বরিশাল নথুল্লাবাদ টার্মিনাল
প্রবা প্রতিবেদক, বরিশাল
প্রকাশ : ০৫ মে ২০২৪ ২২:৩৮ পিএম
আপডেট : ০৫ মে ২০২৪ ২২:৪৫ পিএম
শ্রমিকদের সংঘর্ষের জেরে বরিশাল নগরীর কেন্দ্রীয় টার্মিনাল থেকে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার রুটে বন্ধ থাকা বাস চলা শুরু করেছে। সংঘর্ষের ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৭১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
রবিবার (৫ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার পর থেকে বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে বলে পুলিশ এবং শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জানিয়েছেন।
শনিবার সন্ধ্যার পর নথুল্লাবাদ এলাকার থ্রি-হুইলার স্ট্যান্ডে হামলা, শ্রমিকদের মারধর ও ভাঙচুরের ঘটনায় ৭১ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন লিটন মোল্লা, তার ভাই মুন্না মোল্লাসহ নামধারী ১১ জন। এছাড়া অজ্ঞাত আরও ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
রবিবার রাতে থ্রি-হুইলার আলফা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান দুলাল বাদী হয়ে এই মামলাটি করেন।
তিনি বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যান লিটন মোল্লা ও তার ভাই মুন্না মোল্লার নেতৃত্বে ৫০টি থ্রি হুইলার ভাঙচুর করেছে। তাদের হামলায় আহত হয়ে ২৮ জন থ্রি-হুইলার শ্রমিক বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাই আমি বাদী হয়ে মামলাটি করেছি।’
এর আগে, শনিবার বেলা ১২টার দিকে মাদারীপুর থেকে আসা অভ্যন্তরীণ রুটের একটি বাস নথুল্লাবাদ টার্মিনালে প্রবেশের সময় হর্ন দেয়। এতে বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি অসীম দেওয়ানের অনুসারী নুরুল ইসলাম বাবাইর ক্ষুব্ধ হয়ে চালক সোহাগ ও হেলপার সৌরভকে মারধর করেন। এনিয়ে বাস শ্রমিকদের একপক্ষ ক্ষুদ্ধ হয়ে বরিশাল জেলা সড়ক পরিবহন বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়, বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের কার্যালয়ে এবং টার্মিনালের কাউন্টারের সামনে ভাঙচুর করে। পরে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লা রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শ্রমিকরা পাশের থ্রি-হুইলার স্ট্র্যান্ডে হামলা করে অন্তত ৫০টি থ্রি-হুইলার, একটি খাবার হোটেলসহ দুইটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর করে। থ্রি-হুইলার চালকদেরও মারধর করা হয়। এ সময় থ্রি-হুইলার শ্রমিকরাও পাল্টা বাস ভাঙচুর শুরু করে। তখন পুলিশ টিয়ার শেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বাস শ্রমিকদের একটি গ্রুপ শনিবার দুপুরের পর থেকে টার্মিনাল এলাকায় অবস্থান নিয়ে বাস চলাচল বন্ধ রাখে। রবিবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি অসীম দেওয়ান ও বরিশাল জেলা সড়ক পরিবহন বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী কবিরের অনুসারী শতাধিক যুবক ধারাল অস্ত্র, জিআই পাইপ ও লাঠি নিয়ে বাস টার্মিনালে প্রবেশ করেন।
তারা টার্মিনালে অবস্থান নেওয়া পক্ষকে ধাওয়া দিলে পক্ষটি পালিয়ে যায়। কয়েকজন বাস শ্রমিককেও তারা মারধর করেন। পরে বাস টার্মিনাল অসীম দেওয়ান ও কাজী কবির অনুসারীরা দখলে নেন। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে দূরপাল্লার বাস চলাচল শুরু হয়। বর্তমানে বাস টার্মিনালে র্যাব-পুলিশের পাশাপাশি অসীম দেওয়ান ও কাজী কবিরের অনুসারীরা অবস্থান করেছেন। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
বরিশাল জেলা সড়ক পরিবহন বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী কবির বলেন, ‘বাস চলাচল শুরু হয়েছে। কোনো সমস্যা নেই।
মহানগর পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার ওসি মাকসুদ আলম বলেন, ‘বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লা রুটে বাস চলাচল করছে। টার্মিনাল এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। দুজনকে আটক করে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’