× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

হিট স্ট্রোকে মরছে মুরগি, লোকসানের মুখে খামারিরা

রাশিদুল ইসলাম রাশেদ, কুড়িগ্রাম

প্রকাশ : ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:৫৩ পিএম

আপডেট : ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:২৪ পিএম

 হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি এড়াতে পোল্ট্রি মুরগির শরীরে পানি ছেটাচ্ছেন এক খামারি। প্রবা ফটো

হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি এড়াতে পোল্ট্রি মুরগির শরীরে পানি ছেটাচ্ছেন এক খামারি। প্রবা ফটো

সারা দেশে চলমান তীব্র তাপপ্রবাহে নাকাল জনজীবন। এতে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে মানুষের জীবনযাত্রা। আবার অতিরিক্ত গরমে হিট স্ট্রোকে যেমন মানুষ মারা যাচ্ছে তেমনি পোল্ট্রি ফার্মগুলোতে মারা যাচ্ছে অসংখ্য মুরগি। ফলে ব্যাপক লোকসানের আশঙ্কা করছেন খামারিরা।

কুড়িগ্রামের খামারগুলো ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকে শুরু হয় মুরগির হাসঁফাঁস অবস্থা। দুপুর হতে না হতে পরিস্থতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। খামারিরা অতিরিক্ত তাপমাত্রা থেকে মুরগিকে রক্ষা করার জন্য ফ্যানের বাতাস, স্প্রে, স্যালাইন ও লেবুর পানি দিচ্ছেন। তবে কোনো কিছুতেই কাজে আসছে না তাদের চেষ্টা। অতিরিক্ত গরমের কারণে মুরগি খাবার কম খাচ্ছে, তাই নির্ধারিত সময়ে ওজনও কম হচ্ছে বলে মনে করছেন এসব খামারি।

খামারিরা জানান, খামারে বাচ্চা তোলার প্রথম ২০ দিন কিছুটা রক্ষা করা গেলেও শেষ সপ্তাহে মুরগির হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেশি থাকে। আবহাওয়া স্বাভাবিক না হলে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়তে হবে। এমনিতেই করোনা পরবর্তী সময়ে কুড়িগ্রামের বেশিরভাগ খামারিই পুঁজি হারিয়ে উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছেন। যে দুয়েকজন এখনও ব্যক্তি উদ্যোগে উৎপাদন করছেন তারাও কয়েক দফায়  ফিড ও বাচ্চার দাম বৃদ্ধিসহ প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় এখন ঝুঁকির মধ্যে আছেন। চলমান দাবদাহে বৈরী আবহাওয়ায় খামারিদের কপালে নতুন করে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। 

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার জোদগোবোর্ধন গ্রামের খামারি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার সেটে তিন হাজার মুরগি করেছিলাম। ইতোমধ্যে ২০০ মুরগি হিট স্ট্রোকে মারা গেছে। প্রতিদিন খামারে ১০-১৫টি মুরগি মারা যাচ্ছে। আমি খামারে মুরগি রক্ষার জন্য লেবুর পানি, স্প্রে, স্যালাইন দিচ্ছি। কিন্তু খুব একটা কাজে আসছে না। আবহাওয়া প্রতিকূলে না এলে এবার বড় ধরনের লোকসানে পড়তে হবে।’

নাককাটি এলাকার খামারি মজিদ বানিয়া বলেন, ‘বর্তমানে আমার খামারে যে মুরগি আছে অতিরিক্ত গরমের কারণে খাবার কম খাচ্ছে। আর খাবার কম খাওয়ার কারণে ওজনও অনেক কমে গেছে। আমরা খামারিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি।’ 

হরিশ্বর গ্রামের খামারি মেহেদী হাসান মিলন বলেন, ‘আমরা খামারিরা কোনোরকম টিকে আছি। ফিডের দাম বৃদ্ধি, বাচ্চার দাম বৃদ্ধি, ওষুধের দাম বৃদ্ধি। সবকিছু মিলিয়ে আমরা করুণ পরিস্থিতিতে আছি। পোল্ট্রি শিল্প এখন ধ্বংসের প্রান্তে। বড় বড় কোম্পানির সিন্ডিকেটের কারণে আমরা এখন অসহায় অবস্থায়। বাজারে যখন মুরগির দাম বাড়ে তখন হইচই অবস্থা পড়ে। কিন্তু ফিডের দাম, বাচ্চার দাম বাড়লে সেটা নিয়ে কথা হয় না।’

খামারিদের সংগঠনের সভাপতি রমজান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে  বলেন, ‘আমাদের সংগঠনে দুই হাজারের ওপর খামারি ছিল। বর্তমানে ৫০টিরও কম খামারি কোনোরকম তাদের ব্যবসায় টিকে আছে। বৈশ্বিক আবহাওয়া পরিবর্তন, সেই সঙ্গে ফিডের দাম বৃদ্ধি, বাচ্চার দাম বৃদ্ধিসহ নানা কারণে তারা এখন পথে বসে গেছে। সরকারের উচিত এসব প্রান্তিক খামারিকে সহজ শর্তে ঋণ দিয়ে,  প্রণোদনা দিয়ে তাদের উৎপাদনে ফেরানোর ব্যবস্থা করা।’

কুড়িগ্রাম  প্রাণিসম্পদ বিভাগের উপপরিচালক (কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র) মো. আবদুল আজিজ প্রধান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন,  ‘যে তাপপ্রবাহ চলছে খামারিদের পর্যাপ্ত ফ্যানের ব্যবস্থা করতে হবে। শেডের পর্দা ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত খুলে রাখা, বস্তা ভিজিয়ে টিনের চালের ওপর দেওয়া, পানির সঙ্গে ইলেকট্রনিক ও ভিটামিন সি পরিমাণমতো দেওয়াসহ নানা পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা