জয়পুরহাট প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ২১:৪৭ পিএম
জয়পুরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের তৃতীয় তলার বারান্দায় তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারীকে আইনজীবীর লাথি মারার এক ঘটনায় পাল্টাপাল্টি দুটি মামলা হয়েছে। গত বুধবার রাতে ৪৫ মিনিটের ব্যবধানে মামলা দুটি সদর থানায় নথিভুক্ত করা হয়। কোনো মামলায় কোনো আসামি এখনো গ্রেপ্তার হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
একটি মামলার বাদি জয়পুরহাট সদর উপজেলার গঙ্গাদাশপুর গ্রামের আজিজুল ইসলাম। তার মামলায় আইনজীবী মাসুম রব্বানী মন্ডলকে আসামী করা হয়েছে। ওই আইনজীবীর বিরুদ্ধে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারীর পেটে লাথি মারা ও স্বজনদের মারধরের অভিযোগ আনা হয়েছে। অন্য মামলার বাদি জয়পুরহাট জজ আদালতের আইনজীবী মাসুম রব্বানী মন্ডল নিজেই। তার মামলায় তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারী ও তার স্বামী, বাবা ও শ্বশুরসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। সেখানে তার মক্কেলের শিশুকন্যকে অপহরণের চেষ্টা ও মারধর করে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এদিকে ন্যায় বিচার চেয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন অন্তঃসত্ত্বা নারীর বাবা আজিজুল ইসলাম। আজিজুলের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান তার ভাই ফারুক হোসেন।
তিনি বলেন, তার ভাতিজি রিনা খাতুনের স্বামী সদর উপজেলার পুরানাপৈল গ্রামের নুর আলম। নূর আলমের প্রথম স্ত্রীর আট বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। নূর তার মেয়েকে জিম্মায় নেওয়ার জন্য জয়পুরহাট পারিবারিক সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন। মামলাটি বিচারাধীন। গত ১৮ এপ্রিল সেই মামলার শুনানি শেষে নুর তার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর কাছে মেয়েকে দেখতে যান। কিন্তু তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর আইনজীবী মাসুম তাকে বাধা দেন। একপর্যায়ে আইনজীবী মাসুম ক্ষিপ্ত হয়ে নুরকে মারধর করেন। স্বামীকে মারধর করতে দেখে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা রিনা গিয়ে তাকে রক্ষার চেষ্টা করেন। তখন আইনজীবী মাসুম তার পেটে লাথি মারেন।
একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, একজন আইনজীবী ওই নারীর পেটে নাথি মারছেন। তখন ওই নারী বারান্দায় পড়ে যান। এরপর আবারও লাথি মারার চেষ্টা করেন ওই আইনজীবী। তখন এক যুবক দৌড়ে এসে আইনজীবীকেও লাথি মারেন।
ঘটনার বিষয়ে আইনজীবী মাসুম বলেন, ‘নারীকে লাথি মারার এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমার মামলা বিস্তারিত লেখা আছে।’
জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ূন কবির এ বিষয়ে বলেন, আদালতে মারধরের ঘটনায় দুই পক্ষ থেকে থানায় মামলা হয়েছে। এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।