× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সুন্দরবন

২২ বছরে ৩২ বার আগুন

মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৬ মে ২০২৪ ১৫:২৭ পিএম

আগুন নির্বাপণের চেষ্টা ফায়ার সার্ভিসের। প্রবা ফটো

আগুন নির্বাপণের চেষ্টা ফায়ার সার্ভিসের। প্রবা ফটো

গত ২২ বছরে সুন্দরবনে আগুন লেগেছে ৩২ বার। প্রতিবার কারণ খোঁজা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু তদন্তের পর কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। ফলে নিয়মিত ঘটছে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। সর্বশেষ গত শনিবার চাঁদপাই রেঞ্জের আরামবুনিয়া এলাকায় আগুন লাগে, যা গতকাল রবিবার রাত ১০টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পুরোপুরি নেভেনি।

অগ্নিকাণ্ড এড়াতে বিভিন্ন সময় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে জোরালোভাবে তিনটি সুপারিশ করা হয়। সুন্দরবন ও সংলগ্ন লোকালয়ের মাঝে নদী ও খাল খনন, অগ্নিকাণ্ডপ্রবণ এলাকায় প্রতি দুই কিলোমিটার পরপর ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করে নজরদারি ও চাঁদপাই রেঞ্জের ভোলা নদের কোল ঘেঁষে বনের পাশ দিয়ে কাঁটাতার অথবা নাইলোনের নেট দিয়ে বেড়া দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়। কিন্তু কোনো সুপারিশ বাস্তবায়ন হয়নি।

অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, গত ২২ বছরে ৩২ বার আগুন লেগে পুড়েছে প্রায় ৯০ একর বনভূমি। এর মধ্যে ২০০২ সালের ২২ মার্চ শরণখোলা রেঞ্জে কটকায় আগুনে পুড়ে যায় প্রায় এক একর ছনবন। 

২০০৪ সালের ২৫ মার্চ চাঁদপাই রেঞ্জের নাংলি ক্যাম্প এলাকায় পুড়ে যায় তিন একর বনভূমি। একই বছরের ২৭ ডিসেম্বর আড়ুয়াবেড় এলাকায় পুড়ে যায় প্রায় ৯ শতক ছনবন। ২০০৫ সালের ৮ এপ্রিল ধানসাগর স্টেশনের অধীন কদলতেজি এলাকায় পুড়ে যায় প্রায় তিন একর বন। এর পাঁচ দিন পর একই এলাকার তুলাতলায় পুড়ে যায় সাড়ে চার একর বনভূমি।

২০০৬ সালের ১৯ মার্চ শরণখোলা রেঞ্জের তেরাবেকা এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর কিছুদিন পর ১১ এপ্রিল চাঁদপাই রেঞ্জের আমুরবুনিয়ায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর এক দিন পর কলমতেজির টহল-ফাঁড়ির খুটাবাড়িয়া এলাকায় দেড় একর, ১ মে নাংলির পঁচাকুড়ালিয়া এলাকায় ৫০ শতক, তিন দিন পর ধানসাগর স্টেশন এলাকায় পুড়ে যায় আড়াই একর বনভূমি। ২০০৭ সালে ৩ দফায় (১৫ জানুয়ারি, ১৯ মার্চ ও ২৮ মার্চ) একই এলাকার প্রায় ১৫ একর বনভূমি পুড়ে যায়।

২০১০ সালের ২০ মার্চ ধানসাগর স্টেশনের গুলিশাখালী এলাকায় প্রায় পাঁচ একর বন পুড়ে যায়। পরের বছর অর্থাৎ ২০১১ সালের মার্চে দুই দফা আগুন লাগে। এতে প্রায় সাড়ে তিন একর বন পুড়ে যায়। প্রায় ১০ একর বনভূমি পুড়ে যায় ২০১৪ সালের ২৫ মার্চের অগ্নিকাণ্ডে। ২০১৬ সালের ২৭ মার্চ সন্ধ্যায় সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলি ফরেস্ট ক্যাম্প এলাকায় আগুন লাগে। ১৩ এপ্রিল একই এলাকায় ফের আগুন লাগে। পুড়ে যায় সাড়ে আট একর বন। এরপর ১৮ এপ্রিল আব্দুল্লাহর ছিলায় এবং একই বছরের ২৭ এপ্রিল তুলতলার বিলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ২০১৭ সালের ২৬ মে চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলি ফরেস্ট ক্যাম্পের আওতায় মাদ্রাসার ছিলা এলাকায় আগুন লাগে। ২০২১ সালের গত ৮ ফেব্রুয়ারি পুড়েছে ধানসাগর টহল ফাঁড়ি এলাকার প্রায় চার শতক বনভূমি।

প্রতিটি অগ্নিকাণ্ডের পরে আগুনের কারণ, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ ও পরে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটি নির্দিষ্ট সময়ে সুপারিশসহ রিপোর্টও পেশ করে। তবে সেসব রিপোর্টের প্রতিফলন বাস্তবে দেখা যায় না। জানা গেছে, শুধু আগুনেই পুড়ছে না সুন্দরবন, বন্য প্রাণী ও মৎস্যসম্পদ ধ্বংস করে চলছে একটি চক্র। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ‘স্মার্ট প্যাট্রোলিং’ আর জেলে-বনজীবীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেও বাঘ, হরিণসহ বনের সম্পদ রক্ষা করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় অক্সিজেনের অফুরন্ত ভান্ডার দেশের ফুসফুসখ্যাত ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সুন্দরবন এখন অস্তিত্বসংকটে পড়েছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা