ভোলা সংবাদদাতা
প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৪ ১৩:৩১ পিএম
আপডেট : ০৪ মে ২০২৪ ১৫:৫২ পিএম
ভোলার মাছ বাজার। প্রবা ফটো
দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ইলিশ উৎপাদন হয় ভোলা জেলায়। এ জেলার মেঘনা-তেঁতুলিয়াসহ বিভিন্ন নদীতে দেশের প্রায় ৩৫ ভাগ ইলিশ পাওয়া যায়। সবচেয়ে বেশি ইলিশ আহরণকারী জেলার মানুষই বর্তমানে বাজারে গিয়ে ইলিশ কিনতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। বর্তমানে ভোলার বিভিন্ন হাটবাজারে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে প্রায় ২ হাজার টাকা কেজি দরে। ইলিশের দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ।
শুক্রবার (৪ মে) জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে সরেজমিনে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
গত ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার এলাকায় ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকারের ওপর ছিল দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা। যার কারণে হাটবাজারে দেখা মেলেনি ইলিশের। গত পহেলা মে থেকে নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা হয়েছেন নদীমুখী। দলবেঁধে শুরু করেছেন ইলিশ শিকার। এ সময় ভোলার বাজারগুলোয় ইলিশের ব্যাপক সরবরাহ থাকার কথা থাকলেও তেমনটা চোখে পড়েনি।
ভোলা শহরের কিচেন মার্কেটে ইলিশ কিনতে আসা কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খুব কম পরিমাণ ব্যবসায়ী ইলিশ বিক্রি করছেন। কিন্তু ইলিশের আকাশচুম্বী দামে তারা অবাক। এক কেজি সাইজের ইলিশের হালি ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা চাইছেন বিক্রেতারা।
এই মার্কেটে ইলিশ কিনতে এসেছেন মো. সোলেমান। তিনি বলেন, ইলিশ কিনতে এসেছিলাম এখানে। প্রায় সব ইলিশ বিক্রেতাই বেশি দাম চাচ্ছেন। অতিরিক্ত দামের কারণে অন্য মাছ কিনে বাড়ি ফিরছি।
তিনি আরও বলেন, ইলিশ নদীর মাছ। এটি চাষ করতে হয় না। কিন্তু তবুও বাজারে ইলিশ মাছের অতিরিক্ত দাম। যা আমাদের মতো সাধারণ ক্রেতাদের সাধ্যের বাইরে। সরকারিভাবে যদি নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হতো, তাহলে মাছ বিক্রেতারা নিজেদের মতো উচ্চমূল্যে বিক্রি করতে পারতেন না।
ইলিশ বিক্রেতা জয়নাল হোসেন বলেন, নদীতে জেলেরা বর্তমানে ইলিশ মাছ কম পাচ্ছেন। তাই ঘাটে ইলিশের তেমন সরবরাহ নেই। আমরা বাজারের খুচরা বিক্রেতারা খুব সকাল থেকে ঘাটে গিয়ে বসে থাকি। জেলেরা নদী থেকে ইলিশ নিয়ে আড়তদারের মাধ্যমে নিলামে বিক্রি করতে শুরু করলেও আমরা বিক্রেতারা প্রতিযোগিতা করে দাম হাঁকিয়ে ইলিশ ক্রয় করি। নিলামে ইলিশের দাম বেশি ওঠার কারণে আমাদের কেনা বেশি হয়ে যায়।
আরেক বিক্রেতা মাঈন উদ্দিন বলেন, খুচরা বাজারে চারশ গ্রামের ইলিশের হালি বিক্রি করছি পনেরো থেকে ষোলোশ টাকায়। পাঁচশ গ্রামের হালি ২ হাজার থেকে ২ হাজার চারশ টাকা, সাতশ থেকে নয়শ গ্রামের ওজনের ইলিশের হালি চার থেকে ছয় হাজার ও ১ কেজি থেকে তার একটু বেশি ওজনের ইলিশের হালি ৮ থেকে ৯ হাজার টাকায় বিক্রি করছি। কেনা বেশি হওয়ায় বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে আমাদের।
ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দে বলেন, বর্তমানে নদীতে জেলেদের জালে ইলিশ কম ধরা পড়ছে। যা চাহিদার চেয়ে অনেক কম। এজন্য দাম একটু বেশি। তবে আগামী সাত দিন পর অমাবস্যা। ওই সময় বৃষ্টি হলে ইলিশের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। আশা করছি তখন দাম সবার সাধ্যের মধ্যে চলে আসবে।