গাজীপুরে দুই ট্রেনের সংঘর্ষ
গাজীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৪ ১৯:১২ পিএম
আপডেট : ০৪ মে ২০২৪ ১৯:৩৭ পিএম
গাজীপুরের জয়দেবপুর স্টেশনে দুই ট্রেনের সংঘর্ষের পর উদ্ধার কাজ শেষ হয়েছে। প্রবা ফটো
গাজীপুরের জয়দেবপুর স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা তেলবাহী ট্রেনের সঙ্গে যাত্রীবাহী টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের সংঘর্ষের ৩১ ঘণ্টা পর ইঞ্জিন ও লাইনচ্যুত বগিগুলো উদ্ধার কাজ শেষ হয়েছে। শনিবার (৪ মে) সন্ধ্যা ৬টার দিকে উদ্ধার কাজ শেষ হয়। তবে দুর্ঘটনার পর থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা উত্তরবঙ্গ লাইনে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে। এতে দিনভর ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।
গত শুক্রবার সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে গাজীপুরের জয়দেবপুর জংশনের দক্ষিণে ছোট দেওড়া আউটার সিগন্যালে উত্তরবঙ্গগামী তেলবাহী ট্রেন ও ঢাকাগামী টাঙ্গাইল কমিউটার যাত্রীবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ট্রেনের চালকসহ চারজন আহত হয়েছেন। ঘটনার দুই ঘণ্টা পর শুক্রবার দুপুর ১টা থেকে ডাবল লাইনের ঢাকা-জয়দেবপুর রেলরুটের একটি লাইন দিয়ে চলাচল করে ট্রেন।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে এই সংঘর্ষের ঘটনার পর জয়দেবপুর স্টেশন দিয়ে ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিম রেললাইনে ট্রেন চলাচল প্রায় আড়াই ঘণ্টা বন্ধ থাকে। বিকালে রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়। এ ঘটনায় দুটি ট্রেনের ৮টি বগি লাইনচ্যুত ও চারজন আহত হন। এ ছাড়া টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের পেছনের অংশের অক্ষত বগিগুলো বিকল্প ইঞ্জিনের মাধ্যমে দুর্ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। রাতভর উদ্ধার অভিযানে তেলবাহী ওয়াগনের লাইনচ্যুত ৫টি বগির মধ্যে তিনটি বগি অপসারণ করে পাশের স্টেশনে সরিয়ে নেওয়া হয়।
এদিকে দুর্ঘটনার পর থেকে ময়মনসিংহ রুট ও উত্তবঙ্গ রুটে ট্রেন চলাচলে ব্যাপক শিডিউল বিপর্যয় দেখা দেয়। যার কারণে সকাল থেকে জয়দেবপুর জংশন, টঙ্গী স্টেশনসহ আশপাশের প্রায় প্রতিটি স্টেশনের যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়তে হয়। অনেকেই দীর্ঘক্ষণ ট্রেনের অপেক্ষায় বসে থেকে বিকল্প রাস্তায় ফিরেছেন গন্তব্যে।
আলতাব হোসেন নামে এক যাত্রী বলেন, ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে এমন খবর পেয়ে স্টেশনে এসে দীর্ঘ সময় বসেছিলাম। কখন ট্রেন আসবে তেমন নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারেন না। এজন্য বাধ্য হয়ে ফিরে যাচ্ছি।
শাহিনুর ইসলাম নামে ধীরাশ্রমের বাসিন্দা বলেন, ট্রেন দুর্ঘটনা হয়েছে, কিন্তু এত সময় লাগবে কেন। এটা অবশ্যই রেলওয়ের দুর্বলতার চিত্র ফুটে উঠেছে। আজ (শনিবার) অনেক যাত্রী দুর্ভোগে পড়েছে। তাদের মতো জয়দেবপুর জংশনে শত শত যাত্রীর ভিড় দেখা গেছে। স্টেশনে থাকা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাও ট্রেন চলাচল কখন স্বাভাবিক হবে, তার নিশ্চিত করতে পারছেন না।
জয়দেবপুর জংশনের স্টেশন মাস্টার হানিফ মিয়া বলেন, শুক্রবার ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। মধ্যরাতের পর উদ্ধার কাজ বন্ধ রাখা হয়। সকাল থেকে উদ্ধার কাজ শুরু করে শনিবার সন্ধ্যা ৬টার পর উদ্ধার কার্যক্রম শেষ হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে। কোনো ট্রেনই সময়মতো ছাড়া যায়নি। ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-উত্তরবঙ্গগামী লাইনের যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
জয়দেবপুর রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) সেতাফুর রহমান বলেন, দুর্ঘটনার কারণে ট্রেনের যে শিডিউল বিপর্যয় হয়েছিল তা এখনই (সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা) শেষ হয়ে যাবে। ট্রেন চলাচলও স্বাভাবিক হয়ে যাবে। দুর্ঘটনাটি যেকোনো একটি ভুলের কারণেই হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। তদন্ত শেষ হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উদ্ধার অভিযান দেরি হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এখানে তেলের ওয়াগন ছিল। যার কারণে খুবই সতর্কতার সঙ্গে উদ্ধার কাজ করতে হয়েছে।