উপজেলা নির্বাচন
বগুড়া অফিস
প্রকাশ : ২২ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:৫৮ পিএম
আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:৫৩ পিএম
বগুড়ার গাবতলী উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান রফি নেওয়াজ খাঁন রবিন। ফাইল ফটো
বগুড়ার গাবতলী উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান রফি নেওয়াজ খাঁন রবিনের গত পাঁচ বছরে অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে আটগুণ। এছাড়া ২০১৯ সালে তার স্ত্রীর নামে কোনো সম্পদ না থাকলেও পাঁচ বছর পর স্ত্রীর সম্পদের পরিমাণ অর্ধকোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও চেয়ারম্যান পদে লড়বেন রবিন। এবার তার জমা দেওয়া হলফনামা এবং ২০১৯ সালে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
২০১৯ সালে বগুড়ার গাবতলী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এএইচ আযম খান আকস্মিকভাবে মারা যান। পরে ওই পদে নতুন করে রবিনকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয় এবং নির্বাচিত হন। রবিন বগুড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বেও রয়েছেন।
তার দুই হলফনামায় দেখা যায়, ২০১৯ সালে রবিনের শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিল এইচএসসি পাস। এবার তিনি উল্লেখ করেছেন স্নাতক পাস। পাঁচ বছর আগে তার পেশা ছিল হাসপাতাল পথ্য সরবরাহ ও ওষুধের ব্যবসা। এবারের হলফনামায় তিনি পেশা হিসেবে ঠিকাদারি, ওষুধ ক্রয়-বিক্রয়, উপজেলা চেয়ারম্যানের সম্মানী ও গৃহ সম্পত্তির আয়ের কথা উল্লেখ করেছেন। এছাড়া গত পাঁচ বছর আগে কোনো মামলা না থাকলেও বর্তমানে তিনি ৩০২/৩৪ ধারায় মামলার আসামি বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।
আয় বেড়েছে প্রায় তিনগুণ
উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার পর রবিনের আয় বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। গত পাঁচ বছর আগে ব্যবসা ও ব্যাংকে আমানত থেকে আয় ছিল মোট ২৮ লাখ ৫২ হাজার টাকা; যা পাঁচ বছর পর বেড়ে ৭৮ লাখ ৭৬ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে বাড়ি ভাড়া থেকে ৩ লাখ ৯৫ হাজার, ব্যবসা থেকে ৬০ লাখ এক হাজার, নির্ভরশীল ব্যক্তির থেকে ১০ লাখ এবং প্রতি বছর উপজেলা চেয়ারম্যানের সম্মানী ভাতা থেকে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা আয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে আটগুণ
২০১৯ সালে রবিনের হাতে নগদ টাকা ছিল ৫০ হাজার। বর্তমানে তার হাতে দেড় লাখ নগদ টাকা রয়েছে। গত পাঁচ বছর আগে তার নামে ব্যাংকে জমা ছিল ২ লাখ টাকা। এখন জমা রয়েছে ২০ লাখ টাকা। এছাড়াও ২০১৯ সালে ট্রাক ও জিপ লোন কিস্তিতে কত টাকা উল্লেখ না করলেও এবার তিনি ৬০ লাখ ৯৫ হাজার টাকার জিপ গাড়ি ও ট্রাকের কথা উল্লেখ করেছেন।
স্থাবর সম্পদ যত বেড়েছে
২০১৯ সালে পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ৫ শতক জমির কথা রবিন তার হলফনামায় উল্লেখ করেন। এবারের হলফনামায় তিনি অকৃষি জমির মূল্য হিসেবে ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা উল্লেখ করেছেন। এছাড়াও এক কোটি ৫৪ লাখ ৪৯ হাজার ৪৩৪ টাকা মূল্যের একটি বাড়ি রয়েছে বলে তিনি হলফনামায় উল্লেখ করেছেন, যা গত পাঁচ বছর আগে ছিল না।
স্ত্রীকে বানিয়েছেন সম্পদশালী
রফি নেওয়াজ খান রবিন ২০১৯ সালের হলফনামায় স্ত্রীর নামে শুধুমাত্র তিন বিঘা জমি রয়েছে বলে উল্লেখ করেছিলেন। এবারের জমা দেওয়া হলফনামায় দেখা যায় স্ত্রী হাতে নগদ টাকা রয়েছে ৩০ হাজার। এছাড়া স্ত্রীর নামে ব্যাংকে ৪০ লাখ টাকা জমা রয়েছে। এর পাশাপাশি ১৫ লাখ টাকা মূল্যের ১৫ ভরি স্বর্ণ রয়েছে স্ত্রীর নামে।
ব্যাংক ঋণ বেড়েছে দ্বিগুণ
বগুড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফি নেওয়াজ খাঁন রবিনের ২০১৯ সালে এনসিসি ব্যাংকে দায় ছিল মোট ৫১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। গত পাঁচ বছরে সেটি বেড়ে এক কোটি ২২ লাখ ৬৬ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে।
গাবতলী উপজেলায় এবার চেয়ারম্যান পদে মোট চারজন প্রার্থী রয়েছে। তারা হলেন, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও বগুড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফি নেওয়াজ খান রবিন, আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য অরুণ কান্তি রায় সিটন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য সাহানুর ইসলাম সাকিল এবং অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা আতাউর রহমান রানু। এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন তাদের মনোনয়ন পত্র বৈধতা পেয়েছে।