× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

হত্যা মামলায় পুরুষশূন্য গ্রাম, পাকা ধান নষ্ট হচ্ছে ক্ষেতে

সাইফুল ইসলাম, মাদারীপুর

প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৪ ১৩:৪১ পিএম

মাদারীপুর সদর উপজেলার পূর্ব কলাগাছিয়া এলাকায় ধানের ক্ষেতে বসে আছেন দুই কৃষকের স্ত্রী। বৃহস্পতিবার তোলা। প্রবা ফটো

মাদারীপুর সদর উপজেলার পূর্ব কলাগাছিয়া এলাকায় ধানের ক্ষেতে বসে আছেন দুই কৃষকের স্ত্রী। বৃহস্পতিবার তোলা। প্রবা ফটো

মাদারীপুরে একটি হত্যা মামলাকে কেন্দ্র করে জমির বোরো ধান কাটতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বাদীপক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে। পুরুষশূন্য এলাকার নারীরাও জমিতে ধান কাটতে গেলে পড়তে হচ্ছে বাধা আর হুমকির মুখে। চলতি মৌসুমে ধান ঘরে তুলতে না পারলে লাখ লাখ টাকার ক্ষতির আশঙ্কা কৃষক পরিবারগুলোর। আসামিপক্ষকে শিক্ষা দিতেই জমিতে ধান কাটতে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি বাদীপক্ষের লোকজনের। শিগগির পাকা ধান কাটতে সব ধরনের সহযোগিতার কথা জানায় পুলিশ।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, জমিতে ধান পেকে নষ্ট হচ্ছে। প্রচণ্ড রোদে পুড়েও যাচ্ছে। ধান কাটতে না পারায় কান্নায় ভেঙে পড়েন কৃষকের পরিবার। এই দৃশ্য মাদারীপুর সদর উপজেলার পূর্ব কলাগাছিয়া এলাকার। রাধিকা হালদার হত্যাকাণ্ডের জেরে বাড়িছাড়া আসামিপক্ষের পরিবারের পুরুষ সদস্যরা। কয়েকশ বিঘা জমিতে চলতি মৌসুমে বোরো ধান পেকে নষ্ট হচ্ছে। প্রচণ্ড রোদে পুড়ে ঝরে পড়ছে ধানের দানা। নারীরা ধান কাটতে গেলেও হামলা চালানোর অভিযোগ মামলার বাদীপক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে। শ্রমিক দিয়েও ধান কাটতে দেওয়া হচ্ছে না। 

কৃষক সুকুমার ঘরামীর স্ত্রী শেফালী ঘরামী বলেন, একটি মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পরিবারের স্বামী ও ভাইদের আসামি করা হয়েছে। সবাই পলাতক। চাষ করা জমিতে ধান পেকে নষ্ট হচ্ছে, আমরা নারীরা জমিতে ধান কাটতে গেলেও আমাদের ওপর বাদীপক্ষ হামলা চালায়। এই ধান ঘরে তুলতে না পারলে সারা বছর না খেয়ে মরতে হবে।

প্রলাদ মণ্ডলের স্ত্রী বিনা রানী মণ্ডল বলেন, আমার স্বামী, দেবর ও ভাশুর সবাই বাড়িছাড়া। আমাদের পরিবারের লোকজন জমিতে চাষ করে গেছে, সেই জমিতে এখন ধান পেকে নষ্ট হচ্ছে। ধান কাটতে গেলে বাদীপক্ষ হামলা চালায়, পরে ভয়ে জমি থেকে উঠে চলে যাই।

দিলীপ বৈরাগীর স্ত্রী চম্পা বৈরাগী বলেন, বছরে একবার জমিতে ধান হয়। এই ফসল ঘরে তুলতে না পারলে ছেলেমেয়ে পরিবার নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে। ধান কাটতে এলে বাদীপক্ষের লোকজন লাঠিসোটা, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে। আমাদের ধাওয়া দিয়ে জমি থেকে তাড়িয়ে দেয়। আমরা এর থেকে পরিত্রাণ চাই।

রাধিকা হালদারের ভাইয়ের ছেলে বিপ্লব হালদার বলেন, আসামিদের পরিবারের কটূক্তিমূলক কথার কারণেই ধান কাটতে বাধা সৃষ্টি হয়েছে। জমির ধান জমিতেই থাকবে। অন্য কেউ ধান কাটতে পারবে না।

নিহত রাধিকা হালদারের পুত্রবধূ লক্ষ্মী রানী হালদার বলেন, আসামিদের পরিবারের নারী সদস্যরা অনেক গালিগালাজ করে, তাই ধান কাটতে দেওয়া হচ্ছে না। মামলার আসামি যারা, তারা সরাসরি ধান কেটে নিয়ে যাক, অন্য কেউ ধান কাটতে এলে এমনই হবে।

পূর্ব কলাগাছিয়া এলাকার ব্লক ম্যানেজার কামাল মাতুব্বর বলেন, পূর্ব কলাগাছিয়া এলাকায় মারামারিতে একজন লোক মারা গেছে। এই ঘটনায় মামলা হয়েছে, আসামিও আছে। আসামিপক্ষের লোকজন পলাতক। বাড়িতে শুধু নারী সদস্যরা রয়েছে। এই আসামিপক্ষের জমিতে ধান পেকে গেছে, কিন্তু বাদীপক্ষের লোকজন ধান কাটতে দিচ্ছে না। কয়েক দিনের মধ্যে সব ধান নষ্ট হয়ে যাবে। এতে লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হবে কৃষকের পরিবারের।

মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, জমিতে পাকা ধান ঘরে তুলতে বাধা দেওয়াÑ সেটাও আরেকটি অপরাধ। ধান কেটে নেওয়ার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান বলেন, ধান পেকে জমিতে নষ্ট হচ্ছে, সেই ধান কাটতে বাধা প্রদান করা হচ্ছে, এজন্য কৃষকের পরিবারের চাহিদা অনুযায়ী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

গত ১৪ মার্চ পিকনিকের গাড়িতে সামনে বসা নিয়ে মিল্টন হালদার ও প্রকাশ বৈরাগীর ঝগড়া হয়। পরদিন সকালে হালদার ও বৈরাগী বংশের লোকজন সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। আহতদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাধিকা হালদারকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চার দিন পর তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মিতালী হালদার বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় ৪০ জনের নামে একটি মামলা করেন। বর্তমানে পুলিশ মামলাটি তদন্ত করছে। মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে আদালতে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা