শরীফ স্বাধীন, মাগুরা
প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:৫৬ পিএম
বাঁ দিক থেকে রানা আমীর উসমান, মো. রেজাউল ইসলাম ও মো, জাহাঙ্গীর হোসাইন। ছবি কোলাজ : প্রবা
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মাগুরা সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাঁচ প্রার্থী। তাদের সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। নির্বাচন সামনে রেখে এসব প্রার্থীর পক্ষে বিভক্ত হয়ে পড়ছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। সবচেয়ে বেশি বিভক্ত হয়েছেন বর্তমান এবং সাবেক এমপির সমর্থন দেওয়াকে কেন্দ্র করে। আর এই দুই প্রার্থীর পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের অবস্থান দৃশ্যমান হয়েছে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রানা আমির ওসমান ও প্রচার সম্পাদক মো. রেজাউল ইসলামের মধ্যে। এর পেছনে কারণ হচ্ছে এই দুই নেতাকে সমর্থন দিচ্ছে আওয়ামী লীগের শক্ত দুটি পক্ষ।
বর্তমান সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. রেজাউল ইসলাম মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখরের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রকশ্যে এই প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন সাবেক এই সংসদ সদস্য।
গত সোমবার রাতে শহরের ঢাকা রোড এলাকায় সাইফুজ্জামান শিখরের বাসভবনের কার্যালয়ে হওয়া এক বৈঠকের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই বৈঠকে সাইফুজ্জামান শিখর রেজাউল ইসলামের পক্ষে ভোটের মাঠে নামতে নেতাকর্মীদের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনটা আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ হঠাৎ করে কিছু লোকজন মনে করেছে গত নির্বাচনে আমাকে মনোনয়ন না দেওয়ায় তারা স্বাধীন হয়ে গেছে। তারা মাগুরাটাকে তাদের মতো করে ব্যবহার করতে চায়। মাগুরায় আওয়ামী লীগের যে ঐক্য ছিল তাতে তাদের ভালো লাগেনি।’
মূলত চেয়ারম্যান প্রার্থী রানা আমির ওসমানকে উদ্দেশ করে এসব কথা বলেন সাইফুজ্জামান শিখর। জানতে চাইলে রানা আমির ওসমান বলেন, ‘গত সোমবার দেখলাম মাগুরার কিছু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে ডেকে নিয়ে সে প্রকাশ্যে একজন চেয়াম্যান প্রার্থীকে সমর্থন করে, তিনি যে একটা গ্রুপ নেতা এটা প্রমাণ করেছেন। মাগুরার আওয়ামী লীগের বিভক্তির জন্য উনি (সাইফুজ্জামান শিখর) ব্যক্তিগতভাবে দায়ী থাকবেন।’
জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বলছেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ঘিরে মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসান তার অবস্থান এখনও স্পষ্ট করেননি। তবে তার অনুসারী হিসেবে পরিচিতি আওয়ামী লীগ নেতাদের বড় একটি অংশ প্রকাশ্যে রানা আমির ওসমানের পক্ষে মাঠে নেমেছেন। গত সোমবার দুপুরে পৌরসভার তৃতীয় তলায় সম্মেলন কক্ষে জেলা যুবলীগের একাংশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন রানা আমির ওসমান। জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র খুরশীদ হায়দার টুটুলসহ দলীয় অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সেই বৈঠকে উপস্থিত নেতাকর্মীদের বেশিরভাগই সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ কুমার কুন্ডু বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নির্দিষ্ট কোনো প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার দলীয় নির্দেশনা নেই। তবে অনেক প্রার্থী বিভিন্ন জায়গায় দলকে ব্যবহারের চেষ্টা করছে। কেউ যদি ব্যক্তিগতভাবে নেতাকর্মীদের ডেকে দলের ক্ষমতা ব্যবহার করে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে চায় তবে সেটা দলের সাংগঠনিক নীতিবিরোধী। এতে জেলা আওয়ামী লীগের আপত্তি আছে।’