আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২২ এপ্রিল ২০২৪ ২৩:০৫ পিএম
আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২৪ ২৩:১০ পিএম
থানায় অভিযোগ করতে যাওয়া মুক্তিযোদ্ধারা। ছবি: সংগৃহীত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় শ্রমিক লীগ সভাপতি ইবনে মাসুদ লাক্সুর বিরুদ্ধে এক মুক্তিযোদ্ধাকে ‘লাঞ্ছিত’ করার অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (২২ এপ্রিল) থানায় এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পত্র জমা দেন ভুক্তভোগী মো. আব্দুস সামাদসহ বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা। এ সময় তারা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুত বিচার দাবি করেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ইবনে মাসুদসহ কয়েকজনের নেতৃত্বে আখাউড়ার বিভিন্ন সড়কে যানবাহন থেকে চাঁদা তোলা হয়।
অভিযোগের বিষয়টি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে নিশ্চিত করেছেন আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আলম।
তিনি বলেন, সোমবার বিকেলে মুক্তিযোদ্ধারা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আমি একটি কাজে ধরখার এলাকায় এসেছি। তাই কি বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছেন তা বলতে পারছি না। থানায় গিয়ে বিষয়টি দেখব।
মুক্তিযোদ্ধারা জানান, এ বিষয়ে আব্দুস সামাদের লিখিত অভিযোগ আইনমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার বরাবর ডাকযোগে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া থানার পাশাপাশি তারা ইউএনও বরবারও অভিযোগ দিবেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভার ইজারার নাম করে ইবনে মাসুসসহ কয়েকজনের নেতৃত্বে ছোট যানবাহন থেকে প্রতিদিন ২০ থেকে ৫০ টাকা ও বড় যানবাহন থেকে ৫০ থেকে ২০০ টাকা আদায় করা হয়। পৌরসভার নিয়ম অনুসারে শুধুমাত্র নির্ধারিত স্ট্যান্ড ব্যবহারকারী যানবাহন থেকে দৈনিক ১০ টাকা হারে টাকা তোলার কথা থাকলেও সেটার তোয়াক্কা করছেন না তারা।
এর আগে গত শনিবার দুপুরে আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় কয়েকজন ভারতীয় যাত্রী স্থলবন্দরে যাওয়ার জন্য একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশায় উঠেন। এ সময় অটোরিকশার চালকের কাছে এক ব্যক্তি চাঁদা দাবি করেন। চালক চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ার ভারতীয় যাত্রীদেরকে ওই অটোরিকশা থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় এবং অটোরিকশার চাবি নিয়ে যাওয়া হয়। মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ ঘটনাটির প্রতিবাদ করেন। এ ঘটনায় চাঁদা চাওয়া ব্যক্তি তার উপর ক্ষিপ্ত হন ও আপত্তিকর আচরণ করেন।
ঘটনার এক পর্যায়ে শ্রমিক লীগ সভাপতি ইবনে মাসুদকে ফোন করেন চাঁদা দাবি করা ব্যক্তি। ইবনে মাসুদ ৫/১০ মিনিটের মধ্যে ২০/২৫ জন লোক নিয়ে এসে আব্দুস সামাদকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। মুক্তিযোদ্ধার গায়ে পরিহিত একটি লগো খুলে ফেলার হুমকি দেয়। এ সময় মুক্তিযোদ্ধারদেরকে হেয় প্রতিপন্ন করে কথা বলে আব্দুস সামাদের উপর চড়াও হয় ইবনে মাসুদ। এ সময় আশেপাশে থাকা লোকজন তাকে এসে রক্ষা করেন।
কথা হয় মুক্তিযোদ্ধা নজরুল হক ধনুসহ কয়েকজনের সঙ্গে। তাঁরা বলেন, ‘যানবাহন থেকে চাঁদা তোলার নামে আখাউড়াতে এক ধরণের অরাজকতা চলছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় তাকে লাঞ্ছিত করার বিষয়টি খুবই দু:খজনক। ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুস সামাদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার যা বলার আমি অভিযোগে বলে দিয়েছি।
তবে এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রমিক লীগ সভাপতি ইবনে মাসুদ লাক্সু বলেন, স্টেশন এলাকার নিয়ম হলো সিরিয়াল অনুযায়ী সিএনজি অটোরিকশা চলবে। কিন্তু সেদিন সিরিয়াল ছাড়া একজন চালক তার গাড়িতে যাত্রী উঠালে এ নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। পরে আমি এলে আমার সঙ্গেও মুক্তিযোদ্ধার বাকবিতন্ডা হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ একজনকে দিয়ে দুর্গাপুর এলাকায় যানবাহন থেকে টাকা তোলা শুরু করেন। এটার প্রতিবাদ করায় মূলত তিনি আমাদের পিছনে লেগেছেন। বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনে আমিও সংবাদ সম্মেলন করব।