রাজশাহী অফিস
প্রকাশ : ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:৪৯ পিএম
আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:৩৭ পিএম
প্রতীকী ফটো
রাজশাহীতে ১০ দিনের ব্যবধানে পদ্মা নদীতে ডুবে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। যাদের প্রত্যেকের বয়সই ৮ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। ১৪ থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত রাজশাহী জেলার বাঘা, পবা উপজেলাসহ নগরীর পদ্মা নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এদের একজন মাছ ধরতে গিয়ে আর বাকি সকলেই নদীতে দলবদ্ধ হয়ে গোসল করতে গিয়ে ডুবে মারা যায়। পরে দমকল বাহিনীর ডুবুরি দল গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
পরিবার ও বন্ধুদের দেওয়া তথ্যমতে, তারা বন্ধুদের সঙ্গে নদীতে আনন্দ করে গোসলে নামে। তবে সাঁতারে পারদর্শী না থাকায় তারা ডুবে মারা যায়। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে অভিভাবকসহ শিশু-কিশোরদের সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে দমকল বাহিনী।
রাজশাহীর দমকল বাহিনীর দেওয়া তথ্যমতে, ১৪ এপ্রিল বাঘার মানিকের চর এলাকার পদ্মা নদীতে গোসল করতে নেমে আট বছরের জান্নাত খাতুন ও ১২ বছরের ঝিলিক খাতুন মারা যায়। পরদিন শিশু জান্নাতের মরদেহ উদ্ধার করা গেলেও ঝিলিক এখনও নিখোঁজ। এ ঘটনার পাঁচ দিন পর ১৯ এপ্রিল বাঘা উপজেলার পদ্মা নদীর মুর্শিদপুর এলাকার খেয়াহাটের পদ্মায় ডুবে মারা যায় উপজেলার খায়েরহাট গ্রামের সুজন আলীর ১০ বছরের ছেলে সিয়াম হোসেন সজিব। ২০ এপ্রিল একই উপজেলার চরাঞ্চলের চকরাজাপুর ইউনিয়নের পদ্মা নদীর খেয়াঘাট এলাকায় টিনের ডুঙ্গা নৌকা ডুবে নিখোঁজ হয়েছে আসাদ হোসেন নামে ১৮ বছরের এক যুবক। আসাদের মেজো ভাই কায়েস উদ্দিন জানান, টিনের তৈরি ডুঙ্গা নৌকা নিয়ে চকরাজাপুর পদ্মা নদীর খেয়াঘাটের পশ্চিমে মাছ ধরতে যাওয়ার সময় নদীর মাঝামাঝি স্থানে গিয়ে স্রোতে ডুবে যায় আসাদ।
২১ এপ্রিল রাজশাহী নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানাধীন হাড়ুপুর এলাকায় পদ্মা নদীতে গোসল করতে নেমে শিক্ষার্থীসহ দুজন নদীতে ডুবে মারা যায়। তারা হলো, নগরীর সায়েরগাছা এলাকার বাপ্পি ও মনির হোসেন। বাপ্পি রাজশাহী কোর্ট অ্যাকাডেমি স্কুল থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।
এ ঘটনার দুই দিন পর ২৩ এপ্রিল দুপুরে রাজশাহীর পবা উপজেলার শ্যামপুর এলাকায় পদ্মা নদীতে গোলস করতে নেমে তিন কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। নিহত তিনজনের বয়স ১২ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে এবং তারা স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। নিহতরা হলো, যুবরাজ (১২), নুরুজ্জামান (১৪) ও আরিফ (১৪)। মাদ্রাসাপড়ুয়া সাত বন্ধু নদীতে গোসলে যায়। সাঁতার কাটার একপর্যায়ে চারজন নদীর তীরে ফিরে আসতে পারলেও এই তিনজন ডুবে যায়।
রাজশাহী সদর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবু সামা বলেন, ‘রাজশাহীতে অতিমাত্রায় গরম পড়ছে। এই গরমে সবাই নদী বা পুকুরে গোসলে নামছে। বন্ধুরা মিলে আনন্দ করছে, বহু সময় ধরে নদীর পানিতে থাকছে। এ সময় তারা সাঁতার কাটে। তবে সবাই সাঁতারে সমান পারদর্শী হয় না। এমন অবস্থায় যারা সাঁতারে দুর্বল তারা তীরে ফিরে আসতে না পারলে ডুবে যাচ্ছে।’ এসব ঘটনা থেকে অভিভাবক ও শিশু-কিশোরদের শিক্ষা নিতে বলেন দমকল বাহিনীর এই কর্মী।