× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

তিন বলয় আওয়ামী লীগে মাঠে আছে বিএনপিও

সাইফুল হক মোল্লা দুলু, মধ্যাঞ্চল

প্রকাশ : ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:০৬ পিএম

আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:৫৩ পিএম

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জের ১৩ উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয় কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলাকে। এখানে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মাঠে জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন জমা দেওয়া চার প্রার্থী। এদের মধ্যে তিনজনই আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা। কিশোরগঞ্জের ১৩ উপজেলার মধ্যে এই সদর উপজেলাতেই ব্যাপক প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। আগামী ৮ মে প্রথম ধাপের অন্তর্ভুক্ত এ উপজেলায় নির্বাচন হবে।

আওয়ামী লীগের তিন প্রভাবশালী প্রার্থী হলেনÑ বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মামুন আল মাসুদ খান, সদর উপজেলা শাখার সভাপতি ও বৌলাই ইউপি চেয়ারম্যান মো. আওলাদ হোসেন এবং দলের উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আবদুস সাত্তার। এখানে আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নাজমুল আলম।

সংসদ নির্বাচনেও স্থানীয় আওয়ামী লীগ ছিল বিভক্ত 

এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-১ (কিশোরগঞ্জ সদর-হোসেনপুর) আসনে প্রয়াত জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলামের পরিবারের সদস্যরা সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েন। কিশোরগঞ্জ-১ আসনে নৌকার প্রার্থী সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি অল্প ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে দেন প্রতিদ্বন্দ্বী বড় ভাই স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগল) মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলামকে। তাদের এই দ্বন্দ্ব সারা জেলার রাজনীতিতেও প্রভাব ফেলেছে। 

জাতীয় নির্বাচনে এ আসনে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য দল ও দলের বাইরে সবচেয়ে ব্যাপক সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মসিউর রহমান হুমায়ূন। যদিও শেষ পর্যন্ত তিনি মনোনয়ন পাননি। কিন্তু তার বিশাল অনুসারী রয়েছে কিশোরগঞ্জ ও হোসেনপুরে। আবার সাবেক রাষ্ট্রপতির মেজো ছেলে রাসেল আহমেদ তুহিনও এখানে প্রার্থী ছিলেন। মনোনয়ন না পাওয়ার পর তিনি সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপির পক্ষে কাজ করে তাকে এমপি নির্বাচিত করেন।

মামুনের পক্ষে কাজ করছেন এমপির সমর্থকরা 

সরেজমিনে জানা গেছে, এমপি সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি নির্বাচনী বিধি, নিয়ম ও বাধ্যবাধকতায় উপজেলা নির্বাচনে মাসুদ আল মামুনের পক্ষে সরাসরি কাজ করতে পারছেন না। তবে তার সমর্থকরা মামুনের পক্ষেই কাজ করছেন। কারণ এমপি নির্বাচনের সময় এমপি প্রার্থী লিপির প্রতিটি নির্বাচনী জনসভায় মামুন আল মাসুদ খান অংশ নিয়েছেন। নিরলস পরিশ্রম করেছেন। এ কারণে প্রতিদান হিসেবে এমপি সৈয়দা লিপি তার পক্ষেই অবস্থান নেবেন বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা। তা ছাড়া মামুন আল মাসুদ খান আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক উপকমিটির সদস্য অধ্যক্ষ শরীফ সাদীরও সমর্থন পাবেন। প্রসঙ্গত, অধ্যক্ষ শরীফ সাদী দীর্ঘদিন প্রায় ২৫ বছর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তারও রয়েছে বিপুল সমর্থক।

মাসুদ আল মামুন খান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘নির্বাচনের পর থেকে দলের জন্য কাজ করে এসেছি। সব সময় জনগণের পাশে ছিলাম। জনগণ নিশ্চয়ই আমাকেই মূল্যায়ন করবে।’ 

বাড়তি সুবিধাজনক অবস্থান আওলাদ হোসেনের 

সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বৌলাই ইউপি চেয়ারম্যান মো. আওলাদ হোসেনও এখানে প্রভাবশালী বলয়ের সমর্থনপুষ্ট অন্যতম প্রার্থী। গত সংসদ নির্বাচনে মো. আওলাদ হোসেন জোর তৎপরতা চালিয়েছেন মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলামের পক্ষে। এমপি হিসেবে লিপি নির্বাচনী প্রচারাভিযানে অংশ নিতে পারছেন না, কিন্তু সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলামের সেই সীমাবদ্ধতা নেই। আবার চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আওলাদ হোসেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলামের চাচাতো ভাই আওয়ামী নেতা সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুর ঘনিষ্ঠজন। প্রতিটি ইউনিয়ন-ওয়ার্ডে সৈয়দ টিটুর সমর্থক ও অনুসারী রয়েছেন। তাই এক্ষেত্রে আওলাদ কিছুটা বাড়তি সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছেন।

মো. আওলাদ হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, দলের পরীক্ষিত একজন কর্মী হিসেবে সাধারণ ভোটাররা আমার সঙ্গে রয়েছেন। ভোটাররাই আমার শক্তি। আগামী ৮ মে তা প্রমাণিত হবে।

‘বড় ফ্যাক্টর’ অবস্থান নিতে পারে আবদুস সাত্তারের পক্ষে

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আবদুস সাত্তার সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের মেজো ছেলে রাসেল আহমেদ তুহিনের ঘনিষ্ঠজন। রাসেল আহমেদ তুহিন গত উপজেলা নির্বাচনে মাঠে নামার কারণে আবদুস সাত্তার ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হন। মসিউর রহমান হুমায়ূনের সমর্থকরাও উপজেলা নির্বাচনে একটি বড় ফ্যাক্টর। তারা কার পক্ষে যাবেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। যদি হুমায়ূনের লোকজন আবদুস সাত্তারের পক্ষে অবস্থান নেন, তবে কার বিজয় হবে, তা ফলাফল ঘোষণার আগে বলা মুশকিল। 

আবদুস সাত্তার প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, বিপুল ভোটে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলাম। আমার বিশ্বাস, তারাই এবার আমাকে ভোট দেবেন।

সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় নাজমুল আলমের 

দলগতভাবে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত না থাকলেও ভোটে দাঁড়িয়েছেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নাজমুল আলম। এর আগে চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সামান্য ভোটের ব্যবধানে তিনি ভাইস চেয়ারম্যান পদে পরাজিত হন। তার অভিযোগ, তাকে ইচ্ছেকৃতভাবে পরাজিত করা হয়েছে। ভোটের হিসাবে তাকে গৌণ করে দেখার অবকাশ নেই। 

নাজমুল আলম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আমার বিজয় সুনিশ্চিত। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় রয়েছে- প্রকাশ করে ভোটারদের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন।

যা ভাবছে রাজনৈতিক দলগুলো

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কার্যত আওয়ামী লীগের তিন প্রার্থীকে ঘিরে দলটির নেতাকর্মীদের বিভক্তি দিন দিন প্রকট হয়ে উঠছে। যদিও এখানে স্থানীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সংঘাত-সহিংসতার উদাহরণ নেই, তারপরও প্রশাসন কঠোর না হলে ঐতিহ্যে ছেদ পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। 

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুর রহমান বলেন, ‘সদর উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলের মধ্যে নানা বলয় সৃষ্টি হয়েছে- এ কথা সত্য। তবে দলীয় প্রতীকে ভোট হচ্ছে না। তাই সাধারণ ভোটাররা প্রকৃত সৎ নেতাকেই নির্বাচিত করবে বলে মনে করি।’ 

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত নেই। কারণ এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না। দলের কেউ যদি প্রার্থী হয় তা তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত বলে মনে করি।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা