স্কুলমাঠে কারখানার গাড়ি রাখার অনুমোদন প্রধান শিক্ষকের

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় মৌচাক সরকারি প্রাইমারি স্কুলের মাঠে ‘মানবিক কারণে’ পোশাক কারখানাকে গাড়ি রাখার অনুমোদন দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। এতে এলাকার শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা বন্ধ হয়ে গেছে। অনুমোদন নিয়ে মাঠটি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করছেন ডেক্কো গ্রুপের গ্লোবাল গার্মেন্টস লিমিটেড নামের একটি পোষাক কারখানা।

সরেজমিনে গত বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পর্যবেক্ষন করে দেখা গিয়েছে, স্কুলের মাঠে সারিবদ্ধ ভাবে রাখা হয়েছে বেশ কার্ভাড ভ্যান। কিছুক্ষণ পর পর দেখা গিয়েছে একটি গাড়ি বের হলে আরেকটি গাড়ি ঢুকে পড়ছে। 

স্থানীয়রা জানান, স্কুল বন্ধের দিন মাঠটিতে বেশি গাড়ি লক্ষ্য করা যায়। স্কুল খোলা থাকলে দিনের বেলা ২/১ টি গাড়ি রাখলেও প্রায় প্রতি রাতেই মাঠটিতে পার্কিং করে রাখা হয় মালবাহী কার্ভাড ভ্যান।

নাম প্রাকাশে অনিচ্ছুক গ্লোবাস গার্মেন্টসের একজন নিরাপত্তা প্রহরী প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, যেদিন স্কুল খোলা থাকে ওই দিন মাঠটিতে দিনে তেমন একটা গাড়ি রাখা হয় না। রাতেই রাখা হয়। তিনি জানান, স্কুলটির প্রধান শিক্ষিকা ও ম্যানেজিং কমিটির সাথে আলোচনা করে কারখানাটির শুরু থেকেই এই মাঠে গাড়ি রাখা হয়। স্কুল গেটের চাবি আমাদের কাছেই থাকে। 

এতে প্রধান শিক্ষকের সমালোচনা করেছেন এলাকাবাসী। একজন শিক্ষার্থী বলেন, কারখানার দারোয়ান গেটে তালা দিয়ে রাখে। এলাকায় আর কোন খেলার মাঠ না থাকায় আমরা বাসায় বসে মোবাইল বা কম্পিউটারে গেম খেলি।

কারখানাটির জেনারেল ম্যানেজার সৈয়দ মাহমুদ মোরশেদকে একাধিকবার ফোন করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায় নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানাটির আরেক কর্মকর্তা বলেন, স্কুল খোলা থাকাকালীন সময়ে মাঠে কোন গাড়ি রাখা হয় না। অডিট থাকলে স্কুল কতৃপক্ষের সাথে আলেচনা করে গাড়ি পার্কিং করা হয়।

স্কুলটির প্রথান শিক্ষিক কাওসার পারভিন অনুমোদন দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘কারখানা কতৃপক্ষ স্কুলটির চারপাশের বাউন্ডারি তৈরি করে দিয়েছে। তাই মানবিক কারনে তাদের গাড়ি পার্কিং করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।’

এবিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জায়েদা খানম বলেন, সরকারি স্কুল মাঠ দখলে নিয়ে কোন প্রতিষ্ঠান গাড়ি রাখতে পারবে না। আপনার মাধ্যমে বিষয়টি জানলাম। দ্রুত সময়ের মাঝে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।