সিরাজগঞ্জ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ মে ২০২৪ ১৯:০৫ পিএম
আপডেট : ০২ মে ২০২৪ ১৯:১২ পিএম
বৃহস্পতিবার দুপুরে বেলকুচি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন চেয়ারম্যান প্রার্থী বাদিউজ্জামন ফকির। প্রবা ফটো
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী বাদিউজ্জামন ফকির ও আমিনুল ইসলামের সমর্থকদের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলার অভিযোগ উঠেছে। পাল্টাপাল্টি এ হামলার এক পর্যায়ে বেলকুচি থানায় হামলা চালিয়েছে এক পক্ষ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরকারি কাজে বাঁধাদান ও থানার ভিতরে হট্রগোলের অভিযোগ পুলিশের করা মামলায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে পাল্টাপাল্টি এ হামলায় উভয়পক্ষই থানায় অভিযোগ করেছে।
বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে বেলকুচি প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান প্রার্থী বাদিউজ্জামন ফকির অভিযোগ করে বলেন, বুধবার রাত ১০টার দিকে বেলকুচি উপজেলার শাহপুর ডিএসএস স্কুল এলাকায় পথসভা শেষে বাড়ি ফেরার পথে বেলকুচির চালা সাত রাস্তার মোড় এলাকায় পৌঁছালে আমার গাড়ি বহরে হামলা চালানো হয়। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আমিনুল ইাসলামের উপস্থিতিতে এবং তার নির্দেশে হামলা চালানো হয়েছে। এতে আমার চার কর্মী আহত হন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমি ও আমার কর্মীরা আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার পর আত্মরক্ষায় বেলকুচি থানায় আশ্রয় নিলে সেখানেও হামলা চালানো হয়। বেলকুচি থানার সিসিটিভির ফুটেজ দেখলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যাবে। এছাড়া জামতৈল বাজারে আমার নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আমিনুল ইসলামের মদদে এই ঘটনা ঘটেছে।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মন্ডল তার কোম্পানীর বেতন ভুক্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম সরকারকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বানাতে চান। মমিন মন্ডলের ভাই আব্দুল আলিম মন্ডল ও জুবায়ের মন্ডল আমিনুলের পক্ষে সভা-সমাবেশ ও ভোট প্রার্থনা করছেন। হামলার ঘটনার পর থেকে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এবিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
তবে বদিউজ্জামান ফকিরের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিনুল ইসলাম বলেন, বাদিউজ্জামন ফকিকের কর্মী সমর্থকরা পরিকল্পিতভাবে রাতে আমার উপর হামলা করেছে। হামলায় আমার বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছে। নিজেরা হামলা করে এখন আমার উপর দোষ চাপানো হচ্ছে। আমার উপর হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। তারা মিথ্যা অভিযোগ করে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করছেন। নিশ্চিত পরাজয় জেনে তারা মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে।
এ ব্যাপারে বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান বলেন, রাতে চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিনুলের কর্মী সমর্থকরা থানায় এসে হট্রগোল ও সরকারি কাজে বাঁধা দেয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ২২ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত ১৫-২০ জনকে আসামি করে মামলা করে। এই মামলায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নির্বাচন সুষ্ট ও সুন্দর করতে কাজ করছে পুলিশ।
আগামী ৮ মে বেলকুচি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিন জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন, আমিনুল ইসলাম সরকার, বদিউজ্জামান ফকির ও মীর সেরাজুল ইসলাম।
প্রার্থীদের মধ্যে আমিনুল ইসলাম সরকার বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মন্ডলের মালিকাধীন শিল্প গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান কটন ক্লাব (বিডি) এর জিএম , বদিউজ্জামান ফকির এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক, মীর সেরাজুল ইসলাম সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের পিএস ও ঢাকার বনানী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মীর মোশারফ হোসেনের ছোট ভাই। বদিউজ্জামান ফকিরকে সমর্থন দিচ্ছেন সাবেক মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ বিশ্বাস।