছিল ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এর মধ্যে কৃষি থেকে ১৫ হাজার এবং বাকি ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা তার পেশা থেকে। এ বছর তিনি তা দেখিয়েছেন ২৮ লাখ ৩৭ হাজার ৬৩৬ টাকা। এর মধ্যে ব্যবসা থেকে ২৫ লাখ ৫৮ হাজার ২৩৬ টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এ ছাড়া নির্ভরশীলদের মাধ্যমে তিনি কৃষি খাত থেকে ২০ হাজার, পেশা থেকে ২ লাখ ৭৯ হাজার ৪০০ টাকা এবং ব্যবসা থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা আয় করেন।

গেল পাঁচ বছর আগে ছান্নুর হাতে নগদ টাকা ছিল ১ লাখ ৬০ হাজার। তা বেড়ে বর্তমানে তার হাতে ৫৩ লাখ ৭২ হাজার ৯৯৬ টাকা রয়েছে। এ ছাড়া ব্যাংকে জমা আছে ৩০ হাজার, যা পাঁচ বছর আগে ছিল ৫ হাজার। তবে ১৫ ভরি সোনা এবং ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক ও আসবাবপত্র পাঁচ বছর আগে যা ছিল তা এবারও একই পরিমাণ উল্লেখ করেছেন হলফনামায়। 

গত পাঁচ বছরে ছান্নুর কৃষিজমির পরিমাণ ৭৯ শতাংশ অপরিবর্তিত থাকলেও অকৃষি জমি ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ১০ দশমিক ৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া নিজের নামে পাঁচ বছর আগের একটি টিনশেড বাড়ির কথা এবারের হলফনামাতেও উল্লেখ করেছেন।

পাঁচ বছর আগে ব্যাংকে ছান্নুর দায় ছিল ১৫ লাখ টাকা। এবারের হলফনামায় একই ব্যাংকে তার তিন অ্যাকাউন্টে মোট ৭৫ লাখ টাকা ঋণ নেওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন।

গত পাঁচ বছরে ছান্নুর স্ত্রীও অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। গতবারের হলফনামায় স্ত্রীর নামে ২৮ শতক কৃষিজমি এবং ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ অকৃষি জমির কথা উল্লেখ করেছেন। এবারের দাখিল করা হলফনামায় দেখা যায়, স্ত্রীর হাতে নগদ ১২ লাখ ৬৬ হাজার ৩৭০ টাকা রয়েছে। এ ছাড়াও তার স্ত্রীর নামে ব্যাংকে ৫০ হাজার টাকা, সোনা ২০ ভরি এবং এক লাখ টাকার ইলেকট্রনিক ও আসবাবপত্র রয়েছে। অস্থাবর সম্পদে ছান্নুর স্ত্রীর নামে ৩ বিঘা কৃষিজমি (পৈতৃক সূত্র), ৮৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ অকৃষি জমিÑ যার মূল্য ১৪ লাখ ৫৮ হাজার এবং ৬৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা দামের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। 

আগামী ১৮ মে শাজাহানপুর উপজেলা পরিষদের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ছান্নুসহ মোট চার প্রার্থী ভোটের মাঠে রয়েছেন।