নোয়াখালী প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ মে ২০২৪ ১১:৪৮ এএম
আপডেট : ০২ মে ২০২৪ ১২:১১ পিএম
ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি কখনও সড়কে মাটি ফেলে আবার কখনও গাছ ফেলে আটকে দেওয়ার চেষ্টা করেন মাটিখেকোরা। প্রবা ফটো
প্রশাসনের নজর এড়াতে রাতের বেলায় অবৈধভাবে কৃষিজমি থেকে ভেকু দিয়ে মাটি কাটে তারা। খবর পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় গেলে পড়তে হয় নানা প্রতিবন্ধকতায়। ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি কখনও সড়কে মাটি ফেলে আবার কখনও গাছ ফেলে আটকে দেওয়ার চেষ্টা করে তারা।
বৃহস্পতিবার (২ মে) ভোররাতে সোনাইমুড়ী উপজেলার বজরা ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটে। সড়কে মাটি ফেলে ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি আটকে দেওয়ার চেষ্টা করে মাটিখেকোরা। তাৎক্ষণিক অভিযান পরিচালনা করে জাফর আহাম্মদ নামে এক ব্যক্তিকে ১ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহিন মিয়া।
দণ্ডিত জাফর আহাম্মদ সোনাইমুড়ী উপজেলার আলোকপাড়া গ্রামের মৃত নুরুল হকের ছেলে
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার বজরা এলাকায় কৃষিজমি থেকে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। দিনের বেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের ভয়ে রাতভর মাটি কাটা হয়। মাটি কাটার অভিযোগে ঘটনাস্থলে যেতে চান সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহিন মিয়া। এ সময় সড়কে মাটি ফেলে ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি আটকে দেওয়ার চেষ্টা করেন মাটিখেকো জাফর আহাম্মদ। বিকল্প রাস্তা দিয়ে গিয়ে মাটি কাটার অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন মো. শাহিন মিয়া। মাটি কাটা ও বিক্রির অপরাধে জাফর আহাম্মদের থেকে ১ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এ সময় ভবিষ্যতে এমন অপরাধের পুনরাবৃত্তি করবেন না মর্মে মুচলেকা গ্রহণ করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় সোনাইমুড়ী থানা পুলিশ ও আনসার সদস্যরা সহযোগিতা করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল জব্বার বলেন, আগে দিনে মাটি কাটত এখন রাতে কাটে। মাটি কাটা চলছেই। কৃষিজমির মাটি ইটভাটাসহ বিভিন্ন স্থানে চলে যাচ্ছে। একটি চক্র সব মাটি নিয় যাচ্ছে। কৃষিজমির উপরিভাগের উর্বর মাটি কাটার কারণে জমিগুলোয় চাষাবাদ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ ছাড়া মাটি পরিবহনের কারণে এলাকার রাস্তাঘাট দ্রুত নষ্ট হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে। প্রশাসন অভিযানেও এসব মাটি কাটা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয় না। আমরা চাই এসব অবৈধ মাটি কাটা ও পরিবহন স্থায়ীভাবে বন্ধ হোক। এটা আমাদের প্রাণের দাবি।
সোনাইমুড়ী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহিন মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মাটি ও বালু ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০-এর ৪ ধারার অপরাধে জাফর আহাম্মদের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। তিনি এ কাজের পুনরাবৃত্তি করবেন না বলেও মুচলেকা প্রদান করেছেন। জনস্বার্থে উপজেলা প্রশাসনের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কানিজ ফাতেমা বলেন, দীর্ঘদিন থেকে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে অপরাধীরা কৃষিজমির মাটি কেটে বিক্রি করে আসছিলেন। অভিযোগ পেয়ে মাটি কাটার অপরাধে বিভিন্ন সময় ২০টি মামলায় সাড়ে ১১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া তাদের সতর্ক করা হয়েছে। কৃষিজমির উর্বর মাটি কাটার কারণে জমিতে চাষাবাদ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ ছাড়া মাটি পরিবহনের কারণে এলাকার রাস্তাঘাট দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।