গোপালগঞ্জ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ২৩:০১ পিএম
অজ্ঞান পার্টির মূলহোতা আমির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। প্রবা ফটো
গোপালগঞ্জে ইতালি প্রবাসী হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই। ৩ বছর আগে ইতালি প্রবাসী বাচ্চু শেখ অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে প্রাণ হারান। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার অজ্ঞান পার্টির মূলহোতা আমির হোসেন তিন বছর আগের ওই ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন আদালতে।
রবিবার (২৮ এপ্রিল) গোপালগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রুবেল শেখের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আমির হোসেন। তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
আমির হোসেন বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার ভীমের পাড় (মাহিলারা) গ্রামের মৃত শুকুর আলীর ছেলে। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় চেতনা নাশক ঔষধ ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশ থেকে ফেরত মানুষকে অজ্ঞান করে মালামাল চুরির ঘটনায় ১৩টি মামলা রয়েছে।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে গোপালগঞ্জের পিবিআই এর পুলিশ সুপার মো. আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, ২০২১ সালের ৯ মার্চ ভোরে ইতালি থেকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। এ সময় আমির হোসেনসহ অজ্ঞান পার্টির ৩ সদস্য বাচ্চু শেখের পিছু নেয়। আব্দুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে বাচ্চু শেখ গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার তপারকান্দি গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে একটি বাসে ওঠেন। তাকে ফলো করে অজ্ঞান পার্টির ঔই ৩ সদস্য আবদুল্লাহ পুরে গিয়ে বাচ্চুর শেখের পাশে বাসের তিনটি সিটে অবস্থান করে।
তিনি বলেন, বাসে বসে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা বাচ্চু শেখের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলে। বাচ্চু শেখের কাছে বাংলাদেশের কোনো মোবাইল সিম না থাকায় আরিচা ফেরিঘাটে পৌঁছে অজ্ঞান পার্টির এক সদস্যের ফোন দিয়ে বাচ্চু শেখ তার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে কথা বলেন। এরপর কৌশলে বিস্কুটের মধ্যে নেশা জাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে বাচ্চু শেখকে খাইয়ে অজ্ঞান করে তার লাগেজ ও মূল্যবান মালামাল নিয়ে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দের মোড়ে নেমে যায় অজ্ঞান পার্টির ৩ সদস্য। পরে অচেতন অবস্থায় বাচ্চু শেখকে বাসের সুপারভাইজার মিরাজ খান বাচ্চুর শেখের স্ত্রীর কাছে বুঝিয়ে দেয়।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাচ্চু শেখের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার ৫ দিন পর বাচ্চুর স্ত্রী রাবেয়া বেগম অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মুকসুদপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।
পুলিশের হেডকোয়ার্টার এর আদেশে গত ২০২১ সালের ১৪ এপ্রিল বাচ্চু শেখ হত্যা মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় গোপালগঞ্জ পিবিআইকে।
বিভিন্ন সূত্র ধরে গত ৫ মার্চ কামাল হোসেনকে গোপালগঞ্জ পিবিআই অফিসে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমির হোসেনসহ মোট তিনজন আসামিকে শনাক্ত করা হয়।