নোয়াখালী প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ মে ২০২৪ ১৬:৫৩ পিএম
অপহৃত ছাত্রীকে উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ছবি : সংগৃহীত
নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ‘অপহরণের’ আট দিন পেরিয়ে গেলেও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের চরমজিদ গ্রামের এ ঘটনা ঘটে।
অপহৃত ওই ছাত্রী উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চরমজিদ গ্রামের মো. গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে। অভিযুক্ত মো. রায়হান একই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব চরমজিদ গ্রামের আবুল কাশেম কালু বেপারির ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অপহৃত ছাত্রী স্থানীয় হাবিবিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত মো. রায়হান একই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। রায়হান বিভিন্ন সময় ওই ছাত্রীকে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার সময় প্রেম নিবেদনসহ বিভিন্ন প্রলোভন দেখাত। পরে কৌশলে গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৫টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে ওই ছাত্রীকে অপহরণ করে নেয়।
অপহৃত ছাত্রীর বাবা গিয়াস উদ্দিন বলেন, আজ আট দিন হয়েছে আমার মেয়েকে আমরা পাই না। এটা নিয়ে আমরা খুব দুশ্চিন্তায় আছি। আমার মেয়ের বয়স ১৪ বছর। অপহরণকারীর বয়স ১৮ বছর। আমার মেয়ে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। অপহরণকারী দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত ছেলের পরিবার আমাকে থানা থেকে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য জন্য বলছে। মেয়ে ও ছেলে নাকি আদালতের মাধ্যমে বিয়ে করেছে।
অভিযুক্ত স্কুলছাত্র রায়হানের বাবা আবুল কাশেম কালু বেপারি বলেন, আমার ছেলের সাথে আমি রাগ করে কথা বলি না। ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে তারা বিয়ে করার কথা জানাইসে। শুনেছি ছেলে মেয়ে নাকি টুমচর আছে। আমার ছেলের সে দিন ১০৪ ডিগ্রি জ্বর ছিল। কী কারণে তারা এসব করল আমার জানা নাই। থানা থেকে আমাকে বারবার ফোন দিচ্ছে। আমি বলেছি তাদের উদ্ধার করে যার যার পরিবারের কাছে তুলে দেওয়ার জন্য।
অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা চরজব্বর থানার পুলিশ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, দুই পরিবারের সাথে আমার যোগাযোগ আছে। তারা নাকি বিয়ে করেছে। ফেসবুকে ছবি দিয়েছে। ঘটনার পর থেকে আমরা ওই ছাত্রীকে উদ্ধারের চেষ্টা করছি।
নোয়াখালী নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সদস্য সচিব জামাল হোসেন বিষাদ বলেন, অপ্রাপ্ত বয়স্ক দুইজন ছেলে মেয়েকে কীভাবে কোর্টের মাধ্যমে বিয়ে দিল তা খতিয়ে দেখা দরকার। কোন প্রমাণের ভিত্তিতে এসব করল তা বের করা দরকার। আমাদের সমাজে টাকার বিনিময়ে এমন অনৈতিক কাজে যারা জড়িত তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। তাদের এখন বয়স কম নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেরা নেওয়ার সময় হয়নি। যারা অন্যায় কাজে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।
চরজব্বর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা অভিযোগের ভিত্তিতে বিভিন্ন স্থানে গিয়েছি। অপহৃত স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। অপহৃত ছাত্রীকে উদ্ধারে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। আশা করি খুব দ্রুত আমরা উদ্ধার করতে পারব।