× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

ওয়ার্ডে ঠাঁই নেই, সিঁড়িতে রোগীর চিকিৎসা

শফিক সরকার, ময়মনসিংহ

প্রকাশ : ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:০২ পিএম

আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:০৬ পিএম

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিঁড়ির কোনায় ঠাঁই মিলছে রোগীদের। প্রবা ফটো

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিঁড়ির কোনায় ঠাঁই মিলছে রোগীদের। প্রবা ফটো

নেত্রকোণার কেন্দুয়ার ৮০ বছরের বৃদ্ধ ইদ্রিস আলী পেটের সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে। রোগীর চাপে ওয়ার্ডে তার জায়গা হয়নি। তার ঠাঁই মিলেছে ওয়ার্ডের বারান্দায়। তার মাথার ওপর নেই ফ্যান। তার পাশে বসে হাতপাখায় বাতাস দিচ্ছেন ছেলে শফিকুল। হাতপাখা বন্ধ হলেই গরমে কাতর হয়ে পড়েন বৃদ্ধ ইদ্রিস আলী। এভাবে গত শনিবার থেকে তীব্র তাপদাহের মধ্যে বারান্দায় পড়ে আছেন তিনি। 

ইদ্রিস আলীর ছেলে শফিকুল জানান, একদিকে নেই সঠিক সময়ে চিকিৎসকের দেখা আর অন্যদিকে গরমে নিস্তেজ হয়ে পড়েছেন তার বাবা। এখন হাসপাতাল থেকে বিদায় হতে পারলেই তারা যেন বেঁচে যান। এ সময় দিনমজুর শফিকুলের চোখের পানি গড়িয়ে পড়ে অসুস্থ বাবার শরীরে।

বৃদ্ধ ইদ্রিস আলীর মতো শত শত রোগীর ওয়ার্ডে জায়গা না থাকায় ঠাঁই হয়েছে ওয়ার্ডের বারান্দা, মেঝে ও সিঁড়িতে। গরমে প্রতিদিনই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। হাসপাতালে ধারণক্ষমতার চেয়ে সাড়ে তিনগুণ রোগী ভর্তি হয়েছে। কোথাও যেন পা ফেলার জায়গা নেই। রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। 

এ সুযোগে বাড়তি সুবিধা নেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে ওয়ার্ড বয়দের বিরুদ্ধে। রোগীদের অভিযোগ, ওয়ার্ড বয়কে টাকা দিলেই সিট মেলে ওয়ার্ডে। এ ছাড়া হাসপাতাল জুড়ে রয়েছে চরম অব্যবস্থাপনা। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. জাকিরুল ইসলাম। গতকাল সোমবার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। 

ময়মনসিংহ নগরীর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এক হাজার শয্যার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলা ছাড়াও বাইরের জেলার রোগীও এই হাসপাতালে আসে। এ কারণে সবসময় ধারণক্ষমতার দুই থেকে তিনগুণ রোগী বেশি ভর্তি হয় এই হাসপাতালে। এখন তীব্র তাপদাহে প্রতিদিনই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এখন প্রায় সাড়ে তিনগুণ রোগী বেড়েছে হাসপাতালে। গতকাল সোমবার রোগী ভর্তি ছিল ৩ হাজার ৪৭৫ জন। এই তথ্য নিশ্চিত করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। 

হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হয়েছেন জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার আব্দুস সালাম। তিনি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, চার দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি আছেন তিনি। ওয়ার্ডে সিট না পেয়ে করিডোরে বিছানা করেছেন। মানুষের ভিড় আর তীব্র তাপদাহে তিনি আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। নিয়মিত নার্স-চিকিৎসকদের দেখা নেই। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অর্থোপেডিক্স বিভাগের এক রোগীর স্বজন বলেন, এই হাসপাতালে টাকা দিলে সবই মেলে। ওয়ার্ডে সিট নেই। অথচ গোপনে ওয়ার্ড বয়দের টাকা দিলে ঠিকই সিট পাওয়া যায়। এ ছাড়া হাসপাতাল জুড়ে রয়েছে দালালদের খপ্পর। তারা টাকার বিনিময়ে হাসপাতালের রোগী ভাগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে পছন্দের ক্লিনিকে।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. জাকিরুল ইসলাম। প্রতিদিনের বাংলাদেশকে তিনি বলেন, হাসপাতালে পা ফেলার জায়গা নেই। সিট রয়েছে এক হাজার অথচ প্রতিদিন রোগী ভর্তি হচ্ছে তিন থেকে চারগুণ বেশি। এ কারণে তাদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এরপরও তারা রোগীদের ফিরিয়ে দেন না। সাধ্যমতো চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তবে হাজার হাজার রোগীর মধ্যে কিছু ত্রুটি থাকাটা অস্বাভাবিক কিছু না। সিট না থাকায় করিডোর, সিঁড়ি ও মেঝেতে রোগীদের কষ্টের বিষয়টিও তিনি স্বীকার করেন।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা