× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বিএসটিআই চট্টগ্রাম কার্যালয়

কার্যালয় আছে সক্ষমতা নেই

হুমায়ুন মাসুদ, চট্টগ্রাম

প্রকাশ : ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ১৩:১৪ পিএম

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

২০২২ সালের অক্টোবরে হেলমেটের মান চূড়ান্ত করে বিএসটিআই। এরপর সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে মোটরসাইকেল হেলমেট উৎপাদন, আমদানি ও বিক্রির ক্ষেত্রে মান সনদ থাকা বাধ্যতামূলক করে সংস্থাটি। দেড় বছর আগে মান সনদ থাকা বাধ্যতামূলক করলেও হেলমেটের মান পরীক্ষার সুযোগ নেই বিএসটিআই চট্টগ্রাম কার্যালয়ে। তাই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি করা হেলমেটের মান পরীক্ষার জন্য ঢাকায় দৌড়াতে হচ্ছে আমদানিকারকদের। 

শুধু হেলমেট নয়, বিএসটিআইয়ের মান সনদ বাধ্যতামূলক করা ২৭৩টি পণ্যের মধ্যে ১৫৯টি পণ্যের মান পরীক্ষা করার সুযোগ নেই চট্টগ্রামে। তাই এসব পণ্যের মান পরীক্ষার জন্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে দৌড়াতে হয় ঢাকায়। অথচ দেশে আমদানি করা পণ্যের প্রায় ৮০ শতাংশই আসছে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। 

আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, বিদেশ থেকে আসার পর কাস্টমস থেকেই আমদানি পণ্যের নমুনা পরীক্ষা করে ছাড়পত্র দেয় বিএসটিআই। প্রতিষ্ঠানটির ছাড়পত্র না পেলে পণ্য ছাড় করা যায় না। কিন্তু আমদানি করা অধিকাংশ পণ্য চট্টগ্রামে পরীক্ষা করার সুযোগ না থাকায় পণ্যের মান পরীক্ষার জন্য আমাদের ঢাকায় দৌড়াতে হয়। এতে সময়ক্ষেপণ হওয়ায় লোকসান গুনতে হয় আমদানিকারককে। শুধু দীর্ঘসূত্রতা হয় তা নয়, চট্টগ্রামে পরীক্ষার সুযোগ না থাকায় নানা রকম ভোগান্তিতে পড়তে হয় বলে অভিযোগ করেছেন আমদানিকারকরা।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ওমর হাজ্জাজ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘পণ্যের মান পরীক্ষা নিয়ে আমদানিকারকরা নানা ভোগান্তিতে পড়েন। আমদানি করা অধিকাংশ পণ্যের পরীক্ষা ঢাকা অথবা অন্য জেলায় পাঠিয়ে করতে হয়। এতে একদিকে সময়ের অপচয় হয়, অন্যদিকে আমদানিকারকরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন। পণ্য পরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠাতে হয়। আমদানি করা পণ্য দ্রুত খালাসের জন্য কাস্টমসসংশ্লিষ্ট সেবাগুলো সপ্তাহে সাত দিন খোলা থাকে। কিন্তু শনিবার নমুনা দিতে গেলে অফিসে কাউকে পাওয়া যায় না। কাস্টম হাউসে একটি বড় ল্যাব আছে, সেখানেও একই অবস্থা। ল্যাবে মাত্র একজন পরীক্ষক থাকায় ঠিক সময়ে কোনো পণ্য পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া যায় না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএসটিআইয়ের সেবা দেখলে মনে হয় আমরা এখনও আশির দশকে আছি। অথচ এখন চলছে ২০২৪ সাল। এখন সব সেবা ওয়ানস্টপ হওয়ার কথা। চট্টগ্রামে সব ধরনের পণ্যের পরীক্ষা করার সুযোগ থাকার কথা। কারণ আমদানি পণ্যের ৮০ শতাংশই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি হচ্ছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য দেশে এত এত উন্নয়নের পরও চট্টগ্রামে সেই সক্ষমতা গড়ে ওঠেনি।’ 

বিএসটিআই চট্টগ্রাম কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটিতে দুটি উইং রয়েছে। এর রসায়ন পরীক্ষণ উইং ও পদার্থ পরীক্ষণ উইং। এই দুটি উইংয়ে মোট ১১৪টি পণ্যের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে রসায়ন পরীক্ষণ উইংয়ে ৯২টি পণ্যের পরীক্ষা করা যায়। অন্যদিকে পদার্থ উইংয়ে নমুনা পরীক্ষার করার সক্ষমতা আছে মাত্র ২২টি পণ্যের। এর মধ্যে ১৭টি পণ্যের পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষার সুযোগ আছে। বাকি পাঁচটি পণ্যে পিবিসি ইনসুলেটেড ক্যাবল, পাওয়ার ক্যাবল, পিবিসি ইনসুলেটেড প্লেক্সিবল কর্ড, অ্যানামলড কপার কন্ডাক্টর এবং এসি এনার্জি মিটারের আংশিক পরীক্ষা চট্টগ্রামে করা যায়। 

সক্ষমতা না থাকায় এই ১১৪টি পণ্যের বাইরে বাকি ১৫৯টি পণ্যের পরীক্ষার জন্য নমুনা তাদের ঢাকা কার্যালয় না অথবা যেই জেলায় ওই পণ্য পরীক্ষার সক্ষমতা আছে সেই জেলায় পাঠাতে হয়। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, সক্ষমতা না থাকায় ২০২৩ সালে ৩ হাজার ২৪৮টি নমুনা পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠাতে হয়েছে। ১৪ মার্চ পর্যন্ত চলতি বছরের প্রথম আড়াই মাসে ৭৬৩টি নমুনা পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠিয়েছে বিএসটিআই চট্টগ্রাম কার্যালয়। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অভিযোগ করেন, বিএসটিআই চট্টগ্রাম কার্যালয় এবং কাস্টম হাউসের ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার শতভাগ সক্ষমতা না থাকায় নমুনা পরীক্ষার জন্য আমদানিকারকদের বছরে অন্তত দুই হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ করতে হচ্ছে। পরীক্ষার জন্য পাঠানো নমুনার রিপোর্ট অনেক সময় এক মাসেও পাওয়া যায় না। তাই পণ্যও খালাস করা যায় না। এতে আমদানিকারককে অতিরিক্ত পোর্ট বিল, শিপিং চার্জ বহন করতে হয়।

তিনি আরও বলেন, আমার একটি পণ্য পরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠানোর পর এক মাস ১০ দিনেও রিপোর্ট পাইনি। ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওই পণ্যটি পরীক্ষার জন্য কাস্টমস থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট ও কুয়েটে পাঠানো হয়। এক মাস ১০ দিন আগে নমুনা পাওয়ার পরও এখন পর্যন্ত রিপোর্ট হাতে পাইনি। যদি ওই পণ্যের পরীক্ষা চট্টগ্রামে করা সম্ভব হতো, তাহলে এক সপ্তাহের মধ্যেই হয়তো পেয়ে যেতাম। পরীক্ষার রিপোর্ট না পাওয়ায় এক মাস ধরেই পণ্যটি খালাস করা যাচ্ছে না। 

সক্ষমতা না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসটিআই চট্টগ্রাম কার্যালয় অফিসের প্রধান উপপরিচালক মো. মাজহারুল হক প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘চট্টগ্রামে একটি পূর্ণাঙ্গ ল্যাব স্থাপনের জন্য যেই অবকাঠামো দরকার, সেটি এখানে নেই। বিএসটিআই ভবনটি এখনও নির্মাণাধীন। ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হলে সেখানে অত্যাধুনিক ল্যাব স্থাপন করা হবে। তখন আমাদের এখানে নমুনা পরীক্ষার জন্য এখন যেই সক্ষমতা আছে সেটি আরও বেড়ে যাবে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা